তন্ময় কুমার মন্ডল-র কবিতা
[বৌদ্ধ দর্শন ও তথাগত বুদ্ধ মনোজগতে তোলপাড় তুলেছিল।সেখান থেকে ২০১৭-র মাঝামাঝি লিখতে শুরু করা। কী যেন পেয়ে বসেছিল! প্রলাপে আচ্ছন্ন নাকি কবিতার চিরন্তন অপরূপ?… শুধু আবিষ্কারের এক রাস্তা, নাম অপরূপ প্রলাপ! এই পর্বের লেখালিখির চারটি সিরিজের সূত্রপাত ‘অহম পুরুষ’ দিয়ে। তারই তৃতীয় সিরিজ, ‘পেরেক ভাবছে বিদ্ধ করেছি, আসলে সে-ই আটকে আছে’ থেকে পাঁচটি লেখা থাকলো ‘অপরজন’-এর পাতায়।]
পেরেক ভাবছে বিদ্ধ করেছি, আসলে সে- ই আটকে আছে
১
“নিজেকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কালো দাগ অলস পড়ে আছে মানচিত্রে। কোনো নিঃসঙ্গতাই আমাকে সম্পূর্ন করেনা বরং বিভাজিত ফুলে ওঠা আর অভিযুক্ত আমি
“জুতোর জন্যই শান্ত পথ। নশ্বর পথ ভুলে থাকাও অসম্ভব, কেবল ঘুমের ভেতর অনবরত শব্দ হয় আর একটা পিঁপড়ে উঠে আসে
“জন্ম নয় অন্ধকার একটা গলি, মশার কামড় খেতে খেতে ছুঁয়ে থাকা দেওয়াল আর অন্তরঙ্গ নিজের সাথে খেলাই… মাঠ সম্পূর্ণ নিরাসক্ত। চেয়ার ছেড়ে উঠে আসার মুহূর্ত মনে থাকে না কারও, শুধু মেঝের হাল্কা দাগ মেঝেকে মনে করায়
২
“খুঁজছ বলেই পেরেক গুলি বিদ্যমান। আলপথে ফেলে আসা জুতোর স্মৃতি যথেষ্ট নয়, বরং ফড়িং এর লাফ ও গতি স্থায়ী… এই ভেবে হেঁটে এসো, যেন শেষ নেই, যেন পরিশ্রম আর সাদা রেললাইনের
“আয়না বৃত্তাকার। ভাবছ এই বুঝি বিশ্রাম, ফুল আর ফুলে থাকা সমান্তরাল। এই অনন্তের ক্লান্তি তুমিও অস্বীকার করবে না। যা কিছু মাঝে ছিল, আছে এবং থাকবে তাকে ডিঙিয়ে দেখ পেছনে শুধুই শূন্যতা, তুমি কেবল দৌড়ের নেশায় হাঁফিয়ে উঠছ না
৩
“বিকল্প ঘুমে ছাড়িয়ে যাচ্ছ নাগালের দড়ি। স্বপ্ন নয়, মিথ্যে বটগাছের ছবি ও ফটোগ্রাফারের চোখ নিয়ে এসেছ, ভাষাহীন তোমার পা তোমাকে ব্যবহারে অক্ষম ও উড়ন্ত করে তুলেছে, ভাবছ সীমারেখা গুলি নেহাতই সাদামাটা, আসলে শূন্যের বৃত্তে আমিও বেমানান
“শব্দগুলো ফোনালাপে ভর্তি। সে পর্যন্তই একটা বিড়ালের পা সাংঘাতিক যেখানে পথ বেঁকে এবং তুমিও… যতদূর থেকে পিপাসা অনুভব করা যায় এবং পিঁপড়েও খাদ্যান্বেষী সেখানে আমার মৃতদেহ অপেক্ষারত
৪
“পর্যাপ্ত আলো নেই, তাই নাভি অব্দি গভীর কুয়ো। খননের অন্ধকার ঝুলে আছে মূলাধারে। মেরুদণ্ডে শায়িত সাপ, তার ফনা নিয়ে আলোচনা হয়। আমি তার পিঁড়ি টেনে বসি, ভাবি বিশ্রামই হয়তো নিয়ে যাবে কল তলার দিকে
“তোমার বসার ঘর পেরিয়ে উল্টো বারান্দা, চৌকাঠের ফুলে সে তো তোমারই গন্ধ। অস্বীকারে উঠে এসো ।এই নভোতল রাংতায় মোড়া। একে বাঁকিয়ে নাও বরং নিজেকেও ভাঙো কিছুটা, দেখো শরীরের ফুল ঝরছে অস্তিত্বের দিকে
“এ অক্ষ তোমারই, অক্ষমতাও। চক্রাকার বালিশের ফুটো গ্রাস করছে অনন্তের ছায়া।
৫
“উঠে এসে দাঁড়াই, নিচু হ্রদ আরও নিচু ডুব, ছিলিম ও ছিলায় শুয়ে আছে জন্মান্তরের সন্ধ্যা। কিছু কী ছিল শেষ পর্যন্ত আমি? বয়ে বেড়ানো ফুলের অস্পষ্ট রঙ, তাকে বিবর্ণ করি। পথও অসহায় ঝুলে থাকে দ্বন্দ্ব নিয়ে
“আঁকশির প্রান্ত টেনে নামিয়ে আনি সুতো, দেখি ফুলের শুকনো লেগে আছে শুক্রবারে। আহা এতো নেশা, ফিরে গেছি শরীরের কাছে! ভুল নয়, সেও তো অমোঘ
“ফেরা নয়, যাওনি কোথাও, শুধু স্বপ্নে নদীকে ঢালাও করেছ
Posted in: August 2020, POETRY
ভালো লাগল