নহবত : সৌগত ভট্টাচার্য

জোড়পাকড়ির আকাশ ফর্সা হতে শুরু করলেও দূরের গাছগুলোকে পরিষ্কার দেখা যায় না। পাতা ঝরা মন্দার গাছটার ফুল গুলোকে সকালের সূর্যের মতই লাল দেখায়। শালিখ চড়াইরা খাবার খুঁটে খায় আর পুকুর পাড়ের বিরাট পাকুর গাছে উড়ে যায়।

পুকুরে মুখ ধুয়ে পুব দিকে তাকিয়ে কপালে জোড় হাত ঠেকিয়ে বিড়বিড় করে প্রণাম করে শাহেনশা। প্রণাম শেষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে শিস বাজিয়ে পুকুর পাড় থেকে পাকুর গাছের পাশে ফাঁকা ঘাস জমিতে এসে দাঁড়ায়। পাখিগুলো এই সময় শাহেনশার শিসের অপেক্ষায় থাকে, শিস শুনলেই পাকুর গাছ থেকে ঘাস জমিতে নেমে আসে। লুঙ্গির কোচের মধ্যে নিয়ে আসা খুদ শিস দিতে দিতে পাখিদের ছিটিয়ে দেয় শাহেনশা।

শাহেনশার শিস শুনলেই পুকুরের ওপারে জারুল গাছ থেকে একটি দোয়েলও শিস দিয়ে উড়ে এসে পাকুর গাছের নীচে বসে। দোয়েল খুদ খায় না, শুধু শাহেনশার শিস শোনে আর লেজ নেড়ে নাচের ছন্দে এদিক ওদিক লাফায়। পাখিদের খাওয়া শেষ হলে খুঁড়িয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দেয় শাহেনশা, দোয়েলটিও উড়ে যায়। এ গল্প প্রতিদিন সকালের।

জন্ম থেকেই বাঁ পা সামান্য ছোট বলে শাহেনশাকে ‘খোঁড়া শাহেনশা’ বলে ডাকে গ্রামের লোক। গুরুদেব খড়ের আঁটি বাঁধতে বাঁধতে শাহেনশাকে জিজ্ঞেস,
“কালি তোর ডিউটি ছিল না?”
“ছিল, অনেক রাইত কইরা ফিরছি।”
“এত ভোরে উঠিল কেন?”
“ডেলি ডেলি মাছ মাংস খাইয়া রাইতে ঘুম ধরে না, শরীল গরম হয়া যায়! আর সকালে পাখিগুলাও আমার জন্য বসি থাকে!”
“ঘুম ধরে না তো খাইস ক্যান?”।
“না খাইয়া করুম কী! আমারে কে ওই রাইতে খাবার দিব! প্যাটে চুহা চিল্লায়। তখন যা পাই তাই গিলি।” শাহেনশা টাক চুলকায়।

শাহেনশা শহরের ব্যান্ড পার্টির আলো বাহক। বিয়ের সিজনে সন্ধ্যার পর ওর ডিউটি শুরু হয়। সিজিনের দুই চার মাস বিয়ের দিনগুলো ডেইলি ডিউটি থাকে তাঁর। জীবনের এক কুড়ি বছর বাদ দিলে কোনো না কোনো ভূমিকায় প্রায় সবটাই এই “ইয়ং স্টাফ বোম্বাই ব্যান্ড পার্টিতে” কেটে গেল শাহেনশার।

“আমার ব্যান্ডে কাম করবি?” সানাই শুনে বছর কুড়ির যুবক শাহেনশাকে কাজের প্রস্তাব দিয়েছিল যতীন। শাহেনশা লোকাল একটা যাত্রা দলে সানাই বাদকের কাজ করত। বছরে যাত্রাপালা মাত্র দুই মাস, বাকি সময় টুকটাক অনুষ্ঠান বাড়িতে সানাই বাজানোর ডাক আসত। কিন্তু সেই রোজগার দিয়ে সংসার চলে না শাহেনশার। যতীনের ছিল শহরে ব্যান্ড পার্টির দোকান। শাহেনশা যতীনের প্রস্তাবে রাজি হয়। যতীন বিয়ে বাড়ির কাজ ধরত সেখানে শাহেনশাই ছিল প্রধান সানাই বাদক।

দিন পাল্টেছে, সানাই বাজানোর ডাক আসে না শাহেনশার। বিয়ের পর সংসার বড় হয়েছে শাহেনশার। সানাই বাজিয়ে এত গুলো পেটের ভাত হয় না। লোকে অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ ব্যান্ড পুলিশ ব্যান্ড বায়না করে। প্রতাপের বাপ যতীনের কথায় শাহেনশার বিউগল বাজানো শেখে। ছেলেপুলের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে বছর বছর। সারাবছর কাজ থাকে না ব্যান্ডে। শুধু সিন্থেসাইজারেরই ভাড়া হয়। অন্য কোনো কাজের ব্যবস্থা করতেই হবে শাহেনশাকে, নইলে ছেলেপুলে নিয়ে না খেয়ে মরবে। শাহেনশাকে সিন্থেসাইজার বাজানো শিখতে বলেছিল ব্যান্ডের মালিকের ছেলে প্রতাপ। “এই বয়সে কি আর নতুন করে বাজনা সেখন যায়, এক জীবনে কতবার বাজনা পাল্টাব!” শাহেনশা প্রতাপকে বলেছিল।

প্যান্টের উপর একটা ইলাস্টিক দেওয়া হলুদ ঝকঝকে জড়ির পাড় দেওয়া রেডিমেড ধুতি আর ময়লা জামার ওপর একটা বেগুনি রঙের ওপর জড়ি চুমকির কাজ করা একটা গলা বন্ধ সস্তা সিনথেটিক কোট পরে পায়ে প্লাস্টিকের চটি পরে বিয়ে বাড়ির জন্য রেডি হয় শাহেনশা। “এই কয়টা তো চুল আর জোড়ে আছড়াও না, উইঠা হাতে চলে আইব” বিপিন শাহেনশাকে বলে। বিপিন শাহেনশার মত আরো অনেকে এই ব্যান্ড পার্টির প্রসেশনে আলো বাহকের কাজ করে, কারও এটা স্থায়ী কাজ না। সারাদিনের অন্য কাজের শেষে সন্ধ্যায় পর এই কাজে তিনশ টাকার ধান্দা হয়। ভাগ্য ভালো থাকলে বকশিস জোটে। কোনো কোনোদিন রাতের খাওয়া মাগনায় মেলে। কিন্তু সারা বছর তো আর কেউ বিয়ে করে না! “তোরা আজ চুলের কি বুঝবি!” পঁয়ষট্টির শাহেনশা বিপিনকে উত্তর দেয়। ছোটখাটো চেহারার খোঁড়া শাহেনশার মাথার মাঝে বিরাট টাক পড়ে গেলেও চুল দিয়ে কান ঢাকা। “লাইটের ইস্ট্যান মাথায় নিয়া সব চুল উইঠা গেল!” শাহেনশা বিপিনকে বলে। “ওই যে আইসে নবাব পুত্তুররা”——ব্যান্ড পার্টির অফিসে সিন্থেসাইজার বাদক বেনুকে ঢুকতে দেখে শাহেনশা পল্টুকে বলে। বেনু ওঁর লোকজন নিয়ে রেডি হলে তবেই সবাই রওনা হবে বিয়ে বাড়ির দিকে।

বট গাছের তলায় বরযাত্রী আসার অপেক্ষা করে ‘ইয়ং স্টাফ বোম্বাই ব্যান্ড পার্টি’। বরের গাড়ি আসলে প্রসেশন শুরু হবে। বেনু একটা ময়ূরপঙ্খী সাজানো ভ্যানে উল্টো মুখে বসে সিন্থেসাইজারে একটু করে নানা সুর বাজাচ্ছে। পাশে অন্য একটা ছোট ভ্যান গাড়িতে বিরাট জেনারেটর যেটা থেকে পাওয়ার সাপ্লাই হলে শাহেনশাদের মাথার আলো গুলো ঝলমলিয়ে জ্বলবে। মেয়ের বাড়ির কথায় বুঝতে পারে বর আসতে আরো মিনিট পনেরো বাকি।

“আইস্তে আইস্তে!” বলে শাহেনশা। জেনারেটরের ভ্যানে বসে একটা ছেলে ইলেক্ট্রিকের তারে ঢিলে দেয় আবার কখনো তার টেনে নেয়। সামনে শাহেনশারা মাথায় আলো নিয়ে হেঁটে যায়। তারও সামনে সিন্থেসাইজার তাশা বাজাতে বাজাতে বেনুর দলবল যায়। শাহেনশা বেঁটে, তাই পেছন দিকে থাকতে হয়। ও সবার সঙ্গে হেঁটে পেরে ওঠে না। মাথায় আলোর স্ট্যান্ড নিয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে আর সমানে বলতে থাকে “তার ঢিলা দে, ঢিলা দে!” জামার জড়ির ঘষায় ঘাড়ের কাছে কুটকুট করে শাহেনশার! দুই হাত দিয়ে আলো ধরে থাকায় সে ঘাড় গলা চুলকাতে পারে না, অস্বস্তি হয় তাঁর। এই পোশাক পড়লে শাহেনশার নিজেকে ভারী লাগে। সে জানে না আর কত দূর হাঁটতে হবে, কত দূর গেলে ভবন। বিয়ে বাড়ির মেয়েছেলে ব্যাটাছেলে সব নাচছে। রঙিন বাজি সশব্দে মিলিয়ে যাচ্ছে রাতের কালো আকাশ আলো করে। মুখ তুলে আকাশে আলো দেখার যো নেই শাহেনশার। শব্দ কানে এলে শাহেনশার পাখিগুলোর কথা মনে পড়ে। এই শব্দে আলোতে পাখি গুলো রাতে কী ভাবে ঘুমায়, নাকি ওরাও শাহেনশার মত জেগে থাকে বিয়ের দিন গুলোতে! পাখিগুলো রাত জাগলে কী ভাবে ভোর বেলায় শাহেনশার ডাকে সাড়া দেবে ! এই দুনিয়ায় একমাত্র ওরাই এখন ওর বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা গোপন সুরের সমঝদার। শিস দিয়ে যে গান রোজ ভোরে ও গায় সে সুরের একমাত্র শ্রোতা ওরা। বাজি পোড়া ছাই শাহেনশার রঙিন জামায় এসে পড়ে। শাহেনশা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া সুরটা গিলে ফেলে।

“আজ বড় ব্যাসুর বাজাচ্ছে বেনু!” এমনিও ব্যান্ডের সিন্থেসাইজারের আওয়াজ মাঝেমাঝে বড্ড কানে লাগে শাহেনশার, বুকেও লাগে। নিজের ভেতরটা অস্থির হয়ে ওঠে। বেনু বেসুর বাজালে শাহেনশার মনে হয় “বেনু নাম হইলে কি হব! খুলির পাশে দুই খান কান নিয়া জন্মাইছেই শুধু, বোধখান পায় নাই হালার ব্যাটা! পাখি গুলারও তো সুরের কান আছে—” মনে মনে গালি দেয় শাহেনশা।

বিয়ের ভবনের সামনে পৌঁছলে আলোর স্ট্যান্ডগুলো নামিয়ে রাখে শাহেনশারা। খুঁড়িয়ে গিয়ে হাত ধোয়ার জলের কল থেকে হাতে মুখে জল দিয়ে আজলা করে কিছুটা জল খায়। চকচকে ধুতিতে নিচু হয়ে হাত মুখ মুছে নেয়। ফাগুন মাসের রুখা হওয়াটায় হু হু করে বুক। ফ্ল্যাশ বাল্ব ক্যামেরা উলু গেট ধরা জামাই বরণের পর্ব চলে তখন ভবনের গেটের বাইরে। প্রতিদিন এক দৃশ্য দেখলেও আজ শাহেনশা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে ব্যাপারটা। সামনের মাসে ওর ছোট মেয়ে সনেকার বিয়ে। সনেকাকে পার করতে পারলে শাহেনশা নিশ্চিন্ত। জামাই বরণের সময় সিন্থেসাইজার তাশা একসঙ্গে জোরে বেজে ওঠে, শাহেনশার বুকে হঠাৎ করে ধাক্কা লাগে!

অনেক রাত অবধি অপেক্ষা করার পর কিছু বকশিস আর রাতের খাবার মেলে শাহেনশাদের। বেনুরা বাজিয়ে অন্য বিয়েতে খেপ খাটতে যায়। খাওয়ার পর আলো বাহকরা মাথায় নেভা আলোর স্ট্যান্ড গুলো নিয়ে দোকানের দিকে হাঁটা দেয়। দোকানে সেগুলো রেখে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরতে শেষরাত। “রাইতে খাওয়ার পর আর হাঁটতে মন চায় না রে বিপিন” শাহেনশা বলে। “তাড়াতাড়ি চলো, ইস্ট্যান্ড রাইখ্যা আবার সাইকেল ঠোঙাইতে হব, আজ হাওয়া দিতাসে বেশি” বিপিন মাথায় আলো নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে উত্তর দেয়। শাহেনশা তাঁর খোঁড়া পা আর মাথায় আলোর স্ট্যান্ড নিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে বলে, “আইতেছি তো, দেখস না!” বিপিনরা অনেকটা এগিয়ে গেলেও শাহেনশা খোঁড়াতে খোঁড়াতে শিস দিয়ে গান গাইতে গাইতে পেছনে হাঁটতে থাকে। ফাগুন রাতে মোহময়ী সুরেলা শিস পরিষ্কার শোনা গেলেও অন্ধকারে মাথায় নেভা আলোর স্তম্ভ নিয়ে খুঁড়িয়ে যাওয়া একটা মানুষের অবয়ব ছাড়া কিছুই দেখা যায় না।

সনেকার বিয়ের কিছুই জোগাড় করতে পারেনি শাহেনশা। বাড়ির পুকুরে যেটুকু মাছ ছেড়েছিল সে দিয়ে বিয়ের মাছের ব্যবস্থা হবে। বড় মেয়ে যূথিকা অঘ্রান মাসে হাট থেকে খাসি কিনে রেখেছে বোনের বিয়ের জন্য। দুই ছেলে বাপের সঙ্গে না থাকলেও আসবাবের টাকা দেবে বলেছে। কিন্ত শাহেনশার মাথা থেকে চিন্তা যায় না। পাড়াপড়শীরা যদিও সাহায্য করবে সকলে। কিন্তু কুটুম বাড়িতে মুখ রাখতে আরো কত খরচ। ভেবে কুল কিনার পায় না শাহেনশা। প্রতাপকে বলেছিল বাজনার একটা ব্যবস্থা করতে। কিন্তু সেদিন বিয়ের বাজনার বায়না অনেক আগে থেকেই হয়ে আছে। প্রতাপ কথা দিয়েছে বিয়ের শাড়ি কিনে দেবে। পাশের বাড়ির ভোলার মোড়ের মাথায় মাইকের দোকান। ভোলা বলেছে, “আমি তোমারে ডিজে বক্স আর পাঁচ সাতটা আলো দিয়ে দিমু”।

“শাহেনশাদা বরযাত্রী চইলে আইসে।” বলে কেউ একজন। শাহেনশা মনে মনে বিরক্ত হয়। এই নামে ডাকলে কুটুম বাড়ির কাছে আর ইজ্জত থাকে না। যখন যাত্রা পার্টিতে সানাই বাজাত সেই যাত্রা পার্টির বইলা তাঁকে শাহেনশা নামটা দিয়েছিল। তখন সেই নামটার মধ্যে রাজকীয়তা অনুভব করত সে। তখন থেকেই বাপের দেওয়া নাম সুরেশ চন্দ্র রায় হয়ে গেল শাহেনশা। শাহেনশা একটা নকল সিল্কের পাঞ্জাবি আর পায়জামা পড়েছে সঙ্গে একটা সাদা চাদর। এই পোশাকটা পড়ত যখন সানাই বাজানোর জন্য বিয়ের বায়না থাকত। আজ ট্রাংক থেকে বের করার সময় দেখে পাঞ্জাবির বুকের কাছে ট্রাঙ্কের লোহার মর্চের দাগ।

বিয়েতে সারা রাত ডিজের শব্দে শাহেনশার শরীর খারাপ লাগলেও কাউকে বলেনি সে কথা। ডিজের শব্দে পাখিগুলোর কথা মনে হয়েছে শাহেনশার। বসন্তের ঝরাপাতার মত শাহেনশার বিগত দিনগুলো শুকনো পাতায় লাল ফুল হয়ে এই ফাল্গুনে ফুটে ওঠে রোজ। পাখিগুলো সেই সুরের জলসার একান্ত শ্রোতা। ডিজের শব্দে ওরা না এলে সারাদিন ওর বুকের ভিতর চাপা কান্নার মত কষ্ট বেসুর ডিজের চিৎকার হয়ে ফেটে পড়তে থাকবে! কী করবে শাহেনশা তখন!

কাক ডাকার আগে জোড়পাকড়ির আকাশে কান্না ছাড়া কোনো শব্দ নেই। ভোরের আগে মেয়েকে বিদায় জানাতে হবে। বাড়ির কেউ চোখের জল ধরে রাখতে পারছে না। মেয়ের বিদায়ে শুধু শাহেনশা চোখে জল নেই।

ডিজের আওয়াজ কিছুক্ষণ হল থেমে গেছে। শাহেনশা একজন বাদক, এত কন্যা পার করেছে সানাই বাজিয়ে কিন্তু নিজ কন্যার বিয়েতে বাজনার ব্যবস্থা করতে পারেনি। শাহেনশা নিজের ধারার বেড়া দেওয়া ঘরে ঢুকে যায়। পাতাহীন গাছে ফাল্গুনের হু হু করা বাতাস যেন তার ফাঁকা বুকে ধাক্কা খেয়ে হাহাকারের মত বেজে ওঠে। অনেকক্ষণ থম হয়ে বসে থাকে সে। কাঠের তাকের উপর থেকে কাপড়ের জামা পরানো সানাইটাকে ধুলো ঝেড়ে কোলের উপর বসিয়ে অনেকক্ষণ আদর করে। ফাল্গুনের সব মন কেমন করা বাতাস কলিজার ভেতর নিয়ে শাহেনশা ঠোঁট রাখে সানাইয়ের ঠোঁটে।

একটানা সানাই বাজিয়ে রাত শেষ হয়ে কখন আকাশ ফর্সা হয় শাহেনশার খেয়াল থাকে না। সানাই বাজাতে বাজাতে ঘর থেকে হঠাৎ দেখে বাড়ির উঠানে পাতাঝরা ফুলে ঢাকা পলাশ গাছটায় দোয়েল পাখিটি নেচে যাচ্ছে, একলাই সঙ্গতে শিস দিচ্ছে।

সকালের পাখি খাওয়ানোর শিস আর
সানাইয়ের সুর কখন যে মিশে গেল! এতক্ষণে চোখ ভিজে আসে সাম্রাজ্যহীন শাহেনশার। আনন্দে নাকি বেদনায় সে হিসেব কে রাখে!

Facebook Comments

Leave a Reply