লবঙ্গ : কাজল সেন
লোকটাকে আমি চিনি না, জানি না। অথচ মনের গভীরে কেমন যেন একটা সংশয়ের দোলা, সত্যিই কি আমি চিনি না! জানি না! নাকি কোনো এক সময়ে চিনতাম, জানতাম! এখন ঠিক মনে করতে পারছি না! বা মনে করতে চাইছি না! লোকটাও তেমনি ত্যাঁদোড়। কিছুতেই মানতে চাইছে না যে, তাকে আমি চিনি না, জানি না। এ তো আচ্ছা গেরো! আমি বললাম, দেখুন চেনা জানাটা যখন আমাদের চেনা জানার বাইরে, তখন শুধু শুধু ঝামেলা বাড়িয়ে কী লাভ! বরং যে কথাটা আপনি আমাকে বলতে এসেছেন, সেকথাটাই আগে বলে ফেলুন। কবে কে কাকে চিনতাম জানতাম, অত পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার কী দরকার!
লোকটা একটু থতমত খেয়ে বলল, আরে মশাই তা নয়, যা বলার তা তো বলবই। কিন্তু সব কথার শুরুতেই একটা শুরু থাকে, সেই শুরুটা না করে আসল শুরুটা করা যায় না যে!
লোকটাকে আমি যতটা না কৌতূহল, তার থেকে বেশি সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছিলাম। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে। শরীরটা ঢ্যাঙা আর পাংশুটে। মুখে খোঁচা খোঁচা না কামানো সাদা দাড়ি।
আমার খুবই বিরক্ত লাগছিল। সাত সকালে মাছের বাজারে এসে ফুটপাথের একটা চায়ের দোকানে বসে সেদিনের খবরের কাগজে চোখ রেখে সবেমাত্র চায়ে চুমুক দিয়েছি, ঠিক তখনই আমার টেবিলের উল্টোদিকের চেয়ার দখল করে রীতিমতো আত্মীয়তার স্বরে বলল, এই তো আপনাকেই আমি খুঁজছি। বেশ কিছুদিন হলো খুঁজছি। দেখুন, আজ কেমন দেখা হয়ে গেল! কতদিনের চেনা মানুষ আপনি। তা কেমন আছেন? শরীর স্বাস্থ্য সব ভালো তো? বর্ষাটা এবার বেশ জমিয়েই হচ্ছে, বলুন!
আমি লোকটাকে দেখছিলাম, কথাগুলোও শুনছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম না, লোকটা কে!
মনে হলো, লোকটার আদৌ কোনো তাড়া নেই। ফচকেমি হাসিটা মুখে ঝুলিয়ে রেখে নিজের জন্য চায়ের অর্ডার করল। তারপর ধীরে সুস্থে চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, আপনি আমাকে চিনতে না চাইলে আমার সত্যিই কিছু করার নেই। কিন্তু আমি তো আপনাকে ভুলতে পারি না। কী করে ভুলব বলুন! আমি যে সেই কবে থেকে আপনার কথা ভেবে ভেবে নিজের প্রতি লজ্জায় ঘেন্নায় ক্ষত বিক্ষত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, তা আপনাকে বোঝাই কী করে!
এবার আমার থতমত খাওয়ার টার্ম। বললাম, সেকী! মানে? আমি কী করেছি? আর আপনিই বা কী করেছেন? লজ্জা ঘেন্না এসব আসছে কোথা থেকে? কবে কী ঘটেছিল? ব্যাপারটা একটু পরিষ্কার করে বলবেন?
লোকটার একেবারেই কোনো তাড়া নেই। চায়ে চুমুক দিতে দিতে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকল। টেবিলে আঙুল ঠুকে অস্ফূট স্বরে কিছু একটা গুনগুন করল। তারপর পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ অকারণে ঘষে ঘষে মুছে আচমকা আমাকে ফিসফিস করে বলল, লবঙ্গ আপনার সঙ্গে একবার দেখা করতে চায়। আপনি কবে যেতে পারবেন তা জানালে আমি লবঙ্গকে তা জানিয়ে দেব।
কথাটা এমন ফিসফিস করে বলল যে, প্রথমটা আমার যেন কিছুই বোধগম্য হলো না। এই লোকটা কে? লবঙ্গের কথা জানল কী করে? আর আমার সঙ্গে তো লবঙ্গর কত কত বছর হলো কোনো যোগাযোগই নেই! সেসব চিত্রনাট্য তো কবেই চুকেবুকে গেছে! তাহলে! এতদিন পরে লবঙ্গ আমার সঙ্গে আবার দেখা করতে চায়, সেই খবর এই লোকটার মাধ্যমে জানিয়েছে! এসব হচ্ছেটা কী!
লোকটাকে প্রশ্ন করলাম, দেখা করতে চায় মানে? আপনি কে? লবঙ্গকে চেনেন? কীভাবে? লোকটা আবার ফচকেমি হাসি হাসল। চোখ নিচে নামিয়ে কিছুটা যেন সংকোচের সঙ্গে বলল, তা একটু আধটু চিনি বৈকি। না চিনলে চলবে কী করে! আমি আপনাকেও চিনি। আর চিনি বলেই তো লবঙ্গর খবরটা আপনার কাছে পৌঁছাতে পারলাম। তা মশাই, আপনি যদি অনুগ্রহ করে কবে দেখা করতে যেতে পারবেন আমাকে জানান, তাহলে যথাস্থানে তা জানাতে পারি।
কেমন একটা ধোঁয়াশা যেন আমাকে ঘিরে ধরল এবার। কী উত্তর দেব আমি! লবঙ্গ আমার সঙ্গে একবার দেখা করতে চায়। কেন? কী প্রয়োজন? এতদিন পর হঠাত কেন দেখা করার দরকার হলো? যে সম্পর্কের অনেক অনেক বছর আগেই ইতি টানা হয়ে গেছে, তা আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টাই বা কেন?
বললাম, দেখুন মশাই, আপনি কে আমি জানি না। আপনার সঙ্গে লবঙ্গর কী সম্পর্ক তাও আমি জানি না। লবঙ্গ আমার সঙ্গে দেখা করতে চায় কেন, আমি বুঝতে পারছি না। কিন্তু লবঙ্গ দেখা করতে চায় বলে আমাকে দেখা করতেই হবে, একথা আপনি ভাবলেন কী করে? আমি তো আর দেখা করতে চাই না!
লোকটা নাছোড়বান্দা। তা বললে কি হয়! আপনি অবুঝ হচ্ছেন কেন? নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, দরকার আছে, তাই লবঙ্গ আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়। দেখা তো করতেই পারেন আপনি। বলুন আপনি কবে যেতে পারবেন, তারিখটা গিয়ে আমি জানাই। আর ভালো কথা, এই যে লবঙ্গর খবরটা আপনার কাছে পৌঁছে দিলাম, আবার আপনার খবরটা লবঙ্গর কাছে পৌঁছে দেব, বুঝতেই তো পারছেন, এই যে এত কষ্ট করে যাওয়া আসা, নিজের পয়সায় চা খাওয়া; আসলে সব কাজেরই তো একটা পারিশ্রমিক থাকে, তা আপনি যা উচিৎ মনে করেন তাই দিয়ে আমাকে বিদায় করতে পারেন, আপনি তো মশাই অভিজ্ঞ মানুষ, সবই বোঝেন!
লোকটার ফচকেমি হাসি আর সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। লোকটা খুবই বাড়াবাড়ি করছে। একে বেশি পাত্তা দেওয়া একেবারেই ঠিক হবে না। খচে গিয়ে বললাম, আপনি যে লবঙ্গর জন্য দালালি করছেন, তা তো বুঝলাম। কিন্তু আমি তো আপনাকে আমার জন্য দালালি করতে বলিনি! তাহলে আমি আপনাকে পারিশ্রমিক দিতে যাব কেন?
লোকটা চটল না। আগের মতোই ফচকেমি হাসি মুখে চুপ করে বসে থাকল। তারপর যেন আমাকে শান্ত করার জন্য দরদ দেখিয়ে বলল, আহা, আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? এতে তো রাগারাগি করার কিছু নেই! ব্যাপারটা মাথা ঠান্ডা রেখে বিচার করে দেখুন। আমি তো কোনো অন্যায্য দাবি করছি না। আপনি দালালি করার কথা বললেন, হ্যাঁ তা তো ঠিকই, দালালি তো আমি করছিই। এই যেমন লবঙ্গর বার্তা আপনার কাছে পৌঁছে দিলাম। এর জন্য আমার যা পারিশ্রমিক প্রাপ্য তা না হয় আমি লবঙ্গর সঙ্গে বোঝাপড়া করে নেব। কিন্তু এখন যে আমাকে আপনার বার্তা লবঙ্গর কাছে পৌঁছে দিতে হবে, তার জন্য তো পারিশ্রমিক আপনাকেই দিতে হবে। না হলে আমার চলবে কী করে বলুন!
আর ধৈর্য ধরে রাখা যাচ্ছে না। রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে বললাম, এ তো আচ্ছা ফ্যাসাদে পড়লাম আমি! আমার তো কোনো বার্তাই নেই লবঙ্গর কাছে পৌঁছে দেবার জন্য। তাহলে আমি আপনাকে টাকা দেব কেন? আর লবঙ্গর সঙ্গে আমি দেখা করতেও একেবারেই আগ্রহী নই। আমি আর চাই না অতীতের কোনো ঘটনায় ফিরে যেতে। চাই না কোনো হারানো সম্পর্ককে বয়ে বেড়াতে। দেখুন, আপনি যেই হোন না কেন, আপনাকে জানাই, লবঙ্গর সঙ্গে আমার একসময় একটা সম্পর্ক ছিল ঠিকই, বুঝতে পারছি সেটা আপনিও জানেন, কিন্তু এখন লবঙ্গর প্রতি কোনো আকর্ষণ বা আগ্রহ আমার নেই। অনেক বছর নেই। নতুন করে তা আর টেনে আনবেন না প্লিজ!
লোকটা যেন একটু অপ্রতিভ হলো। মাথা নেড়ে বলল, সে কথা তো ঠিকই, সে কথা তো ঠিকই। আপনি তো অনেকদিন হলো বিয়েও করেছেন, ছেলেমেয়েরা সব বড়ও হয়ে গেছে। সংসার করছেন গুছিয়ে। কিন্তু আমি তো আপনাকে বলতে আসিনি যে, লবঙ্গর সঙ্গে নতুন করে আবার সম্পর্ক গড়ে তুলুন! কই আমি বলেছি সে কথা? আমি তো শুধু জানাতে এসেছি, লবঙ্গ আপনার সঙ্গে একবার দেখা করতে চায়। তা দেখা করা কি কোনো খারাপ কাজ? দেখা করা মানে কি প্রেম করা নাকি? হ্যাঁ, এবার বলুন, তাহলে কবে আপনি যেতে পারবেন?
ওহ! সেই এক কথা। একই ঘ্যানঘ্যান। লোকটাকে আর কিছুতেই সহ্য করা যাচ্ছে না। এবার তাড়াতেই হবে এখান থেকে। এখনও মাছ কেনা হয়নি। ঘরে ফিরে স্নান-খাওয়া সেরে অফিস যেতে হবে। অফিসে আজ নির্ঘাত লেট মার্কিং হবেই।
শেষপর্যন্ত বিরক্ত হয়ে বলতেই হলো, এবার আমাকে রেহাই দিন প্লিজ! আমাকে মাছ কিনে ঘরে ফিরতে হবে। তারপর অফিসে যেতে হবে। আমার হাতে একেবারেই আর সময় নেই। বলুন, আপনাকে কত টাকা দিলে আপনি বিদেয় হবেন। আমার আর ভালো লাগছে না এসব।
দাঁড়ান, দাঁড়ান! এত উতলা হচ্ছেন কেন? একদিন না হয় অফিসে একটু দেরিই হবে। কিন্তু কথাটা শেষ না করে আমি বিদায় নিই কীভাবে? লবঙ্গকে গিয়ে আমি কী বলব? লবঙ্গ আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়, অথচ আপনি কবে দেখা করবেন তা বলছেন না, তাহলে আমি কেমন করে চলে যাই বলুন? লবঙ্গ আমাকে ভরসা করে আপনার কাছে পাঠিয়েছে, আর আমি ফিরে গিয়ে তাকে কিছু না জানাতে পারলে সেটা কি ভালো হবে? আমার দালালিটা তাহলে তো মাঠে মারা যাবে। আমাকে নিতান্ত অযোগ্য অপদার্থ দালাল বলে মনে করবে লবঙ্গ।
আমি নিতান্ত রেগে গিয়ে বললাম, আপনি তো তাই! নিতান্তই অযোগ্য ও অপদার্থ। লবঙ্গ আপনাকে দালাল হিসেবে মনোনীত করল কী করে? কীভাবে সে আপনাকে টলারেট করে? আপনি তো কোনো কম্মেরই নন!
লোকটার মুখে এখন আর সেই ফচকেমি হাসিটা নেই। বরং কেমন একটা বিষণ্ন হাসি যেন ক্রমশ আচ্ছন্ন করেছে তার মুখমন্ডল। আমি একটু অবাক হয়েই চেয়ে আছি সেই মুখের দিকে। বুঝতে পারছি না এভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে। খুব বেশি দেরি হলে অফিসে যাওয়া আর হবে না হয়তো। ইমিডিয়েট বস চ্যাটার্জীসাহেব আজকাল দেরি হলে এমন চ্যাটাং চ্যাটাং কথা শোনান যে মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে। তার থেকে ঘরের কিছু কাজ অনেকদিন হলো পেন্ডিং আছে, সেগুলো সেরে ফেলা ভালো। মেল করে একদিনের ক্যাজুয়াল লিভের দরখাস্ত পাঠালেই হবে। আসলে আজ এই লোকটা এসে এমন কিচাইন করে দিল যে, মেজাজটাই পুরো বিগড়ে গেল। বিশেষ করে ফেলে আসা সেই দিনগুলোকে এই লোকটা এমন ভাবে উসকে দিল, আর কিছুই এখন ভালো লাগছে না। লবঙ্গ কবেই হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। তারপর আর কোনোদিন দেখা হয়নি। আমিই দেখা করিনি। লবঙ্গও তো কোনোদিন দেখা করেনি! তাহলে আজ এত বছর পরে হঠাৎ কেন দেখা করতে চাইছে? দেখা করার আগ্রহ জানিয়ে একটা লোককে পাঠিয়েছে কেন আমার কাছে? কী বলতে চায় লবঙ্গ? আর কীই বা বলার আছে? আমার তো লবঙ্গকে কিছুই বলার নেই। তাহলে আমি দেখা করতে যাব কেন?
লোকটা বলল, কথাটা আপনি কিন্তু ভুল বলেননি। আমার অযোগ্যতা আর অপদার্থতা আমি সারা জীবন ধরেই বারবার প্রমাণ করে যাচ্ছি। কী করব বলুন! আমি যা, আমি তো তাই! নিজেকে আমি বদলাব কী করে! আমার হাতে তো সে ক্ষমতা নেই। আর ব্যাপারটাও বুঝেছি অনেক দেরিতে। তখন কিছুই করারও ছিল না। সে যাইহোক, আপনি একবার অন্তত লবঙ্গর সঙ্গে দেখা করুন। আমার একান্ত অনুরোধ। লবঙ্গ আপনার পথ চেয়ে বসে আছে।
কিন্তু কেন? সব খেলা তো শেষ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত সময়ের খেলাও আর বাকি নেই। তাহলে?
না না, এ কী বলছেন? খেলা কখনও শেষ হয় নাকি? খেলা চলতেই থাকে। কখনও বা অসমাপ্ত থাকে। আসলে কী জানেন, আরও আগেই অসমাপ্ত খেলাটা শুরু করার কথা ছিল। লবঙ্গ তাই চেয়েছিল। কিন্তু করা যায় নি। প্রথমত লবঙ্গর সঙ্গে আমার বিয়ের পরেই আপনি অন্য কোথাও চাকরি সূত্রে চলে গেছিলেন। আমরাও চলে গেছিলাম অনেক দূরে। আপনার সঙ্গে আর দেখা হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। তবে লবঙ্গর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল সামাজিকভাবে সম্বন্ধ করে। কোনো পূর্বরাগ পর্ব ছিল না। লবঙ্গর মা-বাবা আমাকে বেছে নিয়েছিলেন। যদিও তা নিতান্তই ভুল বাছাই ছিল। আর সেই ভুলটাই আমাদের দুজনের জীবন লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। কিন্তু তাসত্বেও আমার যেমন লবঙ্গকে ছেড়ে চলে যাবার উপায় ছিল না, ঠিক তেমনি আমাকে ছেড়ে লবঙ্গর আপনার কাছে ফিরে আসারও উপায় ছিল না। আসলে অনেক চেষ্টা করেও আপনার খোঁজ আমরা পাইনি।
মানে? কী বলতে চাইছেন আপনি? আপনাদের দুজনের দুজনকে ছেড়ে যাবার কথা উঠছে কেন? আর আমার খোঁজই বা আপনারা করেছিলেন কেন?
ব্যাপারটা আপনি নিশ্চয়ই অনুমান করে নিতে পারছেন, ঐ যে আপনি আমাকে বললেন অযোগ্য আর অপদার্থ, হ্যাঁ আমি তাই। বিয়ের পরে পরেই তা বুঝতে পেরেছিলাম। লজ্জায় ঘেন্নায় আমি একেবারে কুঁকড়ে গেছিলাম। আর তারপর যখন আপনার সঙ্গে লবঙ্গর সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলাম, তখন আমার নিজেকে অপরাধী বলে মনে হয়েছিল।
না, এবার উঠতেই হবে। চায়ের দোকানের একটা টেবিল অনেকক্ষণ হলো আমরা দখল করে বসে আছি। অন্যান্য খদ্দেরদের জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত। না উঠলে দোকানের মালিকই এবার বগলে কাতুকুতু দিয়ে উঠিয়ে দেবে।
দোকানের বাইরে বেরিয়ে লবঙ্গর স্বামীকে বললাম, কিন্তু লবঙ্গ সব জেনেও আপনারই কাছে থেকে গেল! আশ্চর্য! আমার যতদূর অভিজ্ঞতা, সেই সূত্র ধরে বলতে পারি, লবঙ্গ কিন্ত প্রচন্ড প্যাশনেট ছিল। অথচ আপনার সঙ্গে এভাবে জীবনটা…
উপায় ছিল না। বুঝলেন! উপায় ছিল না। লবঙ্গর সঙ্গে যখন আমার বিয়ে হয় তখন লবঙ্গ তিন মাসের প্রেগন্যান্ট ছিল। আর আমাদের ঐ একমাত্র কন্যাসন্তান। আমি নিজে তো আর কিছুই দিতে পারিনি লবঙ্গকে।
কী বলছেন আপনি! তাহলে লবঙ্গর মেয়ে…
আপনি প্লিজ একবার অন্তত দেখা করুন লবঙ্গর সঙ্গে। আমাকে শুধু তারিখটা জানান, কবে যেতে পারবেন!
Posted in: August 2020, STORY