অনিকেশ দাশগুপ্ত-র কবিতা

সন্ন্যাস

সভ্যতার আঁকশি ছাড়িয়ে
সময়হীন কোনো খাদানে
ঝাঁঝালো অঙ্কুর গজালে
চাঁদনী রাতে বিলক্ষণ নিশানগুলি, স্পষ্ট হয়ে থাকে…

রাবারবোর্ড,দাবার ঘোড়া, সারফিং বীচে কী অনমনীয়
এক নেশার্ত ছুরি বুলিয়ে চলেছি…
ঠিক ততটা ধারালো নয় তবু সফল আকার দিতে পারে
নিরাকার পরিচ্ছদ জুড়ে…

ভ্রমরপটিয়সী বর্ণালী জল উপচে ওঠে সময়ের উভয়পারে
আকাশ থেকে পোড়া চামড়ার বৃষ্টি ঝরে শাওনখাদে

বুনো বেড়ালটি সবচেয়ে উঁচু টিলা ধ’রে
এক অনন্ত সন্ন্যাসে পৌঁছে যায়…

মৃত্যু

টলতে টলতে খই ছড়াচ্ছে লাশ
মুখে অনন্ত খাবার
গায়ে ঝুরো নেমপ্লেট
সভ্যতার ইন্দ্রজাল কাটছে
খোলসের ঘ্রাণ কোথাও হারালো…

নিজেকে শতসহস্র বর্ণালীতে ছড়ানো যাচ্ছে না তো
অথবা যেকোন ত্রিকোণ ধরে এগোতে
কতরঙের দরজা সম্মুখে, আদিগন্ত নবজাতক করে তুলছে
মুখে- ঠোঁটে এতো এতো ঈশ্বররেণু…

নক্ষত্রের ক্ষীণ সিঁড়িপথ পেরিয়ে অত্যুজ্জ্বল আলোয়
নেমে গেলো শ্মশানঘাট…

অস্বীকার

অন্তত একটা অসম্পূর্ণ মেলোডি
অন্তত একটা অসমাপ্ত প্রায়ান্ধকার কার্ণিশ
গঞ্জে গঞ্জে হাঁক দেওয়া ফেরিঅলা অভিমান
অন্তত একটা কানঢাকা টুপি আর এই অন্তহীন আলাপে
ঘুরেফিরে আসা সমস্ত রাস্তাঘাট, জানলা-কবাট
অন্তত একটা ভেতর – ঘরের মতো এলোপাথারি ছায়া
অথবা একটা রঙ ছড়ান নিষ্ফল পদ্ম,
একটা না-পসন্দ প্রচ্ছদে জনৈকা প্রণয়িনী জগৎসুদ্ধ
তোমরা বরং প্রত্যেকে দ্যাখো মুবারকের অচেতন আবেগ
অনুভব করো ভয়বিহ্বল আঙুলের অকৃত্রিম সাঁতার
মৃত্যু পরবর্তী প্রতীকী শৈশব অঙ্গীকার ….
বর্ম আঁটো অসাড়, অর্থহীন এ ঈশ্বরলিপি মুছে যাক
অন্তত এক নক্ষত্রের আলগোছে ভ’রে উঠুক
রাত্রির রুদ্ধ শিয়র..

Facebook Comments

Leave a Reply