আহমেদ মুগ্ধ-র কবিতা
অতঃপর বনসাই
শষ্পাবৃত বাহুর মূল্য দিয়ে তোমারই ভেতর
আমার দৃষ্টির অঙ্গজ আশ্রয় প্রোথিত হয়।
উপনেত্রে উপনীত হলে কৃত্রিম আলো
বিচ্যুত করে চাঁদের ছায়া, চাঁদ হতে;
সহস্র কোলাজ-মুক্ত একান্তই ব্যক্তিগত নৈসর্গিক
পূর্ণিমা নিয়ে তোমার কাছে চেয়েছি পৌঁছাতে।
যে সুরের সহস্র শ্রোতা, সেই সুর তুমিহীন,
চেতনার ভেতর সম্যক সমাধি পায় না—
তাই সুর নয় সুরের অবশিষ্টাংশ কুড়িয়েছি;
সুর থেকে বিচ্ছুরিত অরগানগুলো নিয়ে
একাকিত্বের পৈতৃক বাগানে তাকে ক্রমশ
আরো সুরায়িত করেছি; যেহেতু আমরা জানি
পৃথিবীর কোনো সমুদ্রই একা নয়, তাই ক্রুশ আঁকা
তুষারাচ্ছন্ন শহরের পেডিমেন্টগুলোয় জলে
জলেদের অবয়ব ভিড়প্রাপ্ত হলে—
আমরা তখন কোনো জ্যামিতি না মেনেই
আমাদের ব্যক্তিগত সমুদ্রের লক্ষ্যে—
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চাষ করেছি অশ্রু ও লবণ।
ভালোবাসায় যেকোনো দেহমাত্রই বহমান
তবু তোমার ঠোঁটে আমার আঙুলের
স্পর্শ নির্মিতব্যই থেকে যায় চিরকাল।
হৃদয়ের জলৌকা ধৌত করতে হলে
সাবানকেও প্রক্ষালিত হতে হয় জলে
তখন এই রাতে আমি নিশাচর কোনো
ক্যাফেটেরিয়ার কাছে যাব না—
যাবো না তীর্থযাত্রীদের জন্য বন্দরে
বসা কোনো পিয়ানোবাদকের কাছে।
ল্যাম্পপোস্টের আলোর নিচে তোমার
হাইওয়েতে আমাদের কিছু হাত ধরা
এখনো গির্জার প্রাচীন ঘড়ির ছায়ায়
সংকলিত হয়ে আছে, স্থির হয়ে আছে।
আমি কোনো বিশ্বাসযোগ্য—
ট্রান্সপোর্টে সেখানেই পৌঁছাব।
আমি অবগত নই, সেই বনসাইগুলো
নিয়ে আমি কখন ঘরে ফিরব
আমি শুধু জানি, তার আগে আমাকে
অপেক্ষা করতে হবে কিছু সমাপ্তির,
কিছু অনুভূতির; যদিও কাকভেজা
বৃষ্টির থেকে কাক পলায়িত হলেও
‘ভিজে যাওয়া’ ঠিক তারই নিয়মে
থাকে স্থির, স্থির বলেই অনুভব করি
অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ। এবং আমার অনুভূতিঃ
তোমার সাথেই হাঁটি কিংবা রাত্রির নদীর
পাশে তোমার সাথেই দাঁড়াই না যত; তবু মনে
হয়, আমি হাঁটি তোমার দিকেই অবিরাম—
তোমার দিকেই আমি হাঁটি অবিরাম।
এবং সংসক্তিকে হেলা করতে শিখেনি—আমার আত্মার প্রতিধ্বনি।
Posted in: August 2020, POETRY