ওরা কেমন যেন … আমাদের মতো না : সুদীপ উড্ডীন শ্রীরামপুরী
(১)
প্রাপ্তিকেও কি আমাদের পিকনিকে আসতে বলবি?
কেন তোর আবার কি হোল? আমরা কেউ কখনো আমাদের কোন আড্ডায়, অনুষ্ঠানে, বেড়াতে যাওয়ায় ওকে বারণ করেছি? ওর বাড়ীর আপত্তি না থাকলে পিকনিকে যাবে না কেন?
না মানে ওখানে গেলে পাহাড়ি রাস্তায় ওঠা নামা করতে হবে। কিম্বা অনেক খানি হাঁটতে হবে সে ক্ষেত্রে ওকে নিয়ে আমাদের সমস্যা বাড়বে। বেড়াতে গিয়ে কি এসব সম্ভব তুইই বল?
তুই ওর ব্যাপারে বেশী ভাবছিস। আমরা সবাই আছি, তাছাড়া প্রত্যয় তো ওকে নিয়ে বেশ কয়েকবার ট্রেনে, বাসে, প্লেনে আমাদের সঙ্গে গ্যাছে। এমন কি প্রাপ্তির হুইল চেয়ারটা কিভাবে গড়ান জায়গায়, সিঁড়িতে ওঠানোর বা নামানোর কায়দা শিখিয়ে দিয়েছে। তুই মনে হয় অযথা চিন্তা করছিস।
আমার আর কি? তোরা যদি দায়িত্ব নিয়ে ওকে নিয়ে যাস আমার আর কি বলার আছে?
মানে তুই বলতে চাইছিস তোর কোন দায়িত্ব থাকবে না?
না, মানে আমি বলতে চাইছি আমরা আনন্দ করবো কিন্তু দায়িত্ব নিলে কি সেভাবে আনন্দ করা যায়? খেয়াল রাখার ব্যাপার থাকে।
হ্যাঁরে, মন্দারমনিতে তোর কাঁধের ব্যাগটা হারিয়ে ছিলি, কে খেয়াল করে বলেছিল যে হোটেলের টয়লেটে তুই ভুলে রেখে এসেছিলি। ম্যানেজার ভেবেছিল টয়লেটে হুইল চেয়ার নিয়ে প্রাপ্তি ঢুকতে পারেনি তাই হয়তো বেসিনের ধারে ব্যাগটা পেয়ে, উনি নিজের কাছে রেখেছিলেন।
হ্যাঁ, প্রাপ্তি বলেছিল কারণ ওর খেয়াল ছিল। তাছাড়া, ওর সব ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা স্বভাব।
তাতে তোর লাভ হয়েছিল না ক্ষতি হয়েছে? দেখ একটা কথা মনে রাখিস, ওর সঙ্গে যেখানেই যাই না কেন, আমাদের খরচের হিসেব, টাকাপয়সা, ভাগ বাটোয়ারা, বন্ধুদের সব ব্যাপারে খেয়াল রাখা, কে কোনটা পছন্দ করে, সেই বুঝে পরামর্শ দেয়। তাতে আমারা নিয়ন্ত্রণ থাকি এবং বিপদ আপদে কাজেও লাগে। তুই বলছিস ওকে খেয়াল রাখতে হবে?
ওর জন্য আমাদের সবসময় আগে বেরোতে হয়। বিরক্ত লাগে।
হ্যাঁ, তুই একবার কলকাতা-বাগডোগরা ফ্লাইট মিস করে ট্রেনে এন্ জি পি এসেছিলি। ওর জন্যই না রে? আসল কথা হল, তুই ওকে পছন্দ করিস না শুধু মাত্র ও ভালো করে তোর মতো হাঁটতে পারে না। নাকি প্রত্যয় তোকে বেশী পাত্তা দেয় না; ওকে বেশী খেয়াল রাখে সেই জন্যে।
দেখ ভালো হবে না কিন্তু , তুই উল্টোপাল্টা বলবি না। প্রত্যয় একটা ভিজে বেড়াল, সুযোগের অপেক্ষায় আছে।
তাই নাকি? জানতাম না তো? তুই কি ওকে সুযোগ দিয়েছিলিস আগে? প্রাপ্তি কে সাবধান করে দি তাহলে।
(২)
দরজা খুলতেই দেখলাম অভীক সন্ত্রস্ত হোয়ে বাইরের ঘরে ঢুকল। আমিও একটু অপ্রস্তুত হয়ে জানতে চাইলাম কি হয়েছে? তোমাকে এরকম উৎকণ্ঠিত দেখাচ্ছে কেন? বাড়ীতে কিছু অঘটন ঘটেছে?
এক গ্লাস জল দিন, বলছি তারপর।
জল দিলাম, প্রায় এক চুমুকে গ্লাসটা শেষ করে ধাতস্থ হলো। চোখে মুখের উদ্ভ্রান্ত ভাবটা এখন নেই। সোফায় বসে একটু শান্ত হয়ে জানালো, ও সুরক্ষা কর্মীর কাজে যোগদান করেছে ব্যারাকপুরে একটা ফ্যাক্টারীতে। সকালে যেতে হয় দশ ঘণ্টার কাজ, মাঝে দুইবার আধ ঘণ্টার বিশ্রাম, যাতায়াত নিয়ে বারো ঘণ্টা ব্যস্ত থাকে। শুনে আমি ওকে উৎসাহিত করলাম। মনে করিয়ে দিলাম আমি ওর মানসিক পরীক্ষার রিপোর্ট ডাক্তারের কাছে পাঠানোর সময় পরামর্শ দিয়ে ছিলাম ওষুধ খাওয়ার এক মাসের মধ্যে কাজে যোগদান করা জরুরী।
বছর ত্রিশের যুবক বাড়িতে কমার্সের স্নাতক হয়ে বাড়ীর দোতলায় বারান্দা লাগোয়া আসবাবহীন ঘরে সারাদিন বসে খাতার পর খাতা কবিতা লিখতো। এই ভাবে প্রায় চার বছরের বেশী কাটিয়েছে।
শেষের দিকে ওর মা আমকে যোগাযোগ করেন। আমি ওর বাড়ীতে প্রায় তিন দিনে পাঁচ ছয় ঘণ্টা ওকে পর্যবেক্ষণ ও মানসিক পরীক্ষা করে রিপোর্টে মানসিক চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলি।
দুই তিন মাসের মধ্যে ওর প্রভূত উন্নতি হয়। বাড়ীর কাজে মাকে সাহায্য করা, বাজার দোকান , রেডিও শোনা, পাড়ায় সে রকম কোন বন্ধু না থাকায়, আমার সাহিত্যিক বন্ধুদের আড্ডায় যোগদান করতো, কবিতা লেখার সময় ও বাতিক কমে গিয়ে ভারসাম্য বজায় রেখে জীবন কাটাচ্ছিল।
ইতি মধ্যে এই চাকরীটা ওর পাওয়াতে আমি বেশ খুশী হলাম।
আর একটা ভালো খবর আপনাকে দেওয়া হয় নি।
আবার কি খবর? বল শুনি, নিশ্চয় তোমার বিয়ের খবর?
লজ্জা পেয়ে বলে উঠলো, না না সেরকম কিছু না। আপনি আমাকে কবিতা লিখতে বারণ করেন নি কিন্তু আমার নিজের ব্যাস্ততায় আর লেখা প্রায় হয় না। আপনাকে না জানিয়েই আমি কাগজের একটা বিজ্ঞাপন দেখে দিল্লীতে রাষ্ট্রপতি ভবনের ট্যালেন্ট সার্চ কমিটিতে দুটো কবিতা পাঠিয়েছি। আমার অসুখের সময় লেখা গুচ্ছ গুচ্ছ কবিতার মধ্যে আপনি যে গুলো কে আপনার ভালো লেগেছিল বলে ছিলেন তার থেকে দুটো পাঠিয়েছিলাম।
তারপর? খবর এসেছে কোন?
ঐ খবরটাও দিতে আজ এসেছি। গত সপ্তাহে চিঠি দিয়ে ওরা জানিয়েছে আমার একটা কবিতা রাষ্ট্রপতি ভবনের কমিটির মতে প্রথম হয়েছে এবং তার সঙ্গে একই খামে পাঁচ হাজার টাকার একটা চেক পাঠিয়েছে। আর সঙ্গে একটা বই যাতে অনেক ভাষার বিভিন্ন লেখার সঙ্গে আমার বাংলা কবিতাটাও আছে। এই যে সেই বইটা, প্রথম পাতায়।
আমি স্তম্ভিত এবং কিছুক্ষণের জন্য বাক্রুদ্ধ । সম্বিত ফিরতে আমি ওকে মিষ্টি ও জল তো দিলাম সঙ্গে কফি।
আমি খুব খুশী হয়েছি। ওটা তুমি তোমার অসুস্থ অবস্থায় লিখেছিলে না? কোন সময়ের লেখা ছিলও ওটা?
আমার ঠিক মনে নেই , কারণ আপনার সঙ্গে দেখা হবার পরে আপনি আমাকে তারিখ দিয়ে লিখতে বলে ছিলেন। তারপরে আমি তাই করতাম আপনিও দেখেছেন। ওটা সাতাশ নম্বর খাতার, মানে আপনি বলার এক সপ্তাহ আগে হবে হয়তো। আজকাল, মানে গত দুমাসে চেষ্টা করেও আর কোন কবিতা আমি লিখতে পারিনি।
(৩)
বর্ষার পর জলঢাকা উদ্ভিন্ন যৌবনা যৌবনমদে মত্তা নারী। ব্রম্ভপুত্রে মিলনের জন্য উদগ্রীব।
নিরালার সঙ্গে লাটাগুড়ির জঙ্গলে যতবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মাস গুলো তে এসেছি ততবারই আমার একই অভিজ্ঞতা। সঙ্গে গাড়ী থাকায় যখন ইচ্ছে তখনি নদীর তীরে জঙ্গলে বসে নদীর এই রূপ কে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছি। নিরু সঙ্গে থাকলে ওকে খেয়াল রেখেও ছবি তোলা, পাখী দেখা, প্রাকৃতিক শব্দ শুনে সময় কাটাই।
কি হোল তুমি ঠিক আছ তো? শরীর খারাপ লাগছে? রিসোর্টে ফিরে যাবে?
উম্… না না, শরীর ঠিক আছে। আমি ভাবছি এখন কোন গানটা এই পরিবেশে মানানসই হবে?
ওষুধটা খেয়েছো? সাইড টেবিলে জলের গ্লাসের পাশে ছিল। তাড়াহুড়োতে দেখিনি খেয়েছ কিনা?
হ্যাঁ, খেয়েছি , আচ্ছা, আমাকে কি ওষুধটা সারা জীবন খেয়ে যেতে হবে? কয়েকদিন না খেলে আমার শরীরটা কেমন যেন আনচান করে। ডাক্তার কে বল না এমন কি কিছু করা যায় না যাতে আমাকে আর না ওষুধ খেতে হয়।
নিরু, একই কথা জিজ্ঞেস কর কেন? ডাক্তার তোমাকে বুঝিয়েছেন কেন ওষুধ খেতে হবে? আমাদের শরীরে কিছু হরমোন এবং নিউরো-ট্রান্সমিটারের সামঞ্জস্য নিয়ে এই জগতকে প্রত্যক্ষ করি। এই দুটির অসামঞ্জস্য আমাদের দেখা, বোঝা, অনুভূতি সব পাল্টে দেয়। কিছু লোকের এটা হয় আবার অনেকের এই সব না হয়ে অন্য কিছু হয়। অনেকের কিছুই হয় না।
অন্য কিছু …! মানে?
সারা জীবন মোটামুটি ওষুধ ছাড়া ঐ দাঁত পড়া, চোখে কম দেখা নিয়ে জীবন কেটে যায়। কারুর আবার অম্বল, চোঁয়া ঢেঁকুর তুলেই জীবন কাটে। অনেকে রক্তে শর্করা নয়তো কিডনি অকেজো কিম্বা শ্বাসের কষ্ট নিয়ে সারা জীবন কাটাচ্ছে। এরা ওষুধ সারা জীবন খায়, জীবনও কাটায়। তোমার ক্ষেত্রে বাই-পোলার ডিসঅর্ডার আগে যাকে ম্যানিক্-ডিপ্রেসসিভ সাইকোসিস্ বলতাম।
সত্যি, একেক সময় ভাবি আমার জন্য জীবনটা তোমার ইচ্ছে মতো কাটাতে পারছো না। কয়েক মাস মাত্র ভালো থাকি … যখন কয়েক মাস অবসাদের দিকে যাই তখন বিরক্তিকর একঘেয়ে জীবন; মনে হয় নিজেকে শেষ করে দিয়ে তোমাকে মুক্তি দিই।
নিরু কেন এইসব বলছো, বেড়াতে এসে বেড়াবার আনন্দটা উপভোগ করো।
আমাকে বলতে দাও। এসব না জানালে আমার মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করে। আবার যখন কয়েক মাস আনন্দে মাতোয়ারা তখন মনে হয় ঘুমিয়ে সময় নষ্ট না করে আরো কি কি করার আছে? যা করা হয়নি সেগুলো করে নিই।
তুমি এতো উত্তেজিত থাকো যে, তোমাকে বাধা না দিলে, কোন একটা অঘটন ঘটে যাবে এই ভয়ে থাকি।
এই দুয়ের মাঝের জীবনটা কয়েক মাসের, আর এই কয়েক মাস আমার তোমার দিকে খেয়াল হয়। আর এই সময় তুমি আমাকে নিয়ে একটু বেড়াতে নিয়ে আসো , তোমার ইচ্ছে পূরণ হয়। আমি যেন তোমার জীবনে একটা অভিশাপ।
তাই? আচ্ছা কল্পনা করো, তোমার নয় অসুখটা আমার হয়েছে, বা আমারই অন্য কোন সিস্টেম ডিসঅর্ডার। নিরু তুমিও কি এরকম ভাবতে? বাবা-মায়ের বার্ধক্যজনিত কারণে অশক্ত, জরাগ্রস্থ, তাদের ক্ষেত্রেও কি এই রকম করে ভাববো যে তারা আমাদের বোঝা?
(৪)
শুনছো? আজকে অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফিরো, অনুলেখা-শ্যামল দের সঙ্গে দেখা করতে যাবো সন্ধ্যে বেলা। মনে আছে তো?
হ্যাঁ, মনে আছে, সন্টুকে রেডি করে রেখো। ফিরে এসে গা ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে যাবো। ওরা তো রাতের খাবার খেয়ে আসতে বলেছে। ভাবছি শ্রমজীবী কোপারেটিভের মধু এক শিশি নিয়ে যাবো।
তাই করো, অনুলেখা ঐ মধুটা রোজ খায়। বলে ঐ মধুটাতে প্রিসারভেটিভ্ থাকে না বলে স্বাদটা ভালো।
সন্টু, সন্টু … আমি বেড়োচ্ছি, তুই সন্ধ্যে বেলা রেডি থাকিস্। আমারা আজ অনুলেখা-শ্যামল কাকুদের বাড়ী যাবো। মিস্টু দিদি দের বাড়ী … তুই যাবিতো?
প্লাস্টিকের ব্লক দিয়ে বাড়ি বানাতে ব্যস্ত একবার ঘাড় ফিরিয়ে আমার বেড়িয়ে যাবার মুখে যান্ত্রিক ভাবে হাত নাড়লো। সন্টুর চোখ দেখে বোঝা যায় ওর ভালো লাগা আবেগ গুলো।
ভাষায় প্রকাশ করলো “সন্টু… মিস্টু দিদির বাড়ী যাবে”।
সন্টু গত মাসে এগারো পেরিয়ে বারোয় পড়ল। প্রথম দুই বছর সন্টু আর পাঁচটা বাচ্চার মতো ফুটফুটে, সুস্থ, সামান্য একটু একা থাকতে পছন্দ করতো আর একটা বিশেষ কাজ বাবার করতো। ঘরের মধ্যে একা একা হাত দু দিকে ছড়িয়ে ঘুরত, ইশারা করে ওর প্রকাশ করত ওর চাহিদা গুলো। প্রায় তিন বছরেও কথা না আসাতে স্পিচ্ সেন্টারে নিয়ে যেতে হোল। ওখানে যাবার পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনা, সন্টুর মানসিক ও কথা বলা সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ হলে স্পীচ্-ল্যাঙ্গুইয়েজ থেরাপী ও সেই সঙ্গে আটিসম্ স্পেশাল এডুকেশন্ (মানসিক-সামাজিক) ব্যাবস্থায় প্রায় দুই বছর থাকার পর বেশ উন্নতি লক্ষ্য করার পর আবার পরীক্ষা নিরীক্ষার পর রিপোর্ট এলো সন্টু অটিসম্ স্পেক্ট্রামের আস্পারগার ডিসঅর্ডারের শিশু হিসেবে চিহ্নিত হলো … ওর জন্য স্পেশাল স্কুলের ব্যবস্থাপনায় সাধারণ স্কুলের চতুর্থ শ্রেণী তে পড়ছে।
কি হলো? তোর তো বলার কথা “মোগাম্বো খুস্ হুয়া” তা না বলে “সন্টু … মিস্টু দিদির বাড়ী যাবে” বললি।
তুমি যাবে, মা যাবে, আমি যাবে … মিস্টু দিদির বাড়ী … হি … হি…
সন্টু কয়েকটা পাক ঘুরে নিলো … হি … হি … হি… মোগাম্বো খুশ্ হুয়া … মোগাম্বো খুশ্ হুয়া … বলতে বলতে পাশের ঘরে গিয়ে দুলে দুলে নাচতে লাগলো … মুখে বলতে লাগলো “অঙ্ক করে রাখবে … মোগাম্বো খুশ্ হুয়া”।
আজকাল ও হোমওয়ার্কের ব্যাপারে সিরিয়াস্। অঙ্ক চতুর্থ শ্রেণীর পর্ব ছাড়িয়ে প্রায় ষষ্ঠ শ্রেণীর অঙ্ক গুলো বিনা আয়াসে করে ফেলে … পড়তে পারে তবে বেশীর ভাগ সময়ে বানান করে … হাতের লেখা সুন্দর নয় তবে বোঝা যায়। বাড়ীতে মাস্টার দিদি ওর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
শুনছো, সন্টু খুব মজা পেয়েছে, আজ মিস্টুদিদির বাড়ী যাবে শুনে। আমাকে রান্না ঘরে গিয়ে বারবার বলছে। হ্যাঁগো, ওকে মিস্টুদের বাড়ীতে রেখে বাবার জন্য ব্যাঙ্গালোরে ডাক্তার দেখাতে যাবো … ওদের মানে শ্যামল-অনুলেখাদের বাড়ীতে, ও একলা আমাদের ছেড়ে থাকতে পারবে?
সন্টু আমাদের কথা বলতে দেখে, এঘরে এসে ঘুরপাক খাচ্ছে আর বলছে, সন্টু মিস্টূদিদি… অণু মাসি… বাড়ী থাকবে … দাদু ব্যাঙ্গালোর … ডাক্তার ভালো … সন্টু ভালো … মিস্টূদিদি ভালো … মোগাম্বো খুস্ হুয়া …
চিন্তা করো না , দেখছো কেমন বুঝেছে আমাদের বোঝাচ্ছে। ও বোঝাতে চাইছে আমরা দাদুকে ব্যাঙ্গালোরে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলে, ও মিস্টুদের বাড়ীতে ভালো হয়ে থাকবে। ওর জন্য চিন্তা করতে বারণ করছে।
আমি নিশ্চিন্ত হয়ে অফিসে বেরোলাম।
Posted in: July 2020 - Cover Story, STORY