সুমন কুন্ডু-‘র কবিতা
বৃষ্টিজারিত ভাবনাগুলো
এক।
কাল রাত থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টি হলো
এই রেশননিথর রাস্তা ধুয়েছে সন্ন্যাসীর রক্ত
মানুষের মন এখন মানবিকতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে
ঝিমানো, একটা পেপের মতো
সংক্রমণ ফির প্রেরণা পেয়েছে
কী হবে এত শব্দ, ছেলেবেলা, নস্টালজিয়া
ভোর সাড়ে পাঁচটা,
মাটিতে তোমার গায়ের সোঁদা গন্ধ খুঁজছিলাম
তালু ফিরিয়ে দিচ্ছে ভেজার বাহানা
নিঝুম জীবন একাই হেঁটে চলেছে
ছাতা খুলে, অশনির দিকে
দুই।
সারাদিন নাবালক একটা বৃষ্টি
বাস চলেনি, ভিজেছি
চতুর্থ লাইনটা তখনই মাথায় আসে
আমার ভেতরের সমস্ত উন্মাদ, অস্তিত্বসংকট
বেরিয়ে এসে ভিড়ের মধ্যে ছোটাছুটি করে
হাজারো রকমের আওয়াজের ভেতর তোমার স্বর খুঁজি
আজকাল কী যেন হয়েছে একটা
নুড়ি পাথরের টুকরোর ঘা খেতে খেতে
অফিসে, বাড়িতে, রাস্তায় গুঁড়ি গুঁড়ি এক পশলা
তোমার অবৈধ অমোঘতা
পাশ কাটাতে পারি না
তিন।
এই বর্ষায় বেরোনো খুব দুষ্কর। মালবোঝাই লরি চলে যায়, মনের ওপর ছিটকে আসে একদলা কাদা!
কদমফুল বুকের এককোণে গুটিয়ে থাকে। তোমার রেইনকোটের গা বেয়ে গড়িয়ে যায় শব্দ। মাটির উপর পড়ে থাকা চায়ের ভাঁড় ভিজতে থাকে, পরজন্মের জন্য।
অ্যাম্বুলেন্সে অসুখ। বুনে রাখা রথযাত্রার দৃশ্যের মতো সাজানো কথাবার্তা হেঁটে চলে। ভেঙে যাওয়া পক্ষপাতের মুক্তিরেণুগুলো অগণিত খাঁজকাটা। ফুটতে থাকে…
শার্সির কাচ পেরিয়ে দেখি, আমার বামদিক এলোমেলো।
চার।
মেলে দেওয়া জামা কাপড় কিছুতেই শুকোচ্ছে না। একটা অন্যমনস্ক রোদ হাওয়ায় ভেসে ভেসে ঘষে যাওয়া পেন্সিলের দাগ, টলমল করতে থাকা গোড়ালির স্মৃতি থেকে সম্পূরক ভাবনা। প্রাইমারি একটা স্ট্রাকচার। ঘাম ঘাম জুলাই। বয়স থেকে নির্ভরতা ভাগ হচ্ছে।
ভেজা মেঝেতে তখনও পায়ের ছাপ। হাঁটার যাবতীয় কৌশল। আলাপ। বিকেল বিকেল। সাদা ফুল। ভিজতে থাকে। গেটের বাইরে।
Facebook Comments