শীর্ষা-র কবিতা

কয়েকটি কবিতা

*
উপাসনার ভুল হাতজোড় থেকে ভয়ের সজারু জন্ম নেয়। অ্যালার্ম ঘড়ির কাঁটার তীক্ষ্ণতা বেজে ওঠে হৃৎপিণ্ডের পাশেই। যেন ওখানে কেউ ক্যালেণ্ডার এঁকে গেছে। যেন ফিরে আসার তারিখটা লাল কালি দিয়ে গোল করে দেওয়ার কথায় ইচ্ছে করেই ভুল রেখে গেছে কেউ।

*
সমগ্র রাত একটি জারুলের বেগুনিরঙা দুঃখ। নিশ্চয়তায় ঝরে পড়তেই হবে। খসে পড়তেই হবে তর্পণের মতো – হাত থেকে জলের বুকে। জল গ্রহণ করবে জানা কথা, জল একটি মহাকালের নাম – তবু খসে পড়ার দুঃখকে ক্রমাগত বুঝিয়ে চলেছে কৃষ্ণ, তার অন্ধকার শরীর দিয়ে। আর স্নেহপদার্থের আধিক্যে জারুলের বেগুনিরঙা পোঁচ আরও ঘন হচ্ছে। আরও নিকষ।

*
সমস্ত বিকেলের আলো সস্তায় কিনে নেওয়া হল – এবার ব্যবসাদারি লাভে আনন্দ উদযাপন হওয়ার কথা। উদযাপনের ছুরির ধারালো কেকের ক্রিমের সোহাগে নরম হয়ে উঠেছে। মাখনরঙা ছুরির হাতেপায়ে হাসির আলতো! ছুরি দেখতে পাচ্ছে কেমন ঔদ্ধত্যহীন ভালোবাসায় কেক কাটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে সে – চারপাশে শুধু হাততালি-গানের আদরমোড়া টিটকিরির ঘনত্ব! হাসাহাসি করে এগিয়ে আসছে উদযাপনের মিথ কিংবা মিথ্যের দিকে

*
উন্মাদ ফড়িংটিকে একটি অলৌকিক দিয়ে ঘাসের সবুজে স্থির করা হল। যেন ফিজিক্স বইয়ের স্ট্যাটিক চ্যাপ্টার। এখন উপাসনার ভুল আমার ক্রীতদাস মাত্র। অথচ হাতজোড়ের মধ্যে যীশুখ্রীষ্টের পেরেক উপড়ে ফেলার ক্ষমতা – এই সামান্যটুকু চাহিদা দেখেই হৃৎপিণ্ডে আবার অপেক্ষা রেখে যাচ্ছে বেয়াদব ক্যালেণ্ডার।

Facebook Comments

Posted in: July 2020, POETRY

Tagged as: , ,

1 thought on “শীর্ষা-র কবিতা Leave a comment

  1. কয়েকটি খুবই চমৎকার!

Leave a Reply