সাগরিকা রাজবংশী-র কবিতা
ইনসোমনিয়ার রাতগুলি
( ১ )
দিগন্তে ভেসে বেড়ায় মাথার সিঁথি
সিঁথি বরাবর নলগাছ দাঁড়িয়ে আছে
আলপথ জুড়ে ঘরকুনো জঞ্জালের আবাস
তার থেকে ঠিকরে পড়ছে দেহ
দুটি চোখ
নাক
মুখ
জলে ভাসে শরীর
ছায়া টেনে ধরে রাখে শরীর
জলজ অভিব্যক্তি সুতো ছাড়াতে ছাড়াতে
বেলা পড়ে যায়
শরীরে ভাসে জল
রাত হলে তারা একপায়ে দাঁড়িয়ে পড়ে
একবুকে দাঁড়িয়ে জল ভানে
নীলে মিশিয়ে দেয় এতটুকু লাল
হলুদ
সবুজ
পাতা খই হয়ে ঝরে পড়ে
ঘাসের আগায়
আঙুলের ডগায়
আর ঝরে আলো
অনেক আলো।
( ২ )
দেখ সাদা সাদা মেঘ
পাঁপড়ির মত ভেসে বেড়ায়
মেঘ থেকে থোকা থোকা বৃষ্টি
ঝরে পড়ে
বৃষ্টি কুড়িয়ে আনে আনোয়ারের মা
বড় ভাল খেতে
আর ছড়িয়ে পড়ে সুগন্ধি
মাতাল করে মাঝির বৈঠ্যা
সামাল
নেশায় চুর মৌমাছি
ফল বিক্রি করে দু আনায়
আমি কখন থেকে বসে আছি
নিদারুণ পিঁপড়ে অস্তিত্ব
অস্তিত্বের মাঝে অস্তিত্বের লড়াই
আমি রেনু মেখে ডুব দিই
ডুবে আবার রেনুতে প্রবেশ করি
আমি রেনু হয়ে যাই।
আত্মকথা
প্রজাপতি আঁকে ভাঙা খোলস
পিউপা সময়চক্র বেয়ে যায়
আয়ুরেখা ধরে
জলতরঙ্গে মূর্ত শরীর
অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রমত্ত জল কেলি
চুপিসাড়ে ডুব দেয় অস্থিমজ্জায়
দেউলিয়া পিঁজরা
সাঁতার কেটে পৌঁছে যায়
শিকড়ের কঙ্কাল
বিন্দু বিন্দু জল ঝরে
টুপ টাপ
নদীতে জাল ফেলে
বিস্তারিত শাখাপ্রশাখা
ধীরে ধীরে পান করে
শেষ স্বেদ বিন্দু
আমি একপা একপা করে এগিয়ে যাই
চাঁদ ওঠে
চাঁদ ফেলে খাই।