পিয়াস মজিদের কবিতা
বেঁচে থাকার তোপধ্বনি
অগ্রন্থিত আমাকে তুমি কোথায় পাবে, এই বইয়ের ভুবনে?
বিজন বনে বাস করে যারা খোঁজে বাণীদীপ্তি,
ব্যবসাদার কথাসরিৎসাগর
রক্তের রোজনামচায়
তারা সব লিখল;
অলিখিত থেকে যায়
প্রতি রাতের স্বপ্ন-শহিদ।
যে-কালে কান্নাই কিংবদন্তি
রোদনের রান্নাবান্না
অতিক্রম করে চলে
যে-কোনো আপেল-সনেট
আর অরেঞ্জ-এলিজি।
হ্যাঁ, আমিই বড়কাগজের বাহাদুর
লিটলম্যাগের লাট
করোনাজনিত লাইভের লাভার
ভিডিও-ভৃত্য
অ্যাকশন অতঃপর।
কবিতার ফলনে কোনো ঘাটতি হবেনা স্যার।
গোলাপগুদাম, চারুচিহ্ন, কারুকৃতি
যথাযথ মজুতের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
হেরম্ব, শুয়ে পড়ুন আপাতত
গানের বালিশে।
আনন্দের মৃত্যুনাচ স্থগিত রেখে
ঋণ হিসেবে জীবন আনা গেছে
অতি সহজ শর্তে।
রাহুর রূপালি রূপ
ছেলেমেয়ে উভয়েরই প্রসাধন খুব,
তারপর আসন্ন মহাযুদ্ধের ময়দান
কে বাঁচি, কে হারি
দেখা হবে ফের
বিদ্রোহে না হোক, বিস্মরণে।
আজ প্রত্যেকে বক্তব্য রাখবে
যে যার শোকসভাতে,
মরুন মশাই মরুন
একটু আগে বাঁচুন।
নয়তো শ্রোতা পাবেন না
নিজের মেমোরিয়াল মিটিংয়ে,
প্রতিবেলা শ্বাস নিয়ে
ঘ্রাণের দূরত্ব মাপি
কতদূর আকালের ফুল!
বেঁচে থাকার
কায়ক্লেশ-কলোনিতে,
মনের মরুভূমি-মহলে
লাওয়ারিশ আত্মার আন্দালুসিয়া
অক্ষরের উপর
বেদূইন-চাঁদের গ্রহণ।
এসো অসুর এসো
আনন্দধ্বনি থাকুক আকাশে
বিষাদ জাগাও প্রাণের পাতালে;
একক বা বৃন্দ,
মানুষের ইতিহাস এগিয়ে যাওয়ার
জীবন পিছে রেখে
মানুষ এগোবেই ধ্বংসের দিকে।
সূর্যের শেষকৃত্যে সমবেত;
আমরা যত শবের সাধক।
পুঁজির প্রাসাদ থেকে কবিতাকুটির,
আমাদের বসবাসের
ভেজা উত্তাপে
সাপ তার হিসহিস স্বরলিপি
ভুলে গেছে।
কায়েম হয়েছে মধুময়
বিষের সমবন্টন,
মরে যাওয়ার সুখের অধিক
মন্দের ভাল
সুখে থাকার বোধিসত্ব,
আরাধ্য অন্ধকারের অর্কিড।
অভাবের আয়োজনেও
প্লেটভর্তি প্রেমের পয়ার
লাগছে কেমন-
টক না ঝাল!