আলিউজ্জামান-র কবিতা
শিরোনামহীন কয়েকটি লেখা
(১)
মা ঘরমোছা চাউনিতে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে আনছে
ঝুলবারান্দা।
এখানে ট্রামলাইন থাকতে নেই বলে আজকাল
সবজি বিক্রেতারা রঙিন চশমা পরে
বয়ে আনা ক্ষিদেয়
একপায়ে ব্রেক কষে মসজিদ পেরিয়ে যায়
ভাঙা খেলনাগাড়ি আর
প্রত্যেক জানাজায় বকেয়া মিটিয়ে যায়
শরীর।
(২)
ঘুমিয়ে থাকা জারজ সন্তান,পিতাজন্মের
বুক পকেটে লুকিয়ে রাখা কামরাঙা
ঋণ।
নিজেকে বানচোদ বলবো বলে গাছের
নীচে ঠেস দিয়ে বুঝেছি তুমি মানে
দোযখনামা পার করে যাওয়া ছেঁড়া
পুলসীরাত।
(৩)
নদীর কাছে আসলে বাঁশির প্রসব বেদনায়
দূরে দূরের গলিপথে পরিত্যক্ত খবরের কাগজ।
বাইরে সুগন্ধি পাউডারের বিজ্ঞাপন ভিতরে
জাপানি তেলের
পিছলানো রাস্তায় তুমিও হয়তো
ভাবছো —
যৌবনভুলে এবার শুঁয়োপোকা প্রজাপতি হবে
কিভাবে?
(৪)
উজ্জ্বল জামার ভিতর দিয়ে দ্যাখো চিঠির
নকল খামের অবিবাহে বোঝা নামিয়ে রাখছে জীবন।কাউকে কিছু না বলেই হেঁটে যায় ,
বুকের ভিতর
পাতাবাহারের জঞ্জাল।লাশগুলো নড়ে চড়ে…
(৫)
বুকের ভেতর কিছু পাথর কুড়িয়ে রাখা ভালো।
এভাবে কলসীর গলায় জলতল পৌঁছালে
কাককে আর হতে হয়না সারস।
ধর্মান্তর
তোমাকে মনে পড়ছে সুপুরিবনের ভেতর,
এখনও অনেক অনেক পথ বাকি ফিরে আসতে। এই খানে কার্লভাট,এইখানে খয়েরী মাটির জ্যান্ত হরিণের ট্রাফিক জ্যাম।এসব এখন সয়তে হবে আরো কিছুদিন… তারপর গুছিয়ে নেওয়া যাবতীয় তোলপাড় করা নদীপ্রজন্ম, ফিরে এলে মনে হয়,ওইখানেই পাতকুয়ো, ছুঁতে না পারায় জলের কাছে জল হয়ে গেছি!
অবগাহন
খুঁজে পাবেনা জেনেও খুঁজতে গিয়ে
যে যার মতো করে নেমে যায়
স্টেশনে স্টেশনে।
ভেবেছো কখনও গন্তব্য ফুরোলে
পৃথিবীর সকল গতিই স্থির হয়ে যায়,
করতলে।
হাত ছোঁয়া মানা তাই ব্যবধানই সব জেনে
ঢিল ছুড়োনা পুকুর পাড়ে ।
ছায়া ভেঙে গেলে
শ্বাসবন্ধ করে নেমে
যাওয়ায় থাকে ।
Facebook Comments