নিয়াজ আজিজ দ্বীপ-র কবিতা

মাংসরেণু

মাংসে’ও বুঝি ফুল ফোটে—
তা’নাহলে বেল বাজিয়ে যে রিক্সাটা যাচ্ছিল—

কেন গন্ধ ছড়াচ্ছিল?

পারফিউম?
নাকি ঘাম আর মাংসের রেণু ।

ধুর শালা!এই বসন্তে নাকে কেমন যৌবন লেগে আছে ;
ভ্রমর মন
আর চারপাশে আকুতি ভরা রোদ।

দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম বোধের রক্তথোকায়।

চিন্তার কোন ডালের বোটায়
মগজের সচেতন ইন্দ্রিয় ভাঁজে।

এই যে, দেয়াল দেয়া— তোমার আমার আলাদা সংসার;
স্তরে স্তরে কংক্রিটহৃদয়। অবশিষ্ট যৌক্তিক কয়েন নেই পকেটে।

আত্মকেন্দ্রিক শূন্যতা
অথচ স্বপ্নের পাখিরা ডানা নিয়ে ফিরে গেছে মহুয়া বনে।
বাদুড় হয়ে ফিরবে নিশ্চিত!

তবুও আমরা একে অপরকে কামনা করছি প্লেটোনিক ইশারায়।

নিক্রপলিস কাঁচের প্রতিফলন চোখে —

আমাদের অনিশ্চিত ঘুম ভেঙে যায়
কর্পোরেট বিছানায়|

ধানপদ্য

ধান ক্ষেতের ইঁদুর আমি।
ধান ক্ষেতের বিড়াল তুমি।

দুজনেই নাদুস নুদুস ক্ষেত আমাদের বাড়ি।

ধানের রাজ্যে আমি শ্রমিক তুমি শিকারী।

খোলস ছারিয়ে ধান মারিয়ে মহা সুখেই থাকি।

মাঝে মাঝে বাড়তি সুখে তোমার পেটে আঁটি।

তুমি লম্বা ঢেকুর ছাড়ো
আমার বার-বি-কিউ-এর পর|

পোড়া খড়বন

ধানপাতার ও’পারে কাঁটাতার।

চাল ও খই।

বিকেল বয়ে গেলো—
চাতালে সেদ্ধধান;
ধানের গন্ধ
শালিকের দম
ঝুলছে চোখে।

ধানপাতার ভেতরে বন
সবুজ ও সোনালী
পুড়ছে চোখে।

সেই আলো রোদের নখে শালিক।

খড়ের ভঙ্গুর মন।ইস্পাত কলা।

মনের বাহিরে
আগুনের পা’বেয়ে মন;
মনে জ্বলছে মন।

সেই ধোঁয়ামেঘ
ধানপাতার ফুসফুস।

পোড়া পালকের ঘ্রাণ।
খসা মাংসে রোদের লালা।
কংক্রিট হাসি।

মাছের হৃদয়ে নদীশিকার
বরশি ও কল।

শালিকের চোখে পোড়ামাটি।

শুখনো খড়বন।

চিরহরিৎ বৃক্ষের চিৎকার।
পাখিদের আত্মার গান।
ধূসর পেঁচার বনভূমি।

বৃক্ষের কঙ্কাল;
কয়লাকাঠ
হীরক খনি|

Facebook Comments

Posted in: June 2020, POETRY

Tagged as: , ,

Leave a Reply