অনিকেশ দাশগুপ্ত-র কবিতা
চিড়িয়াখানা
তারা তাদের বাতিগুলি নিভিয়ে ফেলছে একে একে,। কেউ কোন কথা বলছে না।
কয়েক ফোঁটা জল শুধু অনন্তকাল ঝরে পড়ছে চিড়িয়াখানায়।…
‘বাতাস কমে আসছে, তাই অনুরোধ শ্বাসক্রিয়া বন্ধ রাখুন আপনারা’ গমগমে
শব্দে খনির অনেক ভেতর থেকে বৃদ্ধটি বলে চলেছে দীর্ঘ এক দশককাল
বাইরে প্রত্যেকে গর্ত খুঁড়ছে
ওরা জন্তু ভালোবেসে ফেলেছে: বিশেষত সহস্র রঙীন ভেড়া
কুড়ুলের কোপটুকুই একটা জীবন আর লক্ষ লক্ষ ব্ল্যাকআউট…
কিছু কিছু মৃত্যুর গন্ধ হয়না তেমন
পরিষ্কার অ্যাশট্রেতে মর্টগেজ সাদা ছাই এবং
সমস্ত পৃথিবীর তঞ্চন যেন ভাসমান
ভূমিতে পা রেখে টলছে
জন্তুরাও এমন অনুভূতি নিয়ে চিলচিৎকার করেছে
টুপির ভেতর থেকে খরগোস : গমের ক্ষেত থেকে কালো ধোঁয়া
মৃত্যুর পূর্বাভাস হতে পারে
প্রাক মৃত্যু, একটা ডাবল সেভিং ক্রীমের চুরিবিদ্যা
সমস্ত রেণু কুড়িয়ে কুড়িয়ে আজ সে কোন গভীর স্বরলিপি মাছিদের দিয়ে গ্যাছে
অনন্ত নিদ্রার ভেতর মাছির ঝাঁক সরিয়ে পশুদের নিরীক্ষণ করছে সে …
সাম্যগান
দেওয়ালের আঁকিবুকি ভরে উঠছে পদচারণায়
বিদেহী চলাফেরা অর্ধশতাব্দী ,
ঈশ্বর আর প্রজাপতি খোদাই করা ঋণ
রেখে রেখে আরো ঈষৎ কুয়াশাবাতির জঠর
তাঁবুর অবকাশ মুছেই এলো এই
শেষ সংকেত রাখা মাত্র, সহস্র দরিয়া শিবে লুন্ঠিত হলো অথবা
ঝিঁঝির চুম্বন মাছেদের হা মুখে জমিয়ে রাখা সম্পদ;
ওহো! এই নিমীলিত নৌকোর ত্রাস ছাড়িয়ে
দানাঘর আমাদের, স্বকীয় হলুদ আমাদের
মোহময়ী তুমি এগিয়ে এলে উন্মুক্ত স্তনে ,খসা বৃন্তে
অপটু চুম্বনে ,ওহ্ ঈশ্বর চরৈবেতি, তোমার লবণ গহন স্তরে
রণপুঞ্জে গৃহস্তম্ভে ছাপোষা লিঙ্গ উঁচিয়ে আরও কত গহীন
প্রপাত এগিয়ে চলা,চিত্রিত করা তোমার গমক
কেননা জর্জরিত আলোয় ভেঙে যাচ্ছে আমার
ভুণো পুত্তলিকা হায় পরোক্ষতা হায় ঋষভ এ কোন্ গীত
এ কোন্ বরানুগমন অথচ উদগীথ…
মায়ের পরিসর
জড়ো করছি উঠোনের বাঁধানো আলোকজাল
গুটি গুটি পায়ে রেলের লাইন আর অবরোহী রোদ
দুই বাগান ,আগলে বসে আছে , মায়াবী পরিবার
কেউ আঁচড় কেটেছে সাধ্যমতো গাছ নামতায়
গল্প লেখা সুইচবোর্ড , যেখানে বুনো এক বিরাম…
উপাসনার চারিধারে আঁকাবাঁকা স্টেয়ারকেস
আমি চাঁদ আর মধ্যাহ্নে অহরহ
যেসব শুভেচ্ছার খসড়া পাঠিয়েছি
তার সিম্ফনি গড়ে উঠছে এ নাব্যে,প্রসবভঙ্গিতে …
কিছুতেই একটা শেষ ট্রেন ধরতে পারিনি
স্বগোতক্তির ওপার কৃষ্ণবর্ণ মূল কুয়াশায়…