অনিন্দিতা ভৌমিক-র কবিতা
শ্রমণ, পিঙ্গলবর্ণ অক্ষর ও শূন্যতা
নীরবে অতিক্রান্ত হয় পথ ; দৃষ্টি গভীর ও তীক্ষ্ণ। যেভাবে কোনও দূরবর্তী দেশ, দূরবর্তী সময় এবং সায়ংকালীন এই চন্দন, অগুরু, কস্তুরী আমাকে ক্রমশ বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে যায়…
গৃহত্যাগ করলে কী হয় ভদ্র?
একটি দীর্ঘ পিপ্পল বৃক্ষের নীচে পদচারণা করছে আমার পূর্ব-ইতিহাস। শব্দ শুনি পতনের। ধূসর রাত্রিতে দেখি লোহিত-কণায় খেলা করে স্তব্ধতা। দৃঢ় অন্ধকার।
নির্বাসন তুমি বুঝতে পার না ভদ্র
বুঝতে পার না যে এই বিষাক্ত চুম্বন আমাকে ঘিরে রাখছে বিপন্নতায়
সতেজ হাওয়ায় – উড়ছে – ঘুরছে – উড়ছে …
অভিশপ্ত, ধূসর, মৃত্যুহীণ
ঈশ্বরের কাছে নিয়ে গেলে তোমাকে দেখাব বিবর্ণ অঙ্গুরীয়
***
সব ছদ্মবেশই প্রতারণার জন্যে নয়। তবুও, আমি ঋণী নিবিড় শূন্যতার কাছে। আমি ঋণী – দূরে, বহুদূরে – নগরীর উপান্তে দীপদন্ড আলোকিত পথে, বিস্ময় ও কামনার কাছে।
এখানে কোনো মৃগয়ালব্ধ মাংস নেই। সন্ন্যাসীর মলিন বেশে আপনি গজিয়ে ওঠে নীবার ধান – মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রাখা কুসুম – নিষ্কলঙ্ক, প্রাচীন আলোর মতো স্পষ্ট।
আদতে আমি চাই শাদা সতেজ দৃষ্টি এবং কিশোরীর অনুভূতি। কিন্তু স্পর্শ জুড়ে কেবলই ছড়িয়ে পড়া সভ্যতার নুন। নেমে আসা ক্লান্তি। দীর্ঘশ্বাস।
ভদ্র, স্বেচ্ছালালিত এই মলিনতার নীচে আমি লালন করেছি রক্তপদ্মসন্নিভ গাত্রবর্ণ। যা রঙিন পাপবোধের মতো আকুলিত হয়। নিশীথ গন্ধে প্রবেশ করে দ্বারে।
অর্থাৎ আদিম অসহায়তা
অর্থাৎ দৃঢ় স্থলিত অন্ধকার
অর্থাৎ অরণ্যের গায়ের গন্ধ
…অস্তিত্বের শাশ্বত হিম