শুভ আঢ্য-র কবিতা
ম্যাড মঙ্ক
৫৫
রাসপুতিন বলছি,
এই কাল, এই বাতাস পবিত্র কাগজের মতো
ঈশ্বর আমায় কফিনের ভেতরে দিয়েছেন
এক সংসার, সেখানে আমি রুটি তৈরী করি,
বরফের দেওয়ালে পিঠ দিয়ে মদ খাই… এ ফ্লোরা-ফনা
পবিত্র, তাদের স্মৃতি বলে কিছু নেই, ধর্ম বলে কিছু নেই
তাদের অশিক্ষা নেই, এই আকাশের ভেতর কোনো
সিল্যুয়েট নিয়ে ভাবার অবকাশও নেই
যীশু মহান, তিনি আমার চোখের ভেতর মানুষ দিয়েছেন
তিনি এ কফিনের ভেতর ভরে দিয়েছেন গান
আমি শুধু এ সুরের ভেতর কটা শব্দ গেঁথে যেতে চাই
আমি শুধু বাগানের ভেতর কটা পেরেক
আমি শুধু টেবিলের ওপর কটা বুলেট
আমি শুধু তোমাদের কোষের ওপর কটা জীবাণু
তোমরা পবিত্র, তোমাদের কামও তাই
আমি শুধু কামের ভেতর একটানা দাঁত রাখা কামড়
যে তোমাদের মাংসকে অস্বীকার করেনি কখনও
কারণ, সেই মাংসও পবিত্র
৫৬
রাসপুতিন বলছি,
স্মৃতির অতীতেই আমার ঘর… আমার দুর্ধর্ষ অতীত,
লম্পট জীবন, রহস্যজনক ঘোলাটে চাহনির মধ্যে
কোনো মাছ’কে ছেড়ে দিও না তোমরা, আমি প্রকৃতই
হন্তারক, আমার চোখের ভেতর যে সরোবর তা তোমাদের
সঠিক জীবনের অন্তরায়, সুতরাং আমাকে কেন দেবে
দাঁড়িয়ে থাকতে তোমরা? কেন দেবে?
এই মায়া পোড়ালো কে? প্রাণের ভেতর
তারই মৃত্যুকে দেখালো কে? তোমরা মায়ার
ভেতর বাঁচো, স্মৃতির ভেতর যে মাছ
তা’কে তোমাদের চামড়া খেতে দাও, তোমরা
সময় খেয়ে বাঁচো, আমার সবটাই অসময়…
এ খুনের মধ্যে, এ সায়ানাইডের মধ্যে
এ ব্যারেলের মধ্যে আমাকে চলে যেতে দাও
আমি সেই মৃত খরগোসের সাথে কথা বলি
সে বোকা খরগোসের সাথে বলি কথা
আমার ভেতর উফফ, আর কোনো আলো
জ্বালিও না, আমি আমার আবর্তেই কথা বলি
৫৭
রাসপুতিন বলছি,
এই অনুনয় তোমাদের ভেতর পুঁতে যাবো, এই দুঃখ
তোমাদের টবের মধ্যে একদিন ঠিক এক গাছ হয়ে
ফাটিয়ে ফেলবে তোমাদের মাটি, শুধু আমি উঠে
দাঁড়াতে পারবো না, কেবলই ছবির ভেতর থেকে
বলে উঠতে পারবো না – আমার কোনো ছবি নেই
আমার কোনো শব্দ নেই
আমার কোনো স্বর নেই
আমার কোনো রহস্য নেই
তবু… তোমরা আমাকে উদঘাটন করেছো,
তবু তোমরা আমাকে মোমের আলোয়
যীশুর পুতুলের পর বসিয়েছ, সামনে
উগরে দিয়েছ স্মৃতি, অভিলাষ
তোমাদের অনুনয় আমি পুঁতে যাবো তোমাদেরই ভেতর
উরাল পাহাড়ে, যা কখনও জঙ্গল হয়ে উঠবে
আমি গাছের ভাষা, কাঠবেড়ালির ভাষা, তোমাদের
ভেতর পুঁতে যাবো, যা কোনোদিন খুলে রাখতে
পারবে না তোমাদের গলা থেকে, তোমাদেরও ছবি
থাকবে না কোনো, শুধু নিজেদের বাইরে অপরের ভেতর
নিজেদের কথা শুনে উঠবে, নিজেদের দেখে উঠবে
Posted in: May 2020 - Cover Story, POETRY