সোমনাথ ঘোষাল-র কবিতা
বিকেলের পর
ঘুমন্ত আলোতে চাপ দিয়ে
চলে যাচ্ছে প্রতিটা বিকেল
দাঁত বের করা ঘরবাড়িগুলোর
হাড়মাস বেরিয়ে গেছে কিছুদিন
এইভাবে শবদেহের গায়ে হলুদ
পাখিদের আনাগোনা বেড়েছে
জন্মের উচ্চরণ মনে পড়ে না
গঙ্গার ধারে গেলে
মৃত ব্যক্তির কথা মনে আসে
অবিরাম চাকার মতন
ঘুরতেই থাকে একের পর এক
মাদকের হাসপাতাল
সিগারেট ধরালেই পোড়া গন্ধ
নখ চেটে রাখে
যেন গাছেরাও মৃত্যু সাজিয়ে
আমার অপেক্ষা করছে
তাই বৃষ্টিটাও আজকাল শুকনো থাকার অভিনয় করে
চামড়া
নিজের ছায়ায় পা ঘষলে
মানুষের চামড়া লেগে যায়
জড়তা কান্নার কথায় ডাকে
নিভৃত পোশাকে হানা দেয়
বারোমাসের পেট তার ভেতর
জন্ম নেয় একটা মানচিত্র
পেটের কোনো দেশ নেই
যৌথ খামারে বেড়ে ওঠে
অনন্তকাল যার মুখ ভর্তি
শিশুদের উঁচু নিচু ঢিবি
মাটির তলপেট চেপে
নদীটাও দেহ শূন্য করে
ভেসে আসে হাজারও শূন্য
গাছের শিকড়ে বাঁধা দেয়
মানুষের আজন্ম শূন্যস্থান
তৃতীয় সন্তান
ঈশ্বরের তৃতীয় সন্তান হিসেবে
পাঁচিলের ধারে শ্যাওলা খেয়ে
যে প্রাণীটার মুখে বিচিত্র মানুষের অবয়ব বসে আছে
তাকে আমি বহুকাল চিনি
হাত পা বেঁধে চালান করা
নাগরিক আস্তাকুঁড়ে রাত
নিছক গল্প হয়ে গেলে
যারা দেহ সনাক্ত করতে আসে
তাদের গায়েও সেই
ঈশ্বরের বীর্য লেগে থাকে
তরল আলোছাল সরিয়ে
পাঁচিলের সেই সোঁদা গন্ধে
মুখ ভেঙিয়ে থাকে
সাদাটে ঈশ্বরের লিঙ্গ
তৃতীয় সন্তানের অপেক্ষায়
Posted in: May 2020 - Cover Story, POETRY