নৃত্যশিল্পধারা ও সংকটকাল: কিছু ভাবনা – সোমা দত্ত
নৃত্যশিল্পধারা ও সংকটকাল: কিছু ভাবনা
করোনা অতিমারী নিয়ন্ত্রণে সারা পৃথিবী জুড়ে একটাই অস্ত্র নিয়েছেন সমস্ত দেশের সরকার, লকডাউন ও স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিং (যদিও একে শারীরিক দূরত্ববিধি বলাই শ্রেয় বলে মনে করি)। কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিনের হদিস এখনো দিতে পারেননি গবেষকগণ। সুতরাং ভিড় এড়িয়ে চলা, কোনো জায়গায় বেশি মানুষ সমবেত হওয়া একেবারেই বন্ধ। এ অবস্থা ঠিক কতদিন বা মাস চলবে তা কেউ বলতে পারছেননা আপাতত। সকল শিল্পের মতই নৃত্যশিল্পেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ, ক্লাস বন্ধ মানে রোজগার বন্ধ। কতিপয় শিল্পী যারা বড় কোনো স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত তাদের ছাড়া সকলেরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
সল্টলেক অবস্থিত প্রতিষ্ঠিত নৃত্য প্রতিষ্ঠান ডান্সার্স গিল্ডের সেক্রেটারি শ্রীমতি পার্বতী গুপ্ত রীতিমত আশঙ্কিত নৃত্যশিল্পী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে। যারা নাচের টিউশন করেই ভরণপোষণ নির্বাহ করেন, বিভিন্ন দলের সাথে শিল্পী হিসেবে যুক্ত, কিভাবে চলবে তাদের আগামী দিনগুলোয়? সমস্ত প্রতিষ্ঠান হঠাৎ করে বন্ধ করতে হয়েছে লকডাউনে। সে প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে? খুললে কতসংখ্যক ছাত্রছাত্রী ফেরত আসবে? তারা এই কয়মাসের বেতন দেবেন কিনা? না দিলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন প্রতিষ্ঠান কিভাবে দেবেন? এমন নানান অনিশ্চয়তার কথা শুনলাম পার্বতীদির কাছে। যারা সরকারী সহায়তা পেতেন তাদের এবছরের টাকা আসেনি, এমনকি কেন্দ্রিয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও এ সম্পর্কে কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছেনা। পার্বতীদি বলছেন নিজেদের সংস্থার জমানো টাকা থেকে এই কয়েকমাসের অর্থনৈতিক ভার বহন করতে পেরেছেন কিন্তু আর কত মাস পারবেন জানেননা।
“মমতা শংকর ডান্স কোম্পানি”র কর্ণধার শ্রী চন্দ্রোদয় ঘোষও বলছেন, যে তারা কর্পোরেট সংস্থার মত ছাঁটাই করার পক্ষপাতী একেবারেই নন। তার কোম্পানির সাথে যুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকা এবং অন্যান্য কর্মীদের দায়িত্ব অনেকখানি তাদের কোম্পানির। তাই পূর্ণ বেতন না দিতে পারলেও আংশিকভাবে তাদের সকলকে তা দিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও দিতে ইচ্ছুক। সকলকে নিয়েই চলতে বদ্ধ পরিকর তিনি। তিনি বিশ্বাস করেন ব্যক্তির থেকে গোষ্ঠীর জোর অনেক বেশি। সবাই মিলেই এই কঠিন সময়ে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকার কথা বললেন। শ্রী চন্দ্রোদয় ঘোষের কথায় আমফান তান্ডব প্রসঙ্গও এলো অবধারিতভাবেই। কারণ এখন আর শুধু করোনা বা লকডাউন নয় এই প্রাকৃতিক ঝঞ্ঝার দাপটে বাংলা একেবারেই বিপর্যস্ত। এ প্রসঙ্গে তিনি বার বারই বলেছেন মানুষের মাত্রাতিরিক্ত লোভের কথা, ভোগবাদের কথা। প্রয়োজন নয় বিলাসিতাতে অভ্যস্ত মানুষ এবারে একটু সংযত হোক এমনটাই আবেদন করেছেন তিনি। আমফান ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে এখন ছুটে যাচ্ছে শহুরে মানুষ কিন্তু এর আগেও কি ওরা খুব ভালো ছিলেন? আমরা কি ভেবেছি তাদের কথা কখনো? আমাদের কাছে সময় ছিলো ভাবার? সারাদিন ছুটে চলছিলাম শুধু নিজেদের চাহিদা পূরণে, ব্যক্তিগত লাভ লোকসানের চেয়ে বেশি কিছুই ভেবে দেখিনি। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে এখন, এমনটাই মনে করছেন তিনি। এই ত্রিমুখী ঝঞ্ঝা মোকাবিলার কোনো নির্দিষ্ট ফর্মুলা নেই বলেই মনে করেণ তিনি। তবে সবাই মিলে প্রকৃতি, এবং আশেপাশের মানুষ, এই নিয়ে আমাদের যে পরিবেশ তাকে সুস্থ রাখার লড়াইটা করতেই হবে। লড়াইটা ব্যক্তিমানুষের, শিল্পী মানুষের যেমন তেমনি আপামর দেশের মানুষেরও।
অর্থনীতি, যার হাল আগেই খারাপ হয়েছিল এই বিপর্যয়ে তা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ খোঁজাটা ভীষণ জরুরী এবং বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে সে সমন্ধে সুরাহার পথ কিছু প্রত্যাশা করি আমরা। আশাকরি দেশের সরকারও সেকথা বিবেচনা করবেন। এমনটা মনে করছেন বিখ্যাত মোহিনীয়াট্টম নৃত্যশিল্পী শ্রীমতি পল্লবী কৃষ্ণান। পল্লবী কৃষ্ণান যেমন নৃত্যশিল্পীদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত তেমনি ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন সামগ্রিকভাবে দেশের মেয়েদের ওপর গার্হস্থ্য হিংসা বেড়ে যাওয়া নিয়ে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে গৃহস্থালি সমস্ত কাজের দায়িত্ব মেয়েদের, পুরুষ সে কাজে হাত লাগাবেনা। লকডাউনে গৃহকর্মসহায়িকা নেই, বাড়ির মেয়েদের উপর সমস্ত কাজের বোঝা চেপেছে। কেরালা নিবাসী শিল্পী বলছেন যে অবস্থা এতটাই গুরুতর যে গৃহস্থালির কাজ পরিবারের সবাইকে ভাগ করে করতে আবেদন জানাচ্ছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ, ক্লাস বন্ধ, বিদেশযাত্রা বন্ধ সবমিলিয়ে ভীষণ অসুবিধায় পড়েছেন সমস্ত নৃত্যশিল্পীরা। নিজের অসুবিধার কথা বলতে গিয়েই বারবার তিনি চলে যান অন্য প্রসঙ্গে। অনিশ্চয়তা সমস্ত ক্ষেত্রেই রয়েছে, প্রচুর মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন, শ্রমিকরা ফিরে যাচ্ছেন কর্মক্ষেত্র থেকে, কি হবে এদের সবার ভবিষ্যৎ? কিভাবে বাঁচবেন তারা? এর মধ্যেই লুঠতরাজের খবর অল্প হলেও আসতে শুরু করেছে। “যারা করছে তারা না খেতে পেয়ে করছে, কি করবে না হলে? খেতে তো হবে বাঁচতে গেলে।” এদের সহায়তায় নাগরিক উদ্যোগ ভালো কিন্তু তা যে একেবারেই কোনো সমাধান নয় তাও মনে করিয়ে দিলেন পল্লবীদি।
ইতিমধ্যেই নৃত্যশিল্পী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ অনলাইন ক্লাস ও অনুষ্ঠানের একটা বিকল্প খুঁজে নিয়েছেন, যাতে অনেকটাই আশাবাদী পল্লবীদি আবার অনলাইনে শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায় যা থেকে শিল্পের বিড়ম্বনা বাড়তে পারে বলেও মনে করেন চন্দ্রোদয় ঘোষ।
যাঁদের সাথে কথা বললাম তাঁরা সকলেই প্রতিষ্ঠিত এবং সমাজের উচ্চস্তরের মানুষ। যে ছবিটা উঠে এলো তা নিশ্চিতভাবেই শহুরে জীবনের জীবিকার চিত্র। আবার এও সত্যি প্রত্যেকেই চিন্তিত দেশের অর্থনীতি নিয়েও, কেউ যে আমরা একা বাঁচতে পারবনা তা বেশ জোরালো ভাবেই উঠে এসেছে সবার কথায়। “ধনী আরো ধনী হচ্ছে, গরীব আরো গরীব” এই রকম একটা অর্থনৈতিক পরিবেশ যে দেশের সামাজিক তথা সার্বিক উন্নতির পক্ষে ক্ষতিকর সে বিষয়েও সবাই একমত হলেন।
নৃত্যশিল্পক্ষেত্রে শহর ও মফস্বলের জীবন জীবিকা যে তারে বাঁধা ছিলো তা জোড় ধাক্কা খেয়েছে এই ত্রহ্যস্পর্শে। আবার এর আগেও রাস্তা যে খুব মসৃণ ছিল তাও নয়। যত জন নৃত্যশিল্পী আছেন আজকের কলকাতা শহরে সম্ভবত ততজন দর্শক নেই। শাস্ত্রীয় নৃত্যের দর্শক আরো কম। যত নৃত্যউৎসব হয় তাতে সাকুল্যে কতজন দর্শক থাকেন তা হাতের কড় গুনে বলা যাবে। দর্শক আসেন মূলত আমন্ত্রিত হয়ে অথবা শিল্পীদের ব্যক্তিগত অনুরোধে। টিকিট কেটে নাচ দেখার চল বোধহয় বহু আগেই হারিয়েছে। কলকাতায় কেউ উৎসব আয়োজন করে যদি উত্তরবঙ্গ বা অন্য শহর থেকে কোনো শিল্পীকে নিয়ে আসেন, তাহলে কোনো এক অলিখিত নিয়মানুসারে উত্তরবঙ্গের উৎসবে কলকাতার সেই শিল্পীই ডাক পেয়ে থাকেন। আবার বিনা পারিশ্রমিকে আমন্ত্রণ করাও এক রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এযাবৎ কালে। সুতরাং দারুণ সুসময় চলছিল এমনটা কেউই দাবী করতে পারবেননা। যদিও দক্ষিণ ভারতে চিত্র অন্যরকম। সেখানে হলভর্তি নাচের দর্শক ছিলো। সে সময় আগামী একবছরেও ফিরবে কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কলকাতা সহ পশ্চিমবাংলায় শিল্পের সম্মান থাকলেও নাচ ভীষণ অর্থকরী তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবেনা, বেসরকারি চ্যানেলে নাচের রিয়ালিটি শো আলোচনার বাইরেই রাখছি। তাই সংকট ছিলোই যা আরো গভীর হল বলা যায়।
নাচ বলতে যদি আমরা শুধু শহুরে পরিসরের নৃত্যচর্চা বুঝি তাহলে মস্ত বড় ভুল করব। মূলবাসী ও গ্রামীন সমাজে বিপুল বড় পরিসর জুড়েই আছে নাচ। শুধু বাংলার কথা ধরলেই সাঁনতালি, ঝুমুর, রায়বেঁশে, ছৌ, ঢালি, পাইক আরো কত নাচের কথা আসবে। সেসব তাদের জীবনের সাথে, যাপনের সাথে জুড়েই ছিল সভ্যতার নানান পর্যায়ে। বাউল, যেমন শুধু গান বা নাচ বলে তার কোনো ব্যাখ্যাই করা চলেনা। বাউল একটা দর্শন, যা তাদের যাপনকে নির্দেশ করে। যাঁরা গ্রাম জীবনে ছৌ, ঝুমুর, রায়বেঁশে নৃত্যচর্চা করেন বছরের বেশিরভাগই চাষ, ১০০ দিনের কাজ বা অন্য কোনো কাজে যুক্ত থাকেন। লোক উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে চলে তাদের এই নৃত্য বা নাট্য যাপন। যাপন বলছি এই কারণেই যে এখনো এ তাদের একান্ত গোষ্ঠীগত ধর্মবিশ্বাস বা জাদু বিশ্বাসের সাথে অনেকাংশে যুক্ত। শিক্ষিত শহুরে মানুষ একে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দিতে পারেন কিন্তু মানব সভ্যতার অতি প্রাচীন এই জাদুবিদ্যা ও বিশ্বাসই যে নাট্য ও নৃত্যের উদ্ভবের কেন্দ্র তা অস্বীকার করার কোনো অবকাশই নেই। নাচ তাদের প্রাণের জিনিষ, রোজগারের পথ নয়। প্রত্যন্ত এলাকা যেখানে ইলেক্ট্রিসিটি ও মোবাইল কালচার এখনো দিবাস্বপ্ন সেখানে তাদের একমাত্র বিনোদন বংশ পরম্পরায় বা গোষ্ঠী পরম্পরায় বয়ে চলা এই নৃত্য ও নাট্য। তবে যেখানে শহুরে সভ্যতার আঁচ গিয়ে পৌঁছেছে সেখানে নবীন প্রজন্ম অনেকটাই সরে এসেছে তাদের নিজস্বতা থেকে। বরং টিকটক ভিডিওতে হিন্দী গানের সাথে নাচ করে নজরে আসতে চাইছে, আধুনিক হতে চাইছে এই প্রজন্ম। ওলাইচন্ডী বা মনসা পূজোয় সন্ধ্যে থেকে রাত ডিজে আর উদ্দাম নৃত্য ওদের আধুনিকতার মাপকাঠি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আবার গ্রামের বেসরকারি বিদ্যালয়ে মূলবাসী শিশুদের দিয়ে মহিষাসুর মর্দিনী অথবা রবীন্দ্রনাথের গানের সাথে নাচ শেখানো একইরকম চাপিয়ে দেওয়া সংস্কৃতি, যার সাথে ওদের নিজেদের যাপনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে কি শিল্প সেই প্রাচীন বিশ্বাসের জায়গাতেই পড়ে থাকবে? জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চার কোনো প্রভাব পড়বেনা শিল্পে? শিল্পের মানোন্নয়নে সূক্ষতার প্রয়োজন অবশ্যই আছে কিন্তু তা কখনোই উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে হয়না। জীবনে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা না করলে শিল্প বা সংস্কৃতিতে তার প্রতিফলন ঘটবে না। আমাদের শিক্ষা ও সংস্কারের প্রতিফলন পড়ে শিল্পে সংস্কৃতিতে।
সাংস্কৃতিক সংকট যা আগেই এসেছে এখন জীবন জীবিকার সংকট তাকে আরো ঘনীভূত করবে সন্দেহ নেই। এবার এই সংকট গ্রাম বা শহর বেছে আসেনি, একসাথে শহর এবং গ্রামকে ঘিরে ধরেছে। জীবন ও জীবিকার সংকট কমবেশি সর্বত্র। এবার কি লড়াইটা একসাথে হবে? গ্রাম বাদ দিলে শহর কি কোনোদিন বাঁচবে? চাষি, ফসলের সঠিক মূল্য না পেলে পেশা বদলে নেবেন সে তো স্বাভাবিক। চাষি পেশা বদলালে মানুষ খাবে কি? জেলে, মজুর শ্রমিক সবাই যদি তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য না পান তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটবে না। যাপনের মান না বদলালে শিক্ষা, শিল্প,সংস্কৃতির মানোন্নয়ন সম্ভব হয় কি? এবার না ভাবলে অনেক দেরী হয়ে যাবে।
এই লকডাউনের মধ্যেই একদিন ভার্চুয়াল আড্ডা চলছিল বিখ্যাত নাট্য নির্দেশক শ্রী দেবেশ চট্টোপাধ্যায় এবং নাট্যকার, নির্দেশক, লেখক শ্রী শুদ্ধসত্ব ঘোষের সাথে। আরো অনেক গুণী মানুষ ছিলেন সাথে। আলোচনার বিষয় ছিল “রক্তকরবী” নাটক এবং তার উপস্থাপনা। বাংলা ১৩৩০ সনে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ এই নাটক, দেখিয়েছিলেন তাঁর দেশ সময়ের নতুন উদ্ভুত সংকটকে। রাষ্ট্রের কাছে শ্রমিক শুধুই নম্বর, তার বেশি কিছু নয়। আজ এই সংকট কত ভয়ংকর হয়ে দেখা দিয়েছে। নাট্য ব্যক্তিত্ত্বরা ভাবছেন এখন এই সময়ে দাঁড়িয়ে কেমনভাবে করা যাবে এই নাটক, অথবা অন্যকোনো নাটক যাতে দেশ ও সময়ের দাবীকে তুলে ধরা যাবে। নৃত্য একসময় ছিল নাট্যেরই অঙ্গ, পরে তা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মানুষের জীবন ও যাপন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো শিল্পও তার অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখতে পারেনা।গন্ডীটা ছোট হতে থাকে ক্রমশ।
ভয়ংকর সংকটের সময়ে, উত্তপ্ত সময়ই জন্ম দিয়েছে শিল্প সাহিত্যের না না ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সব সৃষ্টি। সংকটকালেই নতুন পথের সন্ধান করে মানুষ, শিল্পী সাহিত্যিক। জীবন জীবিকার লড়াই মানুষের শিল্প ও সংস্কৃতিকে নতুন দিকনির্দেশ দেয়। অবশ্যই তা কোনো দৈব্যস্পর্শে ঘটেনা বরং সচেতন মানুষের আন্তরিক প্রয়াস রূপ পায় শিল্পের নতুনতর ধারায়। বিশ্বজোড়া এই সংকটে বেঁচে থাকার লড়াই আমাদের শিল্প সংস্কৃতিকে নতুন কোনো দিকে চালনা করে কিনা সেটাই এখন দেখার।
(সাক্ষাৎকার দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ শ্রীমতি পার্বতী গুপ্ত, শ্রী চন্দ্রোদয় ঘোষ এবং শ্রীমতি পল্লবী কৃষ্ণান মহাশয়াকে)
চমৎকার বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদনে সোমা দত্ত। খুব ভালো লাগলো ।