শংকর লাহিড়ী-র কবিতা
অনুপস্থিতের পাশে বসে আছি
অবিরাম বৃষ্টি পড়ছে
নতুন অঙ্কুরের ওপর, কংকাল আর ফসিলের ওপর
প্রাচীন কাঠের ওপরে ঘন হয়ে উঠেছে সবুজ
উল্কাপিন্ড, জেলিফিশ, ছত্রাক
এখন বাতিদান, এখন অক্ষরমালা।
অনুপস্থিতের পাশে বসে আছি
কথারা ঘুমিয়ে আছে
ঘুমিয়ে আছে আপামর
এইসব যতি চিহ্ন মনে রাখতে হবে
মনে রাখতে হবে সব অবস্থান ও গতিবেগ
মহাকাশের গভীরে কোথাও শাঁখ বাজছে
বাজছে, অথচ কেউ শুনতে পাচ্ছে না।
মুনিয়া পাখির খাঁচা
জলস্রোত নেমে আসছে চিমনি বেয়ে
উঠে আসছে ভারী জুতো, সিঁদুর কৌটো
তামাক পাতার গন্ধ, প্রাচীন আধুলি
চিমনির গা বেয়ে উঠে যাচ্ছে
সারি সারি লাল পিঁপড়ে, গামবুট
বেলচা, কোদাল, গ্যাসমাস্ক
মুনিয়া পাখির খাঁচা
একটা সুর পেঁচিয়ে ধরেছে চিমনিকে
লাল ডোরাকাটা অনিচ্ছুক চিমনি
প্রবল ঝড়ে কেঁপে উঠছে
হিম চীৎকৃত স্মৃতিভ্রষ্ট
উন্মাদিনী এক
জলস্রোত এমনভাবে মুছে দিচ্ছে তার গল্পগুলো
তাকে আর সুর দিয়েও ডেকে আনা যাবে না
বলা যাবে না, এখানে তোমার পূর্বজরা ছিলেন ;
এই সেই গেরামথান, ওইপাশে সমাধি
যে তোমাকে জন্ম দিয়েছিল।
তম্বুরা বাজছে
একটা সম্পূর্ণকে লেখা যাচ্ছে না কিছুতেই
মনে হচ্ছে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছি
কোনও নতুন কথা নেই যা বলতে পারি তোমায়
তুমি নেই
পরিচিত কোনও শত্রু নেই রণাঙ্গনে
কুকুর ডাকছে মেঘ ডাকছে
কেউ ঘরে ফিরতে ডাকছে আমায়
কোথাও একটা তম্বুরা বাজছে অগোচরে
নীল কাগজ
বিষণ্ণ প্রাচীন কাঠ
কেউ বলুক আমার ঘরের ঠিকানা
যারা বিপ্লবে বিশ্বাস করেছিল
যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিল
আর যারা সম্পূর্ণ অবিশ্বাসী ।
Posted in: May 2020 - Cover Story, POETRY