সার্থক রায় চৌধুরী-র কবিতা
প্রবাহ
এই যে সাইকেলের টায়ারে লেগে ফিরে আসা ক্যামবিসের বল ঝনঝন করে ভেঙে দিলো মুখুজ্জে বাড়ির কাচ আর গড়াতে গড়াতে খুঁজতে থাকলো পলাতক প্লেয়ারদের,.. তার বিপন্নতা বিষয়ে তুমি ভাবতে শুরু করা মাত্র সে ফেটে পড়লো হাসিতে,.. বুড়ো ভখিরিও অপমানে তৎক্ষণাৎ সরিয়ে নিল বাড়িয়ে রাখা হাত.. দশ টাকার কয়েন ঝরে পড়লো রাস্তায়,..বাচ্চারা শুরু করলো মারপিট, রক্তারক্তি, গন্ধে গন্ধে গর্জে উঠলো ভোলা, ফুটপাথের মা মাসি, চিল নেমে আসছে ভেবে কাকেরা জুড়ে দিলো চিৎকার…
গাড়ি গুলো কোথায় যায়?- এই চিন্তা সর্বাগ্রে আচ্ছন্ন করলো ফকির কে,…
গাছ তলায় শুয়ে শুয়ে সে মেঘ গুনছিলো আর চিৎকার করছিল ‘ছিঁড়ে ছিঁড়ে ভাসা পাগলা ছিঁড়ে ছিঁড়ে ভাসা’,…
বিরক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার,..
ফোন ধরতে না পারার দুঃখে
ক্লান্ত সেলস ম্যান,..
আমি,..
উদভ্রান্ত দু’পা দেখে জানতে চাইছিলাম-
পায়েরা কোথায় যায়?…
ফকির বলতে পারবে!…
দু টুকরো
ক) উচ্চারণ
পাগলের অভিনয় করতে করতে
বুঝতে পারলাম-বাকিরা উন্মাদ..
উন্মাদের অভিনয় করতে করতে
নেশা হয়ে গ্যালো,…
নেশা,..নৈশলোক,..নিশ্ছিদ্র,.. ৯…
দশ-অবতার সব,..কেউ মানুষ নয়!..
খ) সন্দেহ
যদি নতজানু হতে শেখো!..
যদি লিখে ফ্যালো- ভালোবাসা!..
যদি বুঝে থাকো সব আস্বাদ-
একই বিষাদের মেলামেশা!…
যদি চশমার নীচে বিক্ষোভ-
সংযত, স্থির, নিশ্চল…
যদি বুঝতে পারতে নির্দেশ-
“আঙুলের মানে পিস্তল।”
কবি
‘কিছুই পাব না শুধু ছুঁয়ে যাবো অরূপ সম্ভার’,- গায়ের ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে রবিন বলে উঠল- ‘বাল,…আসলে খনিশ্রমিকদের যে অংশ আলোকিত তারা অন্ধকার বেশি চেনে’… ফলে
আমিও নিশ্চুপ.. আর তখনই- ‘গুরু তো রবীন্দ্রনাথ’- বলে যে ঝাঁপিয়ে পড়লো পায়ে,
সে তিন মাস আগে মরে গ্যাছে…
সমস্যাটা সেখানে নয়-…
যদি বলি- প্রত্যেকটা পাথর আমাদের
ঘেন্না করে..
যদি বলি- প্রত্যেকটা ট্রলিম্যান…
যদি বলে দিই- মাটি… হ্যাঁ হ্যাঁ মাটি চায় না
এই স্পর্ধিত অধিকার…
এ গ্রহের অনেক গভীরে,
সমস্ত কিছুর থেকে দূরে,..
এক মায়াবী আলোয় তারা জানে-
যারা খুঁড়ে খুঁড়ে তুলে আনে অমূল্য সোনা, হিরে, পৃথিবীর অব্যক্ত অন্ধকার…
তাদের নামে কোন রাস্তা,..
কোন গানও কেউ বাঁধেনি কোনদিন।..
Posted in: May 2020 - Cover Story, POETRY