প্রণব চক্রবর্তী-র কবিতা
বাংলা কবিতার আকাশ
স্তব্ধতাও মঙ্গলময়
কখনও কখনও
পটুয়া পাঁচালীর এই রাঢ় বঙ্গে
ধুলিধূসর বাঙলার
খাবারের থালা
ভেজা ভাত লঙ্কা পেঁয়াজ
বাঙলাই নির্বিবাদ
হেঁটে যায় মাঠ মাঠ
জলে ও খরায়
কাদা আর আল বেয়ে
উঠে আসা কেঊটে গোখরো
লাঙলের ফাল জানে
ফালাফালা খোদাই কৌশল
কৃষিজ মাটিই
প্রকৃত সাম্যবাদী
সে শুধু কর্ষণ চায়
উর্বর গর্ভ নিংড়ে
তুমুল ভরাতে চায়
শ্রমপুষ্ট কঠিন করতল
আর যা কিছু, ধরো—
রাম মোল্লা, রহিম পূজারী
ক্ষ্যাপাটে ক্ষমতালোভী
কুমীরের চোখে
গ্লিসারিন ছাপ্পা যে জল
অশান্ত চাঁদোয়ার নীচে
তিন প্রহর কেত্তন
ফেটী ও ফতোয়া
হদিশ থাকে না তার
থেকে যায় ভোর ভোর
প্রতিটি সকালের জন্য প্রস্তুত
প্রস্তাবিত শ্রম বিনিয়োগ
মাটি ও মানুষের জন্য
মুনাফাহীন ইশতেহার
রঙিন, অমোঘ !
হ্যাণ্ড স্যানিটাইজেশন্
নেহাতই দ্বন্দ্ব থেকে উঠে এসে
হাত মুখ ধুয়ে নেয়া গেলো
এখন অসংখ্য কাজ
স্তরে স্তরে নক্ষত্র ভেঙে যেতে হবে
স্তরে স্তরে নক্ষত্র বয়ন শেষে
সাজাতে হবে সঠিক সরণি
যেহেতু এখান কোনও সেতু নেই
যেহেতু যে কোনও দিকের পাশে বিরাট গর্ত
থেকে যেতে হবে কোলাহলহীন
দান ও দয়ায় যে জীবন সার্থকতা খোঁজে
তেমন অন্তরায় জমে জমে পাহাড়
এখন হাত ধুয়ে পুনর্বার হাতের ময়লা
কোথা থেকে এলো ভাবাটা জরুরী নয়
জরুরী স্তরে স্তরে ভাঙার জন্যই
আমাদের কিছু রসদ প্রয়োজন কারণ
স্তরে স্তরে পুনর্নির্মাণকেই
আমরা পৌরুষ নামে পরখ করেছি
যা ল্যালাভোলা জীবনকেই
মহিমান্বিত করে দিবস রজনী !
হ্যাঁ, আমি বায়াসড
আপনারা যখন বাতাসে দাঁড়িয়ে
কালপুরুষের ঠ্যাং ছোঁবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে
তিন চারটে বিয়ার টিন ফাঁক করে
আঁধারের ওড়না ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ছুটছিলেন পুতলী বাঈয়ের ছমক গমকে–
আমি এই ছাপড়ার কিনারে দাঁড়িয়ে
পবিত্র এক ক্লান্তির কাছে
শেষবার প্রার্থনা রাখি
গতকাল ছিলাম মানেই
আগামীকালও থেকে যাব
ততটা জানোয়ার মাথা এ জন্ম দেয়নি
যেহেতু দেয়নি তাই
এক কাপ চায়ের ভাঁড়েও
সযত্নে ভাসতে দেখি
দেশহীন মানচিত্র যার
রেখাগুলো খেয়ে যাচ্ছে কুৎসিত চোষক !
Posted in: May 2020 - Cover Story, POETRY