মেঘ অদিতি-র কবিতা

নিষাদ

সান্ধ্য আসরে তারপর
ঢুকে পড়ে জল
কথার ভেতর স্রোত
শব্দের ভেতর ঢেউ
চোখের আয়নায় নামে জলের ফোয়ারা
আর ছোট কাগজের নৌকায়
ভেসে যায় আমাদের এতদিনকার বন্ধুত্ব
কৃষ্ণডানায় রাত মেলছে তখন শোকের পোশাক
পাখাযুক্ত ভয়ংকর এক সাপের ভয়ে
আমরাও এবার ঢুকে পড়ব বিষয়ান্তরে

পেন্সিলে একটা আঁচড় পড়ে কি পড়ে না-
আনাজবাগান থেকে ধেয়ে আসে রোষানল
উপড়ে পড়া এক কৃষ্ণচূড়ার ডালে
নিজেদের শক্ত করে বাঁধতে গিয়ে দেখি
বিপবিপ শব্দ তুলে নিভে গেল এইমাত্র টগর ফুল

সাইকি ও কাঞ্চনমালা

পাহাড়শীর্ষ বেয়ে নেমেছে মোমের নরম ঝর্ণা। সে আলোয় সাইকি অপলক চেয়ে আছে ঘুমন্ত পুরুষমুখে। হাতে তার আলো ঝিকমিক, রুপালি কারুকাজে ডাগরডোগর এক ছুরি।

পুরুষটি তখন স্বপ্ন দেখছে- অবরুদ্ধ শহর জুড়ে কীভাবে গুমরে বেড়াচ্ছে কাঞ্চনমালার কান্না। সামান্য ছটফট করে পাশ ফিরতেই জল বাড়ল আরো। ঘুমসাগর পেরিয়ে সে ডাক পাঠাল, কাঞ্চন.. কাঞ্চন..

কাঞ্চনমালা কেঁদেই চলেছে..

সে কান্নায় ভেসে যাচ্ছে হাতে ধরা ছুরি, বিছানা-বালিশ, শূন্য সুরাপাত্র

এমনকি সাইকিও…

খরহর প্রিয়া

কেউ জানেন, পড়ে থাকা এইসব অলঙ্কার ঝুটো কিনা?
টুকরো টুকরো মৃত সিগনাল উড়ে চলেছে কোথায়?
ভাঙা খিলানের গায়ে পাথরগুলোই অত জ্বলছে কেন?
অন্ধকারে ওঁৎ পেতে আছে শিকারী বাঘের চোখ..

এ কথায় মগডালে উবু হয়ে থাকা শরীরের হাত দু’টো
হাততালির ভঙিতে শূন্যে দোল খায়
বিসমিল্লাহ খানের পাগলা সানাইয়ে তখন
বাজছে খরহর প্রিয়া

Facebook Comments

Leave a Reply