জাতিস্মর-এর কবিতা

১.

একটা ঘুমন্ত শরীর পড়ে ফেলতে পারছি
এদিকে বিস্ময় নিয়ে
ভোর হচ্ছে
আমি লিখে রাখতে
পারছি তার মধ্যে জেগে ওঠা পাহাড়

২.

আমার অন্ধত্ব কেটে ফেলতে পারে
এমন তরবারি খুঁজে চলেছি ঘুমের মধ্যে
এ আমার সাবলীল যৌনতা
যার পাশে নদীর জল কুঁকড়ে ওঠে

৩.

ব্লেডের মিনতি শুনতে শুনতে
ক্লান্ত হয়ে পড়ছে হাত

যে উন্মত্ত জলরাশি ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে আসছি
দিনে দিনে
তার কাছে প্রাণভিক্ষা করি চলো

৪.

নিয়তিকে দেখতে পাচ্ছি
সে যেন কোনো গভীর কুয়ো থেকে
ভেসে উঠছে দড়ি বালতিসহ
আমি আরও ডুবে যাচ্ছি তার ঠোঁটে
তার মাংসে, মজ্জায়…

৫.

আমাকে ক্রমাগত খেয়ে ফেলছে ভয়
আমার মাথার পাশে
জেগে উঠছে ঘাতক কুঠার
মাথার মধ্যে ভয়ার্ত হরিণ
হাতের শিরায় বয়ে যাচ্ছে বিক্ষুব্ধ জনস্রোত

আমি হারিয়ে ফেলছি আমার অবয়ব
সাহসের মাটি

৬.

চোখের তলায় এক
অনন্ত আকাশ অনুভব করছি
অনন্ত পাখির গান
তাদের ওড়াউড়ির বিকেল টের পাচ্ছি

এও এক হত্যাদৃশ্য-
যার পর্দা সরিয়ে
রক্ত মাখতে চাইছে না কেউ

৭.

কিছু বিপরীতধর্মী দৃশ্য
সাজিয়ে একটা অরণ্য আবিষ্কার করেছি
সেখানে প্রতিটা পশু জড়বৎ
প্রতিটা গাছ হাড়যুক্ত, মাংসল
প্রতিটা রক্ত অনুবাদক

ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি
খুনের চিত্রনাট্যে আমার মত সাবলীল কেউ নয়

৮.

মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার দিন
আমি জেনে ফেলেছি ব্রহ্মযোনির অন্ধকার

৯.

অনাবশ্যক কিছু শব্দের
প্রাচীর গড়ে উঠছে সামনে
আমি তার উপর উঠে বসে শুনতে পাই
গতরাতে বিছানাজুড়ে জেগে ওঠা ঘোড়াগুলির আর্তনাদ

Facebook Comments

3 thoughts on “জাতিস্মর-এর কবিতা Leave a comment

  1. কয়েকটি লেখা তো খুবই ভাল লাগল। ভালোবাসা নিও।

Leave a Reply