ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী-র কবিতা

সন্ধ্যেসিরিজ

পাতার ভারে মুচমুচে শব্দ ওঠে শরীর থেকে
যেখানে পাখিরা ঘাঁটি গেড়েছিল,
সেই সব ময়লা ছাদ থেকে উড়ে গেছে ফড়িং-দেহ
আমি এ পাড়ার লোককথা জানি
ঘাসের দেহ ফুল নিয়ে আসে রবিবার হ’লে।

কালো জলাশয়ে যে হরিণ বসে থাকে
তার গায়ে লালচে রঙের মেঘ
জলের রিপল খেলা করছে আকাশ জুড়ে
সন্ধে হলে তানপুরা নিয়ে বসবে।

বিকেলবেলা নিছকই একটা ভেসে থাকা
পাতাদের পাশে পাশে
কার্নিশে বেড়ালশোয়া
ঈষৎ মেঘলা মেয়ের ছায়া
যেদিন ছাদ থেকে রাংচিতি ঝরে পড়ে
শাঁখ থেকে দীর্ঘশ্বাসের মত
বেরিয়ে পড়ে দুঃখ দুঃখ মেঘ।

জলের একপাশে আলো জ্বলে
অন্যপাশে বেগম আখতার।

বৃষ্টির সান্ধ্য রেওয়াজ
সা থেকে নি, সা ছাড়িয়ে
ছড়িয়ে যাচ্ছে আলোদিঘির পাড়ে

গাছেরা লকডাউন ভেঙে
এসেছিল ভিজবে বলে

একা মেঘের কাছে
সারারাত মল্লার বাজবে আজ।

যে মায়া তোমায় ঘর থেকে টেনে আনে
সেই এসে বসে দেওয়ালে
একমনে দোল খায়, ঝুলে থাকে
জামার সেলাই ধরে
আজীবন তার চলে যাওয়া
উঠে পড়া ঘাসজমি বেয়ে
ভোরের পাতার মত নিমেষ

অপেক্ষার নাম করে
প্রতি সন্ধেবেলা জামার পাশে
একজোড়া সাদা ফুল রেখে যায়।

Facebook Comments

Leave a Reply