অভিজ্ঞান সেনগুপ্ত-র কবিতা

বর্ণ – বিপর্যয়


.
একমন চাষ করে সকাল বিকেল বারো ভাতারী
                                        জলযোগ
চিবোতে চিবোতে মুখভর্তি ওম
হাত পেতে নিলাম, প্রিয় সখা শোন
ধানশীষে আদর বাঁদর শিশিরবিন্দু জুড়ে খেলাধুলা
                                                পরাগ অপরাধ
প্রান্তরেখায় বয়সজনিত গুলমোহরে পতঙ্গ প্রত্যাশী
টোয়েন্টি ফোর ইনটু সেভেন; আলোছাই ব্যস্ততার
অজুহাতে গর্ভস্থ ঋ খেলাপির কোনো ধারবাকি নাই খাতায়
সবই রাষ্ট্র গুলে খায় হে রাক্ষস কুলপতি,
জনান্তিকে ছোট নদী বয়ে যায় আজন্ম বিহোরে
পাখি উড়ে যেতে যেতে মুচকি হেসে গোসলের ঠিকানা
                                                  জেনে নেয়
তারপর ঠিক যতিচিহ্নের পরিধি বৃত্তে যাবতীয় অপকর্মের
উল্লাস অবকাশ
সাংসারিক দ্বন্দ্ব আসলে সমাসবদ্ধ অপলাপ
কিংবা আলকুশি সংশয়;
দূরে দিগন্ত পানে হাওয়া ওঠে সরলরেখায়
ব্রাউনিয় গতিতে ধেয়ে যায় সম্মুখে, চেনে শোনে  –
ধুলো জড়ো করে সন্ন্যাসী উপগুপ্ত
বেতস কাণ্ডে লিখলেন,
অ, আ……



বর্ণ ব্যঞ্জন



কী আশ্চর্য, এইমাত্র ঘুম ভাঙলো
খাট থেকে নেমেই সামটে নিলাম জীবন
খানিকটা নুন হলুদ মাখানো আলু আর পটল
তেলের উপর ফোরণের সুগন্ধ
আর লঙ্কার ঝাঁঝে উথালপাথাল করে
একমুখ জল কুলকুচি করে ফেলা হলো,
চায়ের কাপের পাশে দুইখানি মেরি বিস্কুট
দাঁত কেলাচ্ছে
হাত বাড়িয়ে পাল্টে দিলুম চ্যানেলটা
সিল্যুয়েটে মিস শেফালী
একমনে সামলে নিচ্ছেন বেহিসাবি যাপন যখন
পেছন পেছন ঝাড়ু নিয়ে মোসায়েবি প্রবেশ
জঞ্জালে মিশিয়ে দিয়েছি ভ্রমনসুখ
ব্যঞ্জন শব্দে খানিকটা দুপুর
জলমৌন রঙিন অভ্যাসে
ভেবলে ভ –
বিকেলে হাঁটাহাঁটি, ফিটবাবু বিন্দাস
চেতনায় অভিযোজিত আক্ষেপ আর গন্তব্যহীন গভীর
পুরোটাই ভোজবাজি
আঙুল চেটে চেটে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেটুলে
নিদ্রা বিলাস,
শুধু, আলোটা নিভিয়ে দিও না প্লিজ
খিদে পেটে পাখিরা জাগছে আজ ….



মধ্যযুগ



ওফ্…. ওই যে হাঁটুমুড়ে বসে আছে, ওর চোখদুটোয় মরা মানুষের গন্ধ, কপালে অষ্টম আশ্চর্যের মায়াময় ধুন… এইমাত্র নাড়িকুণ্ডলী ফাঁক করে একপাত্র গনগনে আগুন ঢেলে দেওয়া হয়েছে জঠরে, কন্ঠনালিতে নিষাদ নক্ষত্র কৃষ্ণনীল।  কেটে নেওয়া হয়েছে তাবিজ কবচ, শুধু বিষ জন্মের কালো কালো অন্ধকার প্রলয়প্রলাপ আর জমাট রক্তের উত্তরসুত্র সভ্যতার জ্যা বেয়ে পাতালপ্রত্যাশী। সমস্ত কৌণিক আহ্বান নিয়ে, নৈ:শব্দবিমুখ ধর্মচিহ্ন মাথায় করে পা টিপে আসে লুসিফারের সন্তান, চাপাতির এক কোপে নামিয়ে দেয় মস্তকসজ্জা, ত্রিশুলে খুঁচিয়ে খুবলে নেয় জ্ঞানচক্ষু …. সে তখন সমস্ত অস্তিত্ব মেলে ধরে দুই হাতে জড়িয়ে নিল পৃথিবী। চোখদুটো জুড়ে মৃত্যুর আলো আর সমর্পণ।
হায় ঈশ্বর, শিরা উপশিরা বেয়ে শাসন কঠিন চাষবাস নিতে জানল, রাখতে জানল কি ….





Facebook Comments

Leave a Reply