অরিত্র সান্যাল-র কবিতা

fail

কথাপুরুষ


[পাথরে কান পেতে শুনি প্রকৃতির নির্বিকার স্মিত হাসি। এক পিতা যেভাবে স্পষ্ট দেখতে পেলেন তাঁর হাতে ধরা সদ্যোজাত প্রাণীটির মৃত্যু আজ থেকে সোজা তিরিশ বছর পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাগর থেকে উত্থিত প্রবল একটি ঝড়ের কাছে রাখা – বাঁশবন সংকুল চন্দ্রভাগ্য রাত্রে আলো পৃথিবী তখন একটু হলেও তিরতির করে উঠছে না কি? সেই সব কতদূর দেশের কথা – এ পা জোড়ায় একদিন কত ধুলো লাগবে – সন্তানকে তিনি আরো সরাসরি তুলে ধরেন চোখের সামনে
দেখেন চোখ ভেদ করে চলে গিয়েছে বহু বছর-
সে রাত্রে বিদ্যুৎ বাড়ি থেকে ছিন্ন হয়ে ঝুলছে উল্টো ভাবে। উজ্জ্বল, তুখোড় হু হু শব্দখানির সঙ্গে মিশে রাস্তা উপচে দালান ভরিয়ে তুলেছে – পিতা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন জল ছাঁচতে গিয়েই তার ঔরসের তেজ স্তব্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ল।
প্রাণীটির মধ্যে তাকিয়ে তিনি শিহরণ অনুভব করেন -এইভাবে মহাপৃথিবীর সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন হবে একদিন। আবিষ্কার হয় কত নতুন নতুন নক্ষত্র গোপনে নিভে নেমে এসেছে তাঁর চারদিকে।
সেইসব পাথর সাজিয়েই মাটিতে উনি কালপুরুষ আঁকলেন এক]



এক

ক্ষমা করা যাবে একটু, যদি তাড়া না থাকে খুব?
মাঝে মাঝে আমার বিম্ব চিৎকৃত কাঁচের খণ্ডের মতো হয়ে থাকে –
তাতে যদি শান্তিভঙ্গ হয়…

আমি সারাদিন যীশুর মৃত্যুর মূর্তি বুকে নিয়ে ভালোবেসে গিয়েছি সবাইকে।

তুলনায় স্বর্গে আছি।   
আকাশে বাঘ উড়ে বেড়ায় – তেমন এক স্বপ্ন
ছিল আমার নিজেকে দেখা,
একে একে সবাই উঠে গেলে প্রকাশ পায়
লম্বা বন্দুকের পাশে শুয়েছিলুম কাল-
এই পাখা বৈদ্যুতিকও
বিশাল ডিমের মধ্যে সুরক্ষিত ছিল,
ফুটে বেড়িয়ে এসেছে। আমাদের উত্তাপে
এখন যে বাতাস দেয়, তাও কি পরিযায়ী নয়?
মানুষের সংসারের প্রতিভা খোলা জানলা দিয়ে
ঘন অন্ধকারে চোখ রাখে
দেখি শিশুদের বিস্ময়বোধে নীল তারা হয়ে ঢুকে পড়ছে
মানুষের দূর জীবন।
যে আলো খালি দূরত্বই মাপে, তা জ্বেলে খুঁজে দেখি সবাইকে-
বলি, ঈশ্বরের মতো তোমার প্রেমে পড়েছি, অসহয়তা।


দুই

খুব ইচ্ছে হয় – একবার নিজেদের দেখি।
জংলা সরিয়ে পদতল-ক্ষয়িষ্ণু পথ খুঁজতে এসে হঠাৎ যেমন
বিপজ্জনক বাড়ি দেখে ফেলা –
দেখি, অন্ধকার বাদুড়তম হয়ে ঝুলে আছে কার চোখে
দেখি কে
স্তব্ধ
কে চারিদিক অন্ধকার

গাঁথা পেরেকের মতো এই জন্ম তারাদের
শিকড়ক্ষমতা নিয়ে পড়ে আছে
আকাশে।
সেখানে এখন নিবিড়পুরুষ ফুটেছে

আরশি ও চোখের মাঝপথে একটি বাড়ি অশেষ ভাঙনে চঞ্চল হয়ে ওঠে

Facebook Comments

Leave a Reply