অনির্বাণ ঘোষ-র কবিতা

উপহার

তুমি অপেক্ষা করো,
তোমাকে আমি ভালোবাসা উপহার দেবো।
না, এ ভালোবাসা কাগজের নয়
পাথরেরেও নয়
আবার এতে কোনো রঙও নেই,
গন্ধও নেই- তবু আমি নিশ্চিত,
তোমার খুব পছন্দ হবে।
সবসময় নিজের কাছে রাখবে
আর সময় পেলেই একটিবার তুমি দেখে
নিতে চাইবে, সে অক্ষত আছে কিনা!
তুমি একটু ধৈর্য্য ধরো
তোমার বাড়িতে ভালোবাসাকে পৌঁছে দিয়ে
তবেই আমি বিদায় নেবো…
সন্দেহ হলে খুব কাছ থেকে দেখে নিও
এতটুকু খাদও খুঁজে পাবে না তুমি।।

শীতের চরিত্র বিশ্লেষণে

শীত যে এতটাই বেমানান,
তা আগে জানা ছিল না।
রূপান্তরকামী ছেলেটির বিরুদ্ধে
কোনো আন্দোলন করেনি,
নিঃশব্দের দীনতা আর আলো চুরি করা
হার্মাদের জন্যা এনেছিল ৫৭৭ধারা…
কি হলো তাতে?
পরিবর্তে উপকার হয়েছে জনতার
সোচ্চার হয়েছে তাদের দুর্বল কণ্ঠ,
জাতহীন আগুনে সেঁকে নিয়েছে
গলে যাওয়া মৃত দেশপ্রেমের বাণী।

এসব হয় বলেই শীতে তোমায় দেখা যায় না,
হারানোর কদর্য সব উপসর্গে ভগ্ন হয়
বেঁধে যেতে হয় শরীরের ছোঁয়াচে গান…
কম্বলের পাদতলে আলগোছে লেগে থাকে
শহরতলির রক্তাক্ত শ্বাস।

সাম্যিবাদের ডেট ক্যালেন্ডারের পাতায় বর্তমান,
‘রহস্যের কেনাবেচা শেষে তার ফিরে আসার কথা ছিল’
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে জবাব আসে,
-“সে তো কবেই চলে গেছে…সোজা রাস্তা ধরে।।”

টিউলিপ

দেখতে পাচ্ছো!
দু’পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছে,
কুড়ি ফুট চওড়া রাস্তা সমান্তরাল…
পড়ে গেলেই পিছলে যাবে অন্ধকার,
খেলাঘর ভেঙে তৈরী হবে নুন-ভাতের
অমোঘ রান্নাঘর
সাদা পৃষ্ঠার বাইরে চলবে চিরহরিৎ উৎসব।

মানুষের মাঝে বড়ো হচ্ছে দ্বেষ
পথ-ঘাট পেরিয়ে,মৃত আত্মার শান্তি
কামনা করে সে এগিয়ে চলেছে
ঘূর্ণিঝড়ের মতো…
তার হাতে সময় অতি অল্প
অপেক্ষা করছে এক বৃহৎ সমাজ;
শিক্ষিত এবং তথাকথিত সভ্য…

মাতৃদুগ্ধ শেষে পড়ে ছিল একটি শিশুর
মৃদু হাসি
ঠিক অনেকটা প্রচ্ছদের মতো কাষ্ঠল…
দেশভাগ হয়েছে আগে,এখন পালা মানবিকতার
কিন্তু মাতৃত্বকে কি ভাগ করা যায় না কখনও??

Facebook Comments

Leave a Reply