অভিষেক ঝা-র কবিতা

ভাতঘুমকালীন : পাঁচটি কবিতা

।১।

বিস্তারিত সাদা জুড়ে
কয়েক বিঘা জিভ পড়ে আছে
সামনের দিকে সাঁঝ
পিছনে শুক
থুতু মেখে রয়েছে মাঝ—
দোয়াবের দিন, কাঠা খানেক প্রেম
কয়েক বিঘা ভাত, মানুষের ঘুম।
সমস্ত বাক-আয়োজন সেলাইমগ্ন
বিঘাকে মাটি থেকে আলাদা রাখতে
বেভুল হাত লালা মাখছে।

।২।

নিখাদ মেহেগনির মাদুরে
ঘুঘুর দুপুর হয়ে আছো
গাছে ধরে আছে পিঁপড়ের সময়
এখানে ঠাকুমাকে পাতার মত দেখি
তেজপাতায় পায়েসের ফোঁড়ন হয়ে
আমরা গল্প করি
— রান্না
— অসুখ ও
— চাঁদের

।৩।

দুপুর আর আমাকে দু’দিকে রেখে
মাঝ বরাবর একটি বই বয়ে গেছে
এইসবের রান্নাঘরে
সকাল শেষের চা ফুটাচ্ছি আমি
দুপুরের চোখ ভারী
পাতায় চা-গন্ধ
চোখের ভার
কবরে চলে যাওয়া সকালের সোঁদা ভাব
বইঘন হ’তে হ’তে দেখি
দুপুর ও আমি
দু’জনেই পাতা
দু’জনেই সজললোভী

। ৪।

স্থির চোখে তাকালে
নাকে ভিজে খোলসকালীন গন্ধ
কয়েক আঁটি ঢেঁকিশাক : স্থির ও সবুজ
গাঙ্গেয়ভূম উজায়ে এসে
পাহাড়তলিতে পমফ্রেট : ফ্যাকাসে ও স্থির
গরু স্থির ১৬০ থেকে ১৮০’তে।
এইসবের প্রতিকূলে বাবা রয়ে যায়
গঙ্গার ধারে আমাদের আমবাগানে
ঘাসময় পিঁপড়ার ডিম আমার সমস্ত প্রেতপুরুষ…
ডিমভাঙা ঘাসে স্থির ফিসফিস:
“কী কী বাজার করলা?”

।৫।

অনাবিল এই উতলবেলা
জলের ঘাসে চোখ বুজে আছে
সুগভীর এক শৈবাল স্নেহ
মেটে গন্ধ হাঁসের পালকে
স্বপ্নের টমেটো বাগিচার দূরের লোকটি
খানিক বৃষ্টি শেষ হল
খানিক আগে
রামধনু দেখতে দেখতে জানলাম
আমার ক্যানসার ফিরে এসেছে

Facebook Comments

Leave a Reply