শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়-র কবিতা

অক্ষরবৃত্ত

যেসব মেঘ পেরিয়ে অক্ষরবৃত্ত
সেইসব মেঘের দেশে বিহান
কুয়াশা পুরাণ পোড়াচ্ছি ছন্দগীতি
আগামী উপভোগ্য অন্য সন্তান
বিবাহ বাসর এহেন পাথর কুড়িয়ে
সমুদ্র স্রোত জমানো বিছানা বালিস
রন্ধন রীতির সন্তান, ও পিতা পাক্ষিক
আগুন হয়ে ওঠা শূণ্য পুরাতন

শুয়া

মিলন ধ্বনির আখর ছড়াই
বিচ্যুত প্রাণ শুয়া ওঠা স্বর্গ
এ পর্যন্ত পরিসর বলছে বাহবা
শিমুলের উড়ে যাওয়া শিশুমন
অন্যমন হাতে তুলে নিয়ে রক্তপাত
বখেয়া হয়ে যাচ্ছে সনাতনী সন্ধ্যা
আলাপের গভীরে বিস্তার টানছে
গলির গর্ভে একটা হাতের শোক
কুড়িয়ে রাখছি ভিড়ের দীর্ঘশ্বাস।

নবারূণ

অপলক সে অন্ধ রাত ইশারায়
ঘুম ভেঙ্গে জেগে থাকা আঞ্চলিক
প্রকৃত পাওয়া হয়ে ঘণায়মান দীর্ঘ
কতটা প্রকৃত বাঁচার জন্য উদ্ধত
চিবুক নাভি আর মোমের ভূমিকা
শ্লীলতা থেকে সরে দাঁড়ানো পাখি
মিলন ধ্বনি মলাটে মসৃণ
যেন বা তল্লাট উপচে নাগরিক
কথনে প্রান্ত অনুভূতির চক্রব্যুহ
কোলাহল আর কোলাহল বিচ্যুত
নবারূণ একটা প্রভাতের দীনতা।

আলজিভ

একটা ত্বরণ আচম্বিত আততায়ী
এক মামুলি তর্জমা উদাসীন নুড়িতে
অনেকক্ষণ নিষিক্ত গুঁড়ো উড়ে এসে
প্রথমেই চারণ, প্রথমত রুক্ষ চর্যা
বৃত্তচাপ কিছু রণণে লুকিয়ে রক্ষা পায়
অসীম শূণ্য ঘুমের মুখে উপত্যকা
জীবাশ্ম হতে চায় ঠোঁটের আলখাল্লা
পালিয়ে যাচ্ছে নিঝুম স্মৃতির পারাপার
হাসিমুখের ফুলদানি হাতে বালিকা বাগানে
রঙের আগ্রহ হয়ে ওঠে মাধবী বিতান
আলজিভের ছোঁয়ায় রক্তিমাভ ভোরবেলা

নাগরিক

আগুনের কাছাকাছি ক্যারামেল
বর্ণহীন হয়ে যাওয়া তীব্র টান
আচম্বিত নধর বাসনা বিচ্ছুরিত
তিলক আঁকছে আকাশের মেঘ
যেখানে চোখ খেলেছে সমকাল
তীব্র শ্বাস হয়ে ওঠে মেঘ মেদুর
শিখছে কি কিছু মুখোশের তুলনা
শান্ত মন, শান্ত প্রেক্ষিত মাতলা
যেখানে নিরাভরণ ক্ষুদ্র ভোরবেলা
প্রিয় হে পাথর যেমতো সন্তানের বৃক্ষ
যা কিছু অক্ষর ভুল পথে শূণ্য মোহনা

মেঘলা

স্তূপ মেঘের শিরোনামে ঘুমন্ত শব্দ
ভাঙতে চাইলে রোদ এসে পড়ছে নতজানু
ছায়ারা স্টেশনকে বলছে আয়নার স্বর
লিখে যাচ্ছি রঙবেরঙের লুপ্তপ্রায়
বাতিল কবিতার যথার্থ সামলে ভগ্নাংশ
নেমেছে বিপরীত চোখের অস্বীকার
মেঘেরা শুধুমাত্র আলজিভের বাগানে
নিদ্রামগ্ন কোজাগরী পাখিদের বসন্তকুঞ্জ
নিরাশ্রয় হাঁটতে ভোলেনি হতাশার গন্ধে

সম্পর্ক

সহানুভূতির কমলালেবুতে ঝিনুকের হোঁচট
শ্রাবণ আছড়ে জমিয়ে রাখছি খরতর
বিভোর অবগাহন যোগাবেশের শেষে
আঙুলের তিলে আচমনে বাঁচে সম্পর্ক
অতীত কিছুটা লালচে নীল হয়ে যায়
যেখানে গন্ধ উঠে যায় তামাটে
রতিসুখ হতে রক্ত ঝরে ঝরে পড়ে যায়
অকপট মুর্শেদ মাঝরাতের ডাল ভাতে
মনোক্রম খুশবুর স্বপ্নাতীত অক্ষরে
উপত্যকার উৎসবে উৎসারিত উদয় উদগীরণ
অশ্লীল ঘুমন্ত চোখ খুঁজে দেখে নিরীহ

বহতা

ভুলে যাওয়া পাখিটির মাথায় গল্প
পালকের আবডালে শীর্ণকায় বারবেলা
ভৈ্রবের পাতায় ট্রেনের একদা
কিছুটা লোভনীয় স্মৃতির পাতলুন
কাঁচা রাস্তার আদলে মহাকাল
পক্ষপাতে ছুটছে অজানা গৃহস্থ
স্রোতের অনুসারী আরামের বহতা
যেখানে সবুজ মেঘলা শীতল যথা
অথবা নতুন কোনো সাগরের ওম্
বহতা একটা সময় সুন্দরকে ডাকছে
একটা বহতা সমস্ত ভুলের শীর্ণকায়

Facebook Comments

Leave a Reply