দীর্ঘকবিতা : বিশ্বরূপ বিশ্বাস
১.
নিথরে তিমিরে অলীকে অস্বচ্ছ নিরাকার মাথা জয় তার
আমি চিনেছি তোমার ঘিলুর হাড়ের ডাক্তার স্মৃতি নদীর
পান্থ আর ভয় এক প্রজন্মের মাঠ ভ’রে ঈশ্বরী দেখালো
শোনালো দরজা কারুর ভূতের হবে-ই পুরুষোত্তম দুয়ার
কেউ অদ্বয়ী মোছেনি তাই বটের নতুন চারায় উচ্চারণটা
ছাতামাথা চিন্তা এসে মানুষের সমস্ত মাথাকে নষ্ট ক’রেছে
এই সবচেয়ে রাস্তার মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি তাতে বেলা কম
তাতে দিনও কম নিজের শক্তিশালী আত্মা তাই সূর্যের কম
কম কম শিরায় শকুনি পাখির পাঠশালা রাক্ষসী খচিতো
এই পাঁচরঙা পৈশাচিক গাঁথা রচিত হ’লেও পঠিতব্য কি
ঠিক না জেনে-ই আঁচলের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের মহড়া হয়
মানভূমে সিমভূমে বাৎলে যেতে হয় তুণ্ড কতটুকু লাগবে
ছায়াসুশীতল পলকে গানের মহাজ্ঞান মাংশের শিকার
শিকারী কিন্তু প্রত্যেক সংগীতের শ্রোতা নয় শিল্পী-ই শিকার
অনর্থক অনর্গল পুঁথি প’ড়ে শিহরে শিহরে প্রেত্নী আস্তৃত
সব জল আগের মতন উন্মাদিনী ব’লে-ই হাতে থাকে না
ভগবানের দোহাই এবার সর্দারের পুনর্বার লাশ জ্বাল দাও
ঈশ্বরের হুকুম আবার দেওয়ানের ঘরে সিঁধ কাটো প্রহরে
প্রহর তো শেষ হয় না বাপু তাহ’লে এ রাত শুক্লপক্ষ তো
প্রহার তো বেশীবেশী হয় বাবু তাহ’লে এই মানুষ হিংস্র তো
যখন আজ আলিঙ্গনে আগুনে রাজি হ’য়েছে কেউ এখানে
তখন তাকে ঝরাও আর পোড়াও ঘি দিয়ে যতটা পারো তুমি
তোমার তো সবার ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে প্ল্যানচেটের কাজ তাই তো
না কি যে নীলিমা ভুবনে ছড়িয়ে আছে তা তো লিখবো না
অশ্বের পায়ে চটি ব্রাশ দিয়ে এই হেনকালে অয়ি এলো তুমি
তুমার নামে পাকা পাকা ফল পেঁচারা আঙটি বানায় গাছে
চাঁদের চিরে থাকা খুরে অর্ধমুদিত ব্রোঞ্জ অনেকটা কমনীয়
এবার শবপুরুষেরা নমনীয় গর্ভবতী পুরুষমানুষ হও দিকিনি
তোমাগো খালাসে শরীরের কলহে লিঙ্গধারী নারীকে ডাকি
এরপর যে ব্যাঙ্ক শুরু হবে সে ব্যাঙ্ক শেষ হবার পর্যন্ত নয়
পোহাইবে রাত আসবে সকাল টাকা রাখবে পাবলিকগণ
শিশুর মতন আমি তারপর চোর হ’য়ে ছিনতাই ক’রবো
সংসারের খেলা মাতৃস্তন্যে দুধ ধ’রে রাখতে দ্যায় না কভুও
সব স্বামী-ই তার নিজের নিজের স্ত্রীর দুধ খায় রাত্রে খুব
ভোর জাগিবে রমণী কাতর হইবে তবু কিছু বুঝতে দেবে না
সব পুলিশ আকাশ আঁকড়িয়াও পৃথিবীর মহাঘুষটুকু চায়
সব নার্স চায় তার কোনো বিখ্যাত ডাক্তারের সঙ্গে বিয়ে হোক
হেথায় এ সব ভালোলাগলে সুপ্তিমগ্নে দুর্দান্ত কুকুর টেনে নেবো
তোমাকে রিবন আর ভায়োলিন কিনে দেবো যদি এ সব থাকে
যদি ফলপাকুড় নিরক্ষরতায় রণক্ষেত্র না হয় কোনোদিনও
যদি ধ্বস্ত চালকুমড়ার ডালে প্রজাপতি এসে ভোট দ্যায় রোদে
যদি মানুষের ভেতরকার সোনাগুলো কান্না না হয় পছন্দের
যেমনি যদি আর কোথাও তালুর হাঁকে গরম ক্ষ্যাপামো গো
কামারশালায় এনে এই যদি শব্দটাকে বুলবুল বানাতে হবে
অনেক আবেগ এনে দ্যায় লেখায় শুধু শুধু আবেগ লাগে না
লেখায় অধিক আবেগ থাকলে সে লেখারা নষ্ট হ’য়ে যায়
আমার আর কি অশ্বারোহী সমস্ত তো তোমার-ই স্নানস্থান
বাংলা অ্যাকাউন্টে টাকা পুষে হিন্দি সিনেমার ডিজে গান
খোকা ভাগ্যিস আমাদের শিক্ষিত ছিলো এই বিরাট ভারতে
খোকা ভাগ্যিস বোকালোক হয়নি আমাদের মতন মাঝারি
খোকা ভাগ্যিস লড়াই ক’রতে নামেনি নিষ্ফলতায় উঁচিয়ে নাক
তাই তার জান বেঁচে আছে এখনো এই আঙুরলতায় আটকে
আমাদের ব্যাঙ্ক পাসবই ভাদ্রে শুকিয়ে স্বপ্ন কত ডিপোজিটের
ঝর্না নেই আমাদের বুকে তাই মাইগুলো ফুলে আছে পাথরের
মেঘ নেই তাই যোনিতে জন্মায় না সন্তান তাই পায়ুপথে প্রবেশ
বিহগ ওগো বিহগ তোমার পিসির মতন নোংরামো কেউ করেনি
সে তার নিজের ছেলেকে বিয়ে ক’রে অমরত্ব চুষে নিয়েছে গো
এবার প্রদক্ষিণ ক’রে ক’রে সব কবিতাকে পুরস্কার দেওয়া
সূর্যরশ্মি তুমি-ই বলো কবিতা লিখে এখন কি কেউ অমর হয়
আঙুল নিয়ে যে পিঁপড়েরা গ্যালো চ’লে ওরা অবিনশ্বর তো
বৃক্ষের ডালপালার অত্যাচার বড়ো অন্যায় ভাবে করে মানুষ
মানুষ তো গাছের ঈশ্বর নয় তাহ’লে মানুষ গাছ কাটবে ক্যানো
তারা বরং তাদের ছেলেমেয়ের মুড়োগুলো কেটে কেটে খাক
বাজারে বাজেরা যদি আসতো তাহ’লে চোখ উপড়ে নিতো
শালাদের লজ্জা পাওয়া উচিত এ পৃথিবীর ওদের একার নয়
তারপরও অ্যাতো অত্যাচারিত হয় সমুদ্র নুন বালি তীর তোষণ
বেচাকেনা হ’তে হ’তে শেষ পর্যন্ত লবণাশ্রুও বিক্রির দাম পেলো
নক্ষত্র উপহার দিলো ম’রে যাওয়া বাবাকে যে ওটা তোমার
চাঁদও উপহার দিলো ম’রে যাওয়া বোনকে যে ওটা তোর
ভারী অদ্ভুত এই চাওয়া পাওয়া দেওয়া নেওয়ার পাতাগুলো
হাজার হাজার নৈরন্তর্য্য টুপটাপ ধ্বংসে কামিজের মন ধ্বংস
কথার পারদ সৃষ্টি ক’রছে ঝগড়াঝাঁটির বংশ তাই অ্যাতো কথা
অ্যাতো বার্তালাপ মোবাইলে পাঠিয়েও ফুরায় না রাতজাগা
গম্বুজের নীচুতলায় তোমার চাদরে মোড়ানো শরীর তীব্র প্রেত
এই প্রেতাত্মাকে আমি প্রেমিকা ভেবে অন্তত কার্নিশে ঝুলি
তোমার অনেক দারোগার মধ্যে একটি রুপালি চামড়া আমার
কালো প্রতিধ্বনিতে ওদের বিরাম ঘোরে সব বন্ধুর বাড়িতে
তোমার নাড়ীতে কি নারী কম কম তাই জাহাজ পেলাম না
অ্যাতোদিনের যাতনা আমি পুদিনার রসে ভেজাবো কি ক’রে
জিভে এসে অবশেষে পদ্মফুল ছিঁড়ে অমঙ্গল এলো উদ্ভট
এইখানে-ই সব শয়তানদের সেলাই ক’রে নরকে পাঠিও গো
দ্যাখা দিও আর থুথুও পাঠিও আমি তাই কালের ঘরে রাখবো
দীর্ঘশ্বাসের জন্মে কত আরামহীন অস্বস্তি অচ্ছোদপটলে চেরা
তাই ভাবনা মহান ভেবে সাধকেরা-ই ভাবজগতের বিশ্রাম পায়
বাকি দেহরা আত্মা তাড়িয়ে বাড়ি বাড়ি শরীর খোঁজে নতুন
এরা আর তবে নবীন হ’তে পারে না কোথাও কভু ততদিনে
কারণ সব নেমকহারামের এক ঠিকানা বেশ্যাখানা রেণ্ডিখানা।।
২.
তোর নাম নাকি রাখালিয়া
অ্যাই তুই নাকি নিশান্তের আকবরে আককুটে-ভাষায় কথা ব’লিস
আঁশহেঁষেল দেখেছিস কখনো
ক্রমোন্নতে তারাকান্তদের সিঁতি পাদনখকণা চিরে তোর জননীরে
মুদি নাই আঁখিজল নিশ্চেতনের। অ্যাই মেয়ে শোন শোন
যূথীরাতে রাগিণী ভেজে আজ নাকি বরষা সনসন
তোর দামিনী-শয়ান গার্হপত্যে স্বরবিশেষ বিশেষ ঘরের বরের পরের
তুই মরদ গাম্ভারীবৃক্ষ
তুই হালা বুঝবি কি লো মোর
গিঠান দিয়েও তুই মরদেহ চোর ঠোসা-হাসপাতালের
বল তো কোন মালের এখন কত দাম
বল তো মাগিরা ভালোবাসে বংশী
নাকি গরম বাদাম ভালোবাসে মাগিরা
এ শরীর ঘেরা সব ডঙ্কামারা অলংকারে
এ রতি ছড়ানো শবের সুনয়না-সুন্দরে
দাবানল গেলে যারে নদীও প্রচেতা করে তারে
আইলা শালা মদ্দা আমার ধারে ক্যান
আমি কৃষাণ। সত্যি ব’লছি আমি কৃষাণ
ঘুমের শয়নে হাঁকি। একা একা শুয়ে থাকি
একা একা গাই যত কৃষকের দিনমজুরের গান ললনের পরাক্রমে
বলনের যথাক্রমে আমারে দিয়েছে লেবুবাগান আমার বাপ
বড্ড আপাচাপ হ’য়ে যায় তাই আজকাল পাহাড় গুনতি
ক’রতে গেলে। বোনের মাথা খায় দিদির অভিশাপ
বড্ড অভিশাপ হ’য়ে যায় তাই আজকাল লাশ সনাক্তকারী হ’লে
ভূতেরা আসে প্রেতেরা যায়। প্রেতেরা হাসে ভূতেরা
ছড়ায় বাবলার কাঁটাবনের গাছে গাছে
অ্যাই তুই সেক্স চ্যাট ক’রেছিস কখনো
অ্যাতো জীবনের শরীরের যত মজা
তাও কি পেয়েছিস কখনো ভার্চুয়াল সম্পর্কে
চল না বেবী ঘুরে আসি
জীবনখানা খুঁড়ে আসি পুড়ে থাকা সাগরের সমাধান-জলে
অ্যাই তোর চিন্তাধারা কি কথা বলে কোনোদিনও নরমুণ্ডমালার
ধ্যাৎ শালার কথা শোনো। আলাপচারীতায় প্রলাপ
বিলাপের ছন্দপতন! ছন্দপতন! ছন্দপতন
সরাসরি মাগিদের এ সব কথা জিগ্যাসা করে কি কেউ কখনো
শোনো শোনো সবাই শালার কথা শোনো
চীনের সন্ধ্যায় দিনের সন্ধ্যায় ভেসে যেতেছি আমি
রাতের সন্ধ্যাহ্নিকের সন্ধ্যায়
অ্যাই দাদা কামালপুর কোথায় তোর বড়োপুকুর
কোথায় তোর জামালপুর বল না দাদা রসুলপুর
একটা বিরাট ঠাণ্ডাদুপুর
আমার পায়ে ভারী নূপুর বাজানো এই তিনবেলা চারবেলা
রাতবেলা সারাবেলা ভারী হ’য়ে আছে
একটা বিশাল গরমদুপুর আমার হাতে
যাতে জাতে উঠতে পারি ওহে নাড়ি
তাই তো থাকি শুধু নারীর-ই তফাতে এই পূর্ণিমারাতে
বুঝি নারীর তফাতে থাকলে-ই জাতে ওঠা যায়
তুই শালা কবি না হারামি
গতরের এই ভরা অমাবস্যায় তোকে যদি আমার
ডাগর শরীর দেই চাটবি নাকি বল
তল রসাতল সব-ই হয় দেহের এই গড়া পূর্ণিমায়
দেহের এই ভরা অমাবস্যায় তল রসাতল সব-ই হয়
তুই শালা মানুষ না শয়তান! পিশাচের সন্তান
শোন শোন রাখালিয়া
বিচ্ছিন্ন এই জীবন নিয়া ক্যানো ক’রবো নশ্বরতার গান
আমি শালা হারামি! আমি শালা পাষণ্ড
তুই ঠিক-ই ব’লেছিস আমি শালা এক্কেবারে
এক নির্মম শয়তান চরমে
আচ্ছা আচ্ছা। তোর শালা হবে না বাচ্চাকাচ্ছা
জীবনে যৌনতা ছাড়া হ’য়েছে কি কেউ কভুও মৌন
স্বভাবে সাচ্চা। আস’লে তুই হ’চ্ছিস সাংঘাতিক নাবালক
ধী-শক্তবিহীন বাচ্চা। তোর জীবনে-মরণে এমন কি
আত্মসংবরণেও হবে না কিছু আচ্ছা! তুই শালা নাবালক
এক বোধবুদ্ধিসুদ্ধিহীন বাচ্চা
রাখালিয়া ক’রিস ক্যানো রাগ অ্যাতো শিগ্গিরী বল দেখিনি
আরে এসো এসো রাখালিয়া মিলনগীতি গাই গো
গতরের প্রেম-পিরীতি বাড়াই গো
আমার কেউ নাই গো :
পদ্মপাতার ফুলোবনে
চলো বন্ধু যাই দুজনে
কেলি ক’রি সঙ্গোপনে
ম’নে ম’নে এই যাপনে
আমাদের সামনে তো কেউ আসবে না গো
দূর দূর পোড়ামুখো দূর হ’য়ে যা গো
তোর সঙ্গে নাই সুখ ও দুঃখো
জীবন আমার একলা ভালো
নাই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ-ঝড় কালো
একা আমি একলা ভালো
দূর দূর পোড়ামুখো দূর হ’য়ে যা গো
আরে শোনো শোনো রাখালিয়া
এই জীবনে তোরে দিয়া
হবে না কিছু তোরে নিয়া
আমি শালা চ’ললাম মাঠে গো
তুই শালা থাক তফাতে গো
ধ্যাৎ বাল!!
Posted in: April 2020, Poetry