সুকুমার চৌধুরী-এর কবিতা
কোজাগর
চব্বিশ ঘন্টায় জাগি
এবং জাগাতে থাকি প্রাণগুলি…
কত প্রাণ, কত জান
থাকে একটি জীবনে
কত প্রেম, কর্মযোগ
লোভ ও লালন
কত কাম, স্বপ্নাচার
অবচেতনার গান
কত মোহ থাকে
মোহন আন্দাজ
চব্বিশ ঘন্টায় জাগি
এবং জাগাতে থাকি প্রতিটি জীবন ……
আরব্যরমণ
আরব্য রজনী তুমি ভালোবাসো জানাও নীরবে
সন্ধ্যেবেলা টুপ টুপ বিষ্টি পড়ে, ঠান্ডা বাতাস
আমারও গল্প হোতে সাধ হয় আর অবচেতনার কত
আমিষাশী গল্প উঠে আসে । তোমাকে শোনাই
আর চিত্রময় হোয়ে ওঠে তোমারও নির্জন,
বুনো ঠোঁটে হঠাৎ কাঁপন, একটু উষ্ণতার খোঁজে
তুমি ঢেকে রাখো তৃষ্ণাগুলি আর আমি কামাতুর
পায়ের পাতার থেকে শুরু করি, তুমি আরো
সাগ্রসর চাও । রাত্রি নেমে আসে ক্রমে
চারদিক নির্জন । নিমগ্ন হওয়ার আগে আমি
আরো ঘটনাবহুল হোয়ে উঠি, আরো আরো
লিবিডোপ্রবণ, রহস্য বিছিয়ে রাখি । নেটশব্দে
বলি, ‘ অন্য কিছু নয় শুধু দরজা খুলে রেখো
আজগুবি গল্পগুলি প্রাণ পাবে, স্বপ্নগুলি সুখ……
আরব্য রজনী তুমি ভালোবাসো, আমি আরব্য রমণ
অনর্গল
মুছে যাও । যেন ক্লাসবুক, এ রকম ব্যপ্ত চরাচর ।
ইরেজার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তুমি শান্ত করো
সভ্যতার তাবৎ ম্যাডাম ।
ভয় পাও । শান্ত হয়ে আসে দিগ্বিদিক ।
তর্জনীর ধারে আর ভ্রুকুটির গন্ধ নয় । অবসন্ন ক্ষমা ।
মুছে যাও । মুছে যেতে যেতে দৃষ্টি উড়িয়ে দাও ।
আর জেগে ওঠে বোধ । বোধের গোপন বিশ্ব ।
গূঢ় । অনর্গল ।
আমার গোপন কোন বিশ্ব নেই । আমি ওই
মুছে যাওয়া দেখে ফিরে আসি । ফিরে ফিরে আসি
অবোধ
যেন শীর্ণ পেরেকের আগা
শুধু তার সহিষ্ণু মাথাটি
কি রকম ভেসে থাকে দেখি
আরও দেখি তার অবোধ অন্তিমখানি
অদৃশ্য হওয়ার আগে
কেমন বহন করে ছেঁড়া জামা
সখ্যতা ও অপমানগুলি……..
বিবাহ
যেখানে ছড়িয়ে থাকে গোপন বিধুর
তার কাছে যাই
নিরবতা যার স্বরলিপি, বীতমন্ত্র
তার গান গাই
এ রকম আমার ভ্রমণ, এ রকম
নীল অবগাহ
যে রকম পাখির উড়াল, যে রকম
ধ্বনির বিবাহ ………
Posted in: March 2020, Poetry