সোমতীর্থ নন্দী-এর কবিতা

পিঞ্জিরাগীতি ~১

হিরিদয়খানি যেন ব্যাকুল লক্ষ্য এক
গা ঘেঁষে বসে, মেঘের কুড়াল দিয়ে
কেটে তোলো পুরুষমাখানো দানা
বনচর মাহুত বিছানাময়
সাইকেল চলে, তোমায় ডুবিয়ে তুলি
অসীম ফোঁটার মত, পিঞ্জরজলে।

ওই সে গাছের দাগ, ভোর হতে দেয়ালা বাজিছে
যেন ফুল ফোটে রক্তমাখানো স্কেলে
আলোরা ক্ষতময় হয় ক্রমে
তুমিটি এগিয়ে যায় ছুরি হাতে
তুমিটি বুড়িয়ে যায়,
তোমার হাড়ের গাড়ি হয়ে ওঠে
অপরবধের যান।

পিঞ্জিরাগীতি ~২

বুক থেকে একটি সিঁড়ি নেমে যায়
নেমে যায় সকল সময়কাল ভরা তুমি
সারাদিন হৃদি মেখে থাকি
বেদীটি সাজাই ওই পাঁজরাতলায়
বয়াম ভরেছি আমি, তোমার
নাভিশ্বাস দিয়ে, নিয়ে যেও।

মায়াবী পিপাসা এই ভারতের সুরে
ডাকে, যেন ক্ষেতে ক্ষেতে লিঙ্গ ফলেছে,
অভয়দানব এসে ছিঁড়ে খায়
সকাল ও বিকেল।
এ পথে শাসনকাঁটা গাছ
লাশেদের বন
মৃত নাভি বয়ে যায়

সাবধানে যেও।

পিঞ্জিরাগীতি ~ ৩

অনিশ্চয়তার রোদ প’ড়ে,
তোমার গায়ের পাতা জুড়ে
জমে উঠেছে গহীন বনের রস।

দেখো

ডিলিরিয়ামের পথ শেষে
রাতচরা সরোদপুকুরে ডুবি,
আকুল প্রলাপে দেখি
তিস্তা কিনারে যেন
ঝিকিয়ে উঠেছে বোধিগাছ।

পিঞ্জিরাগীতি ~ ৪

মূর্খ বালক
তোমার পথের দিকে মন ফেলে
ঘরে যায় বাদামভাঙা দিন
অনন্ত শব্দমালা হে
আলোকের স্বর
ক্ষয় রঙের এই মাথা
নামিয়েছি,
আদর শেফালি যত…

অতিসম্পৃক্ত এই স্পেসটাইম।
মৃত্যু নামে ডাকি।

কৃতজ্ঞতাঃ পথের পাঁচালি (উপন্যাস)

পিঞ্জিরাগীতি ~ ৫

সতর্কপ্রলাপ ঝরা পথে
হেঁটে যাও,
যেন সে বাঁকের পর
তোমার কোমরতলি
রেণু রেণু ফুলেল প্রদেশ
কাঠটগরের মত জঙ্ঘার সারি

cut

নিরপেক্ষ যৌন ইমেজারি, খুশি হই।
চামড়ার তলা থেকে
বের করে আনি এই
মোহনবাঁড়ার সুর। কবরাঞ্চল।
এখানে তোমার বাড়ি
সংসারলতা বেড়ে ওঠে

পিঞ্জিরাগীতি ~ ৬

ভ্রমরফুলের আলো।
নাভির উঠোন জুড়ে সন্ধ্যা দিয়েছি
ফুঁ দিয়েছি নরম সে শাঁখে

scene merge

দূরতমা দ্বীপের চৌকাঠে বসে
বিষণ্ণতা বুনে চলো
জানো বৃন্তবতী,
তোমার শীতল ত্বক শেষে
ঠাঠাপোড়া কনশাস
মানুষখেকোর মত
ফাঁদ পেতে থাকে।

পিঞ্জিরাগীতি ~ ৭

আশ্চর্য পিঠ জুড়ে
চক্কর কাটে আমার
ক্ষতবিক্ষত উড়োজাহাজ
শ্বাপদসঙ্কুল এই মেঘ,
ঘিরে থাকে,
নোলক দুলিয়ে হাসে।

cut

দুই বোঁটা আলোর নিশান দেখে
খুলে রাখি যুক্তিবল্কল, আধুনিকতা।
ক্লান্ত নিয়মাবলী পরে
মানুষপাখিটি তড়পায়,
দেখে নেবে বলে,
ইগনোর করি।
র‍্যান্ডমতায় হেঁটে যাই।

Facebook Comments

Posted in: March 2020, Poetry

Tagged as: , ,

Leave a Reply