উমাপদ কর-এর কবিতা

পতনসংক্রান্ত

গাছ থেকে পাতা পড়তে পড়তে যে ভাবনাগুলোয়
জড়িয়ে পড়তে পারে তার সঙ্গে নদীবাঁধে হালকা হাঁটার
ফুরফুরে কতটা একতলীয়, দেখা যাক—

ক) খসে পড়ি না নিজে নিজে, কে যেন খসিয়ে দেয়।
হাঁটি ঠিকই, কিন্তু মনে হওয়াটাও জরুরি
কে যেন হাঁটায়!

খ) সবুজ থেকে হলুদ হতে অনেকটা ফুরসৎ মেলে
কিন্তু হলুদ থেকে ঈষৎ বাদামি যেন গ্যালপ গ্যালপ
ঘুম থেকে ওঠার পরপরই একটা জীব-হাওয়া
ইস্‌, স্রেফ ছেঁড়ার একটা ধ্বনি আমার মধ্যে গুঁজে দেয়।
কানে যে মধুরটি বাজে, তা নদীজলের চলা
সঙ্গে যাওয়ায় এক, বিপরীতে অন্য কোনও বন্দিশ
পা-দুটোর চলনসংক্রান্ত হতে পারে গ্রাফটি–
কচিসবুজ-সবুজ-ঘনসবুজ-হলুদাভ-হলুদ-ঘনহলুদ-বাদামি-তামাটে
হাঁটি, প্রতিটে স্তরে কিছু-না-কিছু
ঠেলে না-দিলে পড়ে যাই না, হাঁটা রিল গোটায় না।

গ) কতটা সময় মেলে ভাবনার! প্রশাখা থেকে মাটি– দূরত্ব হিসেবে এমন কিছু নয়
ভাবি কতটা আঘাত কতটা জখম গোত্তা খাওয়ায়!
কতটা লম্ব না-পড়ে সমান্তরাল ছোঁয়া যায় অন্তিম!
হাসব না কাঁদব কেন যে পতনকালের আগে ঠিক করে রাখিনি!
ভাবনারা আনুষঙ্গ, নদী ভাবলে নিজেকেই ভাবা হয়, পথ ভাবলেও
চারপাশ হু-হু, না হা-হা, না হি-হি’র পরিপাটি না-মালুম।
শুধুই কি হেঁটেছি! দৌড়োইনি, বিশ্রাম নিইনি, লাফাইনি!
ল্যাং মারিনি, হাতে-হাত ধরিনি,
যা-চ্চলে বলে ফেলে চলে যাইনি এক্‌কা!

ঘ) ভাবার গায়ে জামা
সবার আগে হামা
থামা বলছি থামা।

ভাবার পাশে নদী
আমার সাথে যদি
চলেরে নিরবধি!

Facebook Comments

Posted in: February 2020, Poetry

Tagged as: , ,

Leave a Reply