সুব্রত সরকার-এর কবিতা

অথ রহস্য রাক্ষস, কথা

চার

নিজেকেই আজ বোঝাই, আলো তো কথা বলে না, অন্ধকার
তারও কিছু ভাষা নেই, উত্তাপ, শীত তাদেরও কি
ভাষা আছে কিছু? বৃক্ষ, নদী, পর্বত, ঝর্ণা, হৃদ, সমুদ্র কি কাউকে কখনো
বলেছে ফিরে এসো আবার, দু’দণ্ড
ভালোবাসিয়া যেও!
এই মর-পৃথিবীর মৃত্তিকায় তোমার পায়ের ছায়ার নিভৃতি
দেখে খুব মায়া হয়েছিলো আমার, করুণ
পতাকা উড়ছে গগনতলে, তাকে একটু দীর্ঘশ্বাস দিই, মৃত্যু
যখন নির্বাক প্রজাপতির মতো এসে বসলো
কপালে, তাকে কি করে বলি একটু অপেক্ষাও করতে পারলে না, ঘুম
তো এমনিই এসে যেতো, তবু দুরাশায় থাকে গ্রহের
ভ্রুকুটি, চন্দ্রাহত মেঘ যেন স্মৃতি, অপার কুয়াশা কুড়ায়, মদের
ভিতরে তৃষ্ণা লুকিয়ে থাকে বন্ধুর মতো, যন্ত্রণার
কাঁটার লেবু বন যতই চেষ্টা করো না কেন, আজ আর কিছুতেই হিংস্র
হবো না, শুধু নিঃশব্দে ভালোবাসবো তোমাকে
ধুলো, হাওয়া, অন্তরীক্ষ, পরাজয় ও আমার অরব-তীর্থজল, এবার
একটা চুমু খাও, আমায়!

পাঁচ

রাক্ষস আহার করে এই বন, তবু মেঘ
চুরি করে তাকে জল দেয়, এই জনপদে কবিতা কিভাবে হারিয়ে
গেলো, জানি না। গান নিজেই তার সুর ভুল করে
ফেলেছে, হারানো স্মৃতি হাঁটছে অন্ধগলি দিয়ে, সে সময়
হে সু-সংবাদ প্রকৃতই মনুষ্য তুমি মৃদু মৃদু
হাসো, যেন এ জগত পারাবার হলো একটা খেলা, লেখা
কি তারও চেয়ে উর্ধে, কঠিন সমুদ্রপৃষ্ঠে
এসে দাঁড়িয়েছে? নিঃশ্বাস ফুরিয়ে যেতে ঠিক আর ক’মিনিট
বাকি, তুমি জানো? শিস্‌ দিতে দিতে নিশ্চিন্ত
জানলার পর্দা সরাই, আরে এগুলিই তো কু-সংস্কার, এখন
বেশ দেখা যাচ্ছে মনের অতলান্ত পর্যন্ত, সেখানে
নাইনও-ক্লক ফুলের গোলাপি আভা, যেন
আমার লজ্জা ফুটে উঠলো এইমাত্র, কিন্তু তা আমি তোমাকে
জানতে দেবো কেন? শুধু আমার পৌরুষ
তোমাকে ছোট্ট একটা ধন্যবাদ দেয়।

Facebook Comments

Leave a Reply