অস্তনির্জন দত্ত-এর কবিতা

প্রাণীবিতান

জেব্রা

জেব্রা এক কেচে দেওয়া প্রাণী। পরিষ্কার তকতকে, হাত বুলিয়ে দেওয়ার পর আঙ্গুলে রঙ উঠে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে থেকে যাওয়া কোন ক্লাস, মামেলস।
ঘাস খায়, দুধ খায়। রেগে গেলে প্রচুর স্বাস্থ্য নিয়ে কান খাড়া করে পিছনে টেনে নেয়। পায়ের পেশী ফুটবল খেলার সঠিক উপযুক্ত।
ফলতঃ
মানুষ কাপড় কাচে, ডার্বি ম্যাচ দেখতে যায়। আর
সাদা জলের ওপর উজালার টিপ পড়লে আমি জেব্রা দেখতে পাই, পরিষ্কার তকতকে এক শীতের দুপুরে দেখতে পাই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সাদা কালো জার্সি পরে অনবরত জেব্রা নেমে যাচ্ছে।

কেঁচো

তুমি অনামিকায় অনেকগুলি আঙটি পরলে আমি তাকে কেঁচো বলব, বলব আঙুলটি নরম হয়েছে। আঙ্গুলটির ভোর হয়েছে এরকম কোন মাঘী ভোরে কোন ধানিমাটি অবসিত গন্ধে ভরে গেলে কেঁচোরা মাটির বাইরে আসে । মাটির ভেতরে ঢুকে যায়। এই চলাচল অরগ্যানিক ও উর্বর, ফসল প্রবণ। ভেজা গর্ত ধরে শ্লথ পিচ্ছিল ও ভেষজ চলে যাওয়ার তাদের, কোন লাজপতনগর আছে কোন দমদম ক্যান্টনমেন্ট। তাদের বাচ্চাকাচ্চা আছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে তারা ত্বকে আরও যত্নে পরফাইরিন মাখে, আরও ঈষৎ বাদামি হয় ও গর্তের সামনে এসে পতাকা ওড়ায়। নারকেল ছড়ি ধান পিড়িং শাক ও তারপর কাশের ফাঁক দিয়ে দ্যাখে বর্ধমান লোকাল। চলে যাচ্ছে। পর্ব এনিলিডা।

তিমি

মানুষের জলতেষ্টা পায় আর মানুষ বিসলারি কেনে। মানুষ ভোরবেলা খাবার পানি আসা নলের ট্যাপ ঘুরিয়ে দেয়।

জলের আর এক নাম জীবন। ফলতঃ নলের ভেতরে থাকা বাতাস ঠেলে জল এলে বোঝা যায় ভোরবেলা সেও ঘুম থেকে উঠেছে, গারগল করতে করতে সেও পরিষ্কার ও বিশুদ্ধিকরণের পথে চলে আসছে এখন এইখানে দুই করতল পেতে মেলে দিলে তা প্লেট হয়, ঈষৎ অবতল। মানুষের জলতেষ্টা পায়। শরীরের যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে মানুষ মুবারক জলওয়ালা নাম্বার সেভ করে রাখে, ফোন করে রাখে আর বিসলারি কন্টেনারের ওপর উপুড় করে দ্যায়। ট্যাপ ঘুরিয়ে দেখে
প্রকাণ্ড ঘূৎকারী জলের বাবল, বিশ লিটার বিসলারির ভেতর তিমি রয়ে গ্যাছে।

Facebook Comments

Leave a Reply