“রাষ্ট্রবহন – রাষ্ট্রযাপন” : জয়ন্ত ঘোষাল

“The first King was a fortunate warrior…”

একথা অনস্বীকার্য যে, মানবজীবনকে শৃঙ্খলিত করে তুলতে তথা আস্ত মানবিক সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই উদারবাদ – পুঁজিবাদ এমনকি সমাজবাদের সামাজিক অভিশাপ সহ্য করেও রাষ্ট্র নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল এই যে, রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানটি মানবিক প্রয়োজন হেতু আত্মপ্রকাশ করলেও (মানবীয় প্রচেষ্টা?) তার স্বীয় কেন্দ্রীভূত শক্তি তথা ষড়যন্ত্রের কাছে সেই মানুষেরাই অসহায় এবং সেই অসহায়তার নিরসনে পুনরায় রাষ্ট্রই ত্রাতার ভূমিকা পালনে অগ্রসর হয়। বলা বাহুল্য, প্রভাবেই রাষ্ট্র মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অথচ ঘৃণিত এক অঙ্গরূপে ক্রিয়াশীল থাকে।
এহেন সর্বশক্তিমান তথা সর্বগুণ সম্পন্ন রাষ্ট্র নিজেকে আরও বৈধতা দান হেতু ‘গণতন্ত্র’ নামক মুখোশ বা ছদ্মবেশ ধারণ করে। এই ছদ্মবেশের আড়ালে থেকে রাষ্ট্রের পক্ষে প্রবঞ্চনা করা আরও প্রমাদহীন ভাবে সহজ হয়।
বর্তমান দিনের রাষ্ট্রগুলি Relative Autonomy সম্পন্ন ভাবে প্রচারমাধ্যমকে নিজ ক্রীড়নকে পরিণত করে ফেলেছে। এখনকার দিনে সর্বদা টাকার পিছনে ধাবমান ভোগবাদী মানুষেরা রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপে অংশ নিতে বা নূন্যতম সমালোচনা করণেও অনীহা বোধ করে। এছাড়াও রয়েছে ধর্মের জিগীর। যেখানে রাষ্ট্র অতি সহজেই Divide and Rule and Manipulation-এর খেলাটি খেলতে সিদ্ধহস্ত। প্রান্তবাসী সাধারণ মানুষ সেক্ষেত্রে চেতনার অভাবে “কেষ্টা ব্যাটাই চোর” নামক ধারণার বশবর্তী হয়ে ধর্মের পেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। এই সুযোগে রাষ্ট্র মূল সমস্যা হতে সাধারণের দৃষ্টি সরিয়ে দিয়ে নিজেকে অতি সহজেই মহিমান্বিত করে ফেলে এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক দল তাদের Mutual Exploitative Relation বজায় রেখেই Political Hizacking-এর ক্রীড়ায় মত্ত হয়। ফলে সাধারণেরা সেই তিমিরে বা ‘স্বখাত সলিলে” অবগাহন করেই নিজেদের সন্তুষ্ট করে চলে।

[ক্রমশ]

[লেখক – অধ্যাপক, জর্জ স্কুল অফ ল, কোন্নগর, হুগলী]

Facebook Comments

Leave a Reply