অহনা সরকার-এর লেখা
একজন মানুষ
ধরা যাক একজন মানুষ রোজ একজায়গায় তার জিনিষপাতি নিয়ে বসে। নিজের ক্ষেতের বা হয়তো মাটির পুতুল বানান বা এরম কিছু। মাঝে মাঝে তার কখনও ইচ্ছে হলে তিনি আবার নানা জায়গাতেও বসেন, যেহেতু ভাড়া লাগে না বা কিছু খয়রতি তাই কখনো রাতের দোকানের সামনে কখনো বা বিকেলের কোনদিন দুপুর আসছে এমনও হয়। আবার কোথাও মেলা হলো কি হাট সেখানেও যান। একসময় বা বেশ কিছুদিন পর কখনো দেখা গেলো আরো কিছু মানুষ তার সঙ্গেই বা তার পাশে এসেই বসছে, তারা একে অন্যকেও চেনেও না, কথা হয় হয়তো কখনো আবার নয়ও বা।
এবার বেশ কিছু মানুষ তারা এই ব্যপারটাকে বেশ দেখে আসছিলো, তো তারা ভাবলো এরা নিজেদের মতো বসছে, তো আমরা কি করি আস্তে আস্তে এরা যেখানে যেখানে বসছে আমাদের নানা চিহ্ন রঙ দাঁড়ি কমা সেমিকোলন এগুলোও তাদের পাশে পাশে রাখি কখনও বা নিজেরা গিয়েও দাঁড়াই, তারা তো কিছুই বলছে না বলবেও না আশা করা যায়। সো এভাবেই একজন মানুষ তার বিক্রিবাটা আস্তে আস্তে তার অজান্তেই একদিন রঙ পেল প্ল্যাকার্ড, সেখানে আবার নানা রকম চিহ্নও! আরো মানুষ এসে জুটলো। তবে এই মানুষটা মানে সেই প্রথমের মানুষটা তখন আর প্রায় আসতেনই না, সেটা খেয়ালেও পড়েনি প্রায় কারোরই। সো আস্তে আস্তে গঠন হলো দল, এলো দল চালাবার নীতি এবং অবশ্যই একসময় সেই বিচ্ছিন্ন হেথা হোথা থেকে আসা মানুষগুলোকে সরিয়ে তারা জানালো এই জায়গাগুলো তাদের, এখানে আসতে বসতে বা দাঁড়াতে হলেও তাদের কথা শুনতে হবে মানে ক্ষমতা
সেই মানুষটা সেই প্রথম শুরুর মানুষটা এখন মাঝে মাঝে তাকে দেখা যায় রাস্তা হাঁটছেন, কাঁধে সেই ক্ষেতের কিছু শাকসবজি বা যা বানান হাতে তেমনি খুঁটি নাটি শোক
লজ্জ্যাসাথে
লজ্জ্যাবতী লতার সাথে কতদূর কথা বলা যায়? হাত ঠেকালে তুমি ছুঁলে তার মুখের ক্রন্দন দ্বেষ কুঁচিভরা রাগে বার বার শাপ হতে থাকা বর্ধিষ্ণু। কোমরের অল্প কাছে আহালোল বেদ বিনোদমোহিনী রাগ রাগের অপারগ পা পা করে বিছানো পদকদায়িনী সুন্দর।
নিত্যানন্দ নিতাইঘোরের রাতে রাগ দুখানাকে চেটে দেখেছেন নিজের হাত পরিশেক। কল্পমোহনায় আর দূর বিস্তৃত যাই দূর দূর শ্বাসঅনুরাগ কৃপৎকান্তি মোহনা দ্বারের ছিটকানিটা হালকা তুলেছো হালকা অজোল
বেনানী বেণীমাধব তার সুখের দুই স্থল
পূর্বাহা
পূরধার পূর্বাহা পূর্বাশা মেঘে
পূর্ণমিশুক
মিশমিশে কালোর বেশ। কালো তপতী নামা
তাপ কমতে কমতে কমাধার
তোমার দাঁড়ির বেগ গুচ্ছ তুলাতুলা আদিবেহাদী মুখে নরমে ওমে্ আঁ য় শ চারিধার আয়াশ শূন্য বিতাদন্ডী মা মদ্যপ ডুবিয়ে পানেন পানের চুমুক ঠোঁট দুটিকে জরাসন্ধ করে রেখেছো দেখছো চলকানো প্রতিবারের পর প্রতিবাদ
আহা আগুন ওঠে সন্ধ্যেপনা
আদিম আ শুক্রচক্র লোভে লাল লাল লালায়িত
য়ায়ের বেশ ভাগ
চুল পড়ে যাবার শেষে মুখ প্রতিবার খুঁজছি
মৌরি
একটা পুরোনো দিনের জঙ্গল, বাঁশপাতা দিয়ে মোড়া কিছু কাঠের ঘর। বসার জায়গা আছে একটা সেটানো বাঁধানো বাঁশের। যে মানুষটা মাটিতে পা রেখে আর একটা পায়ের ওপর পা তুলে বসছে, ফটোজনিক ক্যামেরায় তার বয়স আদি পশ্চাত্ত। সামনে তাকিয়ে আছে ঠিক কোথায় বোঝার উপায় নেই। এটা সম্ভবত চিনের কোথাও বা দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার কোনো গ্রাম
আমি কিছুতেই এই ছবিটা ছেড়ে নড়তে পারছি না। সামনে টালির চাল হাঁস মুরগি খেলছে উঠানে। দানা কিছু গমের মতোন ছড়ানো তাই খুঁটে খুঁটে, একটা ঠেলা গাড়ি আছে একদিকে কাৎ করে রাখা হেলে, মাটিতে কোমর নামিয়ে সে যেন নিজেকে চলবে বলে প্রস্তুত। এখানে একটা মানুষ আঁকা যায়, একদম এই ঠেলাটার সামনেই, ঠিক যে ভাবে সে দাঁড়ানো। কোমর নিচু পা দুখানা ভাঁজ করে সামনে বাড়ানো হাতের মধ্যে ঠেলার দু কাঁধ
থাক! পরে আঁকবো। ভেবে মুছে দিলাম।
নারকেল পাতার খড় সুপুরি আর কিছু ঝোপঝাড় চাপানো একটা ঘর ঠিক নয়। একটা গোল সিলিন্ডার তার মুখটা কেটে মাথায় এসব ঝোপঝাড় বানিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে। সিলিন্ডারটা খড় আর লম্বা লম্বা শুকনো ধান চওড়ার। একদম নিচের দিকে ঠিক যেন একটা বেশ বড় টায়ারের ওপর বসানো পুরোটা। সেটাও খড় ঘেরা তবে চওড়া। বেশ একখানা দড়িতে পুরোটা বেঁধে
সামনে পা বাড়াই। কাঠের বেড়া গেট খুলে ও! না এটা অন্য বাড়ির। এখানে কোনো গেট নেই। সামনে এগোলে দু পা প্রশস্ত চওড়ন সিঁড়ি জলেরা স্নান সারছে। ওই হাওয়ায় গিয়ে কিছুটা বসবো ভেবেও রঙ পেন্সিল বের করি। খাতার পাতা। জল আঁকছি গড়িয়ে আসছে। খাতা ধুয়ে আমার আঙুল পেন্সিল জামার ছিটে। এতক্ষণ পরে বুঝতে পারি আমি আসলে কিছু পরে নেই, জামা শার্ট
রেললাইন ধরে হাঁটছি। হলুদ শুকনো কাঠের মতোন কি সব, কোনো গাছের ছাল বোধহয় খোলস সমস্ত রেললাইন আশেপাশ, মাড়িয়ে যাবার শব্দ, মচ্। এখানে কোনো ট্রেন চলে না, বহুদিন আগে চলতো। এখন সাদা পাতায় পুরনো ঢেকে যাওয়া ময়ূর, মৌরি গন্ধ। হাতে নিয়ে চিবিয়েছি অল্প
Posted in: December 2019, Poetry