শানু চৌধুরী-এর কবিতা
ছেঁড়া চেহারার কবিতা
১.
মৃগশিশুর মতো হাতছানি দিয়ে ডাকছে কেউ। অথচ দুর্লভ চেষ্টার সম্মুখে পথ খুঁজি আমি। মোহনা থেকে ছিনিয়ে আনি খুনীর নিজস্ব পরিচয়। এই নাও সমস্ত তহবিল! দান শেষ হলে দিও আমায় পাঁজরের সকল ইতিহাস। শিশুর কপালে দিও সকাল শেষের রাজকীয় পলায়ন। এরপর। আমি দেখেছি আমার খিদে বেড়ে যাওয়া আকস্মিক
কবুতরের ডানা ,খিদের ভিতর থেকে হাসির ঠিকরে যাওয়া দেখে নেয়। তবু কিছু ছিল যা চন্দ্রবোড়ার মতো শীতল হয়ে গেছে। কিন্তু রক্তমাখা বরফ নিয়ে ভাবি এ স্বভাব আমি তোমায় দেব কেন? তুলে নেব নির্দিষ্ট ফণার ব্যাকরণ। রোদ্দুরে মেলে দেব মাখনে জর্জরিত কুহক। এই আমি চেয়ে এসেছি বহুবার কুঁজো হয়ে যাওয়া বর্ষার ভিতর।
২.
পরিশুদ্ধ হতে চাওয়ার মতো হলুদ ফুল। টিকলো আঙুলে আমি তোমার রেণু ছুঁয়েছি, এখন বলো হাত কত ধূসর হতে পারে। দীর্ঘ ছায়ার অবসরে গলানো গিনির মতো মধ্যঋতু ছিঁড়ে গেলে ঈশ্বরীর তীরে হু হু করে পাখির স্বর। আজ তবে একবার দ্যাখো গিলিয়াদ পর্বতের দিকে, সামান্য কথার আড়ালে তুলেছ যে অন্যমনস্ক শস্যদানা। তার কাছে আজ শপথ করে বলি সভ্যতা এখনও ভালোবাসে বদলে যাওয়া ছেলেটির সফল বুদ্বুদ।
৩.
এখনও বাঁশিটি ফেলে রেখেছ তিতিক্ষার শেষ সীমায়। তুমি স্পর্শ আর বোধের বিবেচনা নিয়ে আবিস্কার করেছিলে যেসব যন্ত্র! তার সকল পদক্ষেপ নিয়ে এক অন্ধ ভেঙে যাচ্ছে। কারণ? কারণ বলে হাতে কিছুই রাখোনি আর। মেঘের উল্লেখ থেকে কত ব্যস্ত সামান্য হয়ে পড়ছে।গড়িয়ে পড়ছে কারও রিফু হয়ে যাওয়া কিঞ্চিৎ বল্কল। এই নাও মেহগনির ভিতর ফুলে ওঠা এক সামান্য কাঠের সন্তান। প্রতিটা ডুবের ভিতরে সমুদ্র ও তার ভুলে যাওয়া পারস্পরিক নুন আজ অতীত। ফণার দীর্ঘতর, অপূর্ব সেই শক্তি আজ নির্বিষ। বিশ্বাস জন্মাচ্ছে এখন। উড়ে যাচ্ছে সিনেমার ভিতর শিথিল পর্দা। রুগ্ন আলোর ভিতর বসে আছি আমি আর আনন্দ।
৪.
বিন্দুর ধারণা থেকে তুমি যেতে পারো কোনো মঠের তীব্র প্রদীপে। যেখানে ভিতরের বিষ মুক্ত করে তুমি বলতে পারো শিশুদের হাতেই ছুঁয়ে দেখেছিলে প্রতিবিম্বহীন মিনারেট। অজস্র সাক্ষী আছে আজ, তবুও মানুষ গাছ ভেবে কেন এগিয়ে যায় তীব্র পেরেকের বিষণ্ণতায়! কলহ ফুরিয়ে এলে সন্ন্যাস বলে এক শব্দ এগিয়ে এসেছিল বার্তাবহ প্রজাপতির চোখে। এত উল্লাস ভালো নয়! জেনো নারোপার যোগ থেকে নাভি ছিনিয়ে নিয়েছ তুমি। যেখানে জোৎস্নার জন্ম ভেবে সম্ভৃতি সত্যের মাঝে আজও খুঁজেছো তুমি পাললিক নির্বাণ।
Posted in: November 2019, Poetry