সম্পাদকীয়

আমাদের আনুষ্ঠানিক বারোয়ারি যাপন সমাপ্ত হতে চলেছে। দুর্গাপূজো থেকে কালীপূজো গড়িয়ে গেল … হেমন্তের বৃষ্টির মতো এক দুর্লভ প্রান্তর থেকে আমরা আবারও ফিরে যাব নিজ অভ্যাসে। আমাদের ফ্ল্যাটবাড়ি, সুখী গৃহকোণ, টিভি, রেফ্রিজারেটর—আমাদেরই সাথে কথা বলবে, বংশবৃদ্ধি করবে আপন খেয়ালে। হেমন্তের সেই বৃষ্টি আবারও হয়ত এক বছরের অপেক্ষায় থাকবে নবমীর পঙক্তি ভোজনে। আবারও কোনও বারোয়ারি মণ্ডপে ‘আমাদের পূজো মণ্ডপ’ বলে পরিচয় করাবে কোন সদ্য যুবা।

রাত বাড়ার মতো আমাদের নাগরিক অভ্যাস একা হতে থাকে। রাষ্ট্রের ব্যর্থতায় অথবা সুপরিকল্পনায় আমাদের যাপন হয়ে ওঠে সামগ্রিক অর্থে এক বিষয়ীগত চ্যুতি। এই চ্যুতি ধারণ করেই কবি সেই প্রথম দেখা সূর্যোদয়ের চোখ নিয়ে তাকাতে চায় বারেবারে। হয়ত পাহাড়ের বাঁক থেকে যে মেঘ ভেসে আসে তার অপেক্ষায় স্তব্ধ হয়ে ফিরে দেখতে চায় সামগ্রিকতাকে। অগুনতি লাশের মধ্যে তার আর্তি রুধির নয়, ক্রিমসন রেড সূর্যাস্তের কাছে হাহাকার করে ওঠে…সেখানেই তার ফিরে তাকানো, মোড় ঘোরা।

আমাদের যৌথতার স্বপ্ন হয়ত বাবুই বাসার মতোই হাওয়ায় দুলতে থাকবে চিরদিন, আবারও বৎসরান্তে ফিরে যেতে হবে বারোয়ারি আনুষ্ঠানিকতায়। তবু যে উৎসবমুখরতাকে আমরা আমাদের যাপনের সাথে মেশাতে পারলাম না, ‘অপরজন’-এর এবারের আয়োজন তার আলোয়।

অপরজন
অক্টোবর, ২০১৯

Facebook Comments

Posted in: Editorial, October 2019

Tagged as:

Leave a Reply