অনুবাদ কবিতা : হিন্দোল গঙ্গোপাধ্যায়
গ্রীক কবিতা – অর্থনৈতিক অবনমন ও ব্যয়সংকোচের আলোকে
অষ্টম কিস্তি
[Source: The New War on Immigrants and Anarchists in Greece – An Interview with An Anarchist in Exarchia : https://crimethinc.com]
Thomas Ioannou (1979, Preveza, Greece)
টমাস ইওয়ানুয়ৌ এর কবিতা আন্তর্জালে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপ ও গ্রীসের সংকটের ভাষ্য তাঁর কবিতার মূল উপজীব্য। এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিউরোলজি ও মেডিসিন অধ্যয়ন করেছেন। ২০০৯ সালে চিকিৎসক হিসেবে তিনি আইওয়ানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। একই সালে তিনি ‘তা পোয়েটিকা’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীতেও জায়গা পান। টমাসের কবিতা ও গদ্য বহু পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছে। ২০১১ সালে তিনি সাহিত্যে গ্রীসের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন
মাননীয় আপোস
তাদের সংক্ষিপ্ত হাসি দিয়ে তারা তোমার সান্নিধ্যে আসে
তাদের সুষম তর্ক
তোমার পশ্চাতে চপেটাঘাত করে
যার মধ্যে মিশে থাকে অন্তরঙ্গ ঘৃণার পরিচিতি
তুমি লক্ষ্য করো, ওরা দখল নিতে শিখেছে
এমনকি আগামিকালের প্রতিপক্ষেরও
তাদের আসক্তির সাথে শান্তিচুক্তির জন্য।
মর্মরিত সৌধেরা
সমুদ্রে পাথর ছুঁড়ছে
যাতে তার অস্থিরতা থাকে স্থির
প্রথমে তুমি অনেক প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলে
আর তোমার যুক্তিকোণগুলো রেখেছিলে সুচারু
যদিও সেই কন্ঠস্বরের ভেঙে যাওয়া তোমার বিশ্বাস নষ্ট করেছে
সবশেষে তুমি মানতে বাধ্য ছিলে
যে বাকিরা তোমায় ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতিতেই রত
তোমার ঘাড়ে গিঁট শক্ত করে ওরা বাঁধবে
তাদের জিভেরা যেন দড়ি
তোমার দুঃখ ও আনুষ্ঠানিকতা ধার দিয়ে বেড়ায়
প্রতিটি আকস্মিক টান ও ভেংচি
জনমানসের মতের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে
তোমার প্রতিটি উচ্চারিত শব্দ বৈধতার জন্য ভিক্ষা করবে
এক দুর্বার ও বৃহৎ অতিজনের কাছে
আর কিছু বিবেকী তোমার উদ্দেশ্যনিরিখে প্রতীত না হয়ে যদি ভিন্নমত পোষণ করে
ক্ষমা চেওনা
আমরা কি এখন উদ্দেশ্য বিচার করতে বসেছি?
এটিই মূল বিষয়
যে তুমি সবচেয়ে খারাপকে অতিক্রম করতে পেরেছো;
এক বিশিষ্ট মাননীয় আপোসে
সহমত পোষণ করে
Krystalli Glyniadakis (1979, Athens, Greece)
ক্রিস্টলি গ্লিনিয়াদাকিসকে চট করে কোন শ্রেণীভুক্ত করা যায় না। তিনি জাতীয় টেলিভিশনে একটি বুক-শো’এর যুগ্ম আহ্বায়ক, একইসাথে বিখ্যাত গ্রীক সাহিত্য পত্রিকা নিয়া এস্থিয়া, পোয়েটিকস, দ্য বুকস জার্নালের প্রকাশক। মূলধারার কবিদের মত তিনি গ্রীক, ইংরেজি ও নরওয়েজিয়ান ভাষায় অনুবাদ এবং রূপান্তরের কাজও করেন। কিন্তু যা তাঁকে বিশেষ পরিচিতি দেয়, তা হল একটি সামাজিক নিরাময়কারী প্রকল্প হিসাবে কবিতাকে গড়ে তোলা। কবি ইভা স্টেফানিও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পড়েছেন ধর্মদর্শন। ইউনিভার্সিটি অফ এঙ্গলিয়া থেকে তিনি ‘ক্রিয়েটিভ রাইটিং’ নিয়েও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেছেন
পরবর্তী একশো বছর
তাই আমি নিজের সঙ্গে নিজেই বসে পড়লাম
আমাকে আর কি কি শিখতে হবে তাই দেখতে
আর পর্যায়ক্রমিকভাবে দক্ষ হতে হবে
এই পৃথিবীকে নতুন করে রঙ করার জন্য।
সব সংখ্যা ও সব যোগফল
বৈদ্যুতিন হয়ে গেল
কোন পাখি বা মাছ নেই
কিছুই নেই একই আগের মত
বা যা তারা পরিকল্পনা করেছিল;
শুধুই অসীম এক জালপ্রসারী তথ্যের ভান্ডার
যা বিজ্ঞান দ্বারা তৌল হয়
আর বাজারে বিকোয় পাউন্ডে।
আমি ভীত ছিলাম না
সময়ের সাথে দুনিয়া তো বদলাবেই
এইসময় জলকে না ছুঁয়েও থাকা যায়
আর পাখিদের জন্য শুধু পাখিরাই থাকে,
এইসময় আধ্যাত্মিক, নির্মল মানুষেরা
তারার ধুলোয় ফিরে যায়
তারা চলে যায়, কোন ক্ষমা ও গর্ব
আর সুবিচারের কোন কথাবার্তা ছাড়াই।
কেবলমাত্র মহাজাগতিক স্থিরতা।
আর আমরা, ছোট্ট তারা হয়ে
সেই শাশ্বত অন্ধকারে একটি একটি করে আলো জ্বালিয়ে চলেছি।
Posted in: October 2019, Translation