সুমন সাধু-এর কবিতা
এঁটোকাঁটো রান্নাঘরে
১
কে কার পাশে পাশে বসে আছে! এলোমেলো ভেবে কাটাই এই রান্নাঘরে। কেউ এসে আলো জ্বেলে দেবে। কেউ স্বীকার করে নেবে কড়াইয়ের তেলে বেগুন ছড়িয়ে দেবার ঋণ। একটা গ্লাস ধুতে ধুতে আমি কেবল ঋণমুক্ত হই৷ এদিকে কড়াইয়ে মিশে যাচ্ছে আমোরি সাধু ভাষা, চলিত ভাষা।
২
তারপর সন্তর্পণে তাহাদের কথা দেখি। দেখি জীবে প্রেম যেই জন করে। কীভাবে রোজ কামাই করে বিন্দি! পরেরদিন এলে বুঝিয়ে দেব টুকরো করে রাখা ফলে কীভাবে পোকা ধরে যায়। কীভাবে বেসিনের কল নিজেই ধুয়ে নেয় এঁটোকাঁটা দাগ। যাহোক যাহোক বলে আমার রান্নাঘরে ঢুকে পড়বে সকালের সূর্য। বাসি ডাল গরম হলেই মাখো মাখো হয়ে উঠবে ভাত।
৩
পড়ন্ত বিকেলে ভাষাদের ভাজা ভাজা গান শুনতে পাই। সরু সরু পটলের গলায় বিষের মতো শুধু বীজ ঢুকে আছে। সা থেকে সা পর্যন্ত যাওয়ার পথ বড়োই লম্বা। তাতে নুন-হলুদ দিই। পরিমাণমতো তেল, লঙ্কা, জিরের মতো দীর্ঘ সেই পথ। একবার শেষ হলেই শুরু হয়ে যাবে পরবর্তী নিবেদন। মাখো মাখো নিঃশ্বাসের ঠিক নিচে বসে থাকবে প্রিয় বন্ধুটি।
কতদিন দেখিনি তাকে এ ফাঁকা রান্নাঘরে।
কতদিন দেখিনি তাঁকে এ ভরা রান্নাঘরে।

পরিচিতি : রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, বেলুড় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। সঙ্গে গ্রুপ থিয়েটারে যোগদান। ২০১১ সাল থেকে সম্পাদনা করছেন ‘আঙ্গিক’ পত্রিকা। বর্তমানে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত৷ প্রথম লেখা প্রকাশ ২০১১ সালে ‘জিজ্ঞাসা’ পত্রিকায়। পাহাড়ের প্রতি সুমনের প্রেম ছেলেবেলা থেকেই। প্রকাশিত কবিতার বই তিনটি – ‘বিশ্বাস নাও করতে পারেন’ (ধানসিড়ি, ২০১৮), ‘গওহর জান’ (তবুও প্রয়াস, ২০১৮) এবং ‘উড়তে চললাম কমরেড’ (আজকাল, ২০১৯)।
Posted in: Poetry, September 2019