জ্যোতির্ময় বিশ্বাস-এর কবিতা
পুষ্পরানী
আনন্দ কীর্তনিয়ার সঙ্গে ছিলো প্রেম। সূর্যপূজার নাড়ু আর ধূপের গন্ধঅলা মরসুমে আনন্দ কীর্তনিয়া আসতেন পাড়ায়। পদাবলী গেয়ে চলেও যেতেন। একবার শীতকালে; বড় বড় সব বাস যতদূর যায়– কীর্তনিয়া, শেষবার, তারও চেয়ে বহুদূর গেলেন চলে। হয়ত বৃন্দাবনে, যেখানে যাবার কথা প্রায়শই গানে গানে বলতেন। পুষ্পরানী বিধবা মায়ের সঙ্গে কাঁথা ভাগাভাগি ক’রে তখনও শুয়ে। এবং শুয়ে থাকলো সেভাবে একশো বছর। একশো বছরে কাঁথাটি ছেড়েনি, আবছা বেগুনি রং জামের মত সে শীতও কাটেনি পুষ্পরানীর।
তাই আজ যদিও বর্ষাকাল, পুষ্পরানীর প্রয়াণ দিবসে দেখা যায়– বৃষ্টি পতনের ঘ্রাণ সরিয়ে চারিপাশ শিশিরপাতের শব্দ দিয়ে ভরা।
কাঁথার ভিতরে মা’ও নেই। যথাসময়ে
চলে গেছে সে।
স্বামীও ছেড়েছিলো সেই কোনদিন। শীতকাল, পদাবলী আর আনন্দ দোষে।
তারা
বাড়ি ফিরতে ফিরতে বাসস্থান
অনেক বড়ো হয়ে যাবে নিশ্চয়
যদি তেমন হয়, আমি কিছুটা বুঝেছি
আর তারার চোখেও শালুক ভাসা জল-
উঠান তোলপাড় করে
মানুষ না পাই নিমফুলের গন্ধ খুঁজে নেব।

পরিচিতি : বসবাস ধূপগুড়িতে। কবিতা চর্চাই প্রধান ভালোবাসা। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ – “অশ্রুভাবনা গুলি”।
Posted in: Poetry, September 2019