অনুবাদ কবিতা : হিন্দোল গঙ্গোপাধ্যায়

গ্রীক কবিতা – অর্থনৈতিক অবনমন ও ব্যয়সংকোচের আলোকে
সপ্তম কিস্তি

Apostolos Thivaios (Athens, Greece, 1980)

বর্তমানে ঘটে চলা ঘটনা ও সংকট এপোস্টলস থিভাইওসের কবিতায় কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে ওঠে| বহু অনলাইন পত্রিকায় এপোস্টলসের কবিতা প্রকাশিত হয়েছে| তিনি এথেন্সে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং বর্তমানে ব্যাংকে কাজ করেন। তাঁর লেখা একাধিক সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখ্য, পোয়েইন (https://www.merriam-webster.com/words-at-play/the-history-of-the-word-poet) গোষ্ঠী প্রকাশিত ২০০৯ সালের আলম্যানাকে(বর্ষপঞ্জী) তাঁর কবিতার অন্তর্ভুক্তি| লেখাগুলি তাঁদের ওয়েবসাইটে, পাশাপাশি 24grammata.com-এ পাওয়া যাবে।

যা এড়ানো যায় না

যখন আমাদের সময় ফুরিয়ে আসবে
বয়স বেড়ে যাবে
হাঁটু কাঁপবে অঙ্গবিক্ষেপের ধাক্কায়
আমরা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে থাকবো
তীব্রভাবে তাকিয়ে দেখব একে অপরের দিকে
পরস্পরের সাথে গভীরভাবে মিশে যাব
আর তখন আমাদের মনে পড়বে
পথে বাতি জ্বালিয়ে
আমরা একদিন একটা বড় জাহাজে ভেসে পড়েছিলাম
তারপর দুর্বৃত্তদের বাঁচানো হল
ছেয়ে গেল অন্ধকার
আর জবাই করা মানুষের আর্তনাদ শুধু
শোনবার মত রয়ে গেল
মরসুমি বিস্ফোরণের এই পর্যায়ে
প্রজন্মের খুব কম সদস্যই বৃদ্ধ বয়স অবধি যেতে পেরেছে
শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে তারা অবাক হয়ে দেখছে
এত হুমকি ও চাপের মধ্যেও আমরা বেঁচে থাকতে পেরেছি
যারা আমাদের দূর থেকে সম্ভাষণ করে
তারাই আমাদের পুরোনো বন্ধু
যাত্রাপথে সঙ্গ দিতে কখনো তারা এসে পড়ে
তাদের কণ্ঠস্বরের জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে ছিলাম
সিংহনাদে যা বলবে
ওঠো, এগিয়ে চলো
এইই প্রকৃত সময়
যেন আদেশের ভঙ্গিতে বলবে
তোমার উনুন
শহর, থামগুলো
ও জেলখানা ফেলে বেরিয়ে এসো
আর সেই ক্যাফেগুলোও
যাদের একদা পাহাড়ের নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছিল

বাস্তব

সমস্ত জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে গিয়েছে
বাড়ির সবাই চলে গেছে দূরে
সেই চমৎকার রাজকীয় পশুরা|
গতিহীন চোখের মূর্তি
সৌধে রাখা হল টোল বুথ হিসেবে
সেইসব মানুষদের জন্য যারা অন্য সময়ে বাস করছে
আর ভবিষ্যতে খুঁজে পাবে
সেই হাতগুলো
খুলির কিছু টুকরো
খুঁজে পাবে শূন্য চোখেদের|
পরবর্তীকালে
অতি সংবেদনশীল চলচ্চিত্রে
ছবিগুলো দেখে তারা আত্মীয়দের উল্লেখ করবে|
প্রশস্তিপত্রে তারা লিখবে
কিভাবে সমস্ত জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল|
সব খুঁতগুলো বিচার করে করে,
শবগুলো তারা পরীক্ষা করবে
পাহাড় ও উদ্যানের জলাশয়ের মধ্যে|
ক্ষয় এক সাধারণ পদ্ধতি
আবেদনের সহায়তা খুঁজতে খুঁজতে
মানুষ বৃদ্ধ হবেই |
কিন্তু তবু এই বিবর্তন ঝুঁকিপূর্ণ
কোনো সরকারি কর্মচারী
এক কৌতুককর পদে আসীন থেকে
শেষকালে
শুধু রেজিস্ট্রি বইয়েরই শরণাপন্ন হবে
এখানে একজন পূর্ণাঙ্গ জীবিত মানুষ যে ছিলেন
তা রয়ে যাবে ব্যাখ্যাতীত|
প্রবলভাবে এখন সবাই রাতের দিকে তাকিয়ে আছে
মূর্তি বজায় রেখেছে তার শাশ্বত দৃঢ়তা
মুখে ঠাসা প্লাস্টারের ঠুলি
বয়সজনিত শব্দদের আটকে দেয়|
সেইসব জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া আসলে ছিল অপ্রয়োজনীয়
অর্থহীন এত সন্দেহের উপস্থাপন
এত বক্রোক্তি
আমাদের ভালোবাসার মানুষেরা
আমাদের বন্ধুরা
আর কখনো ফিরে আসবে না কোনোদিন

Facebook Comments

Leave a Reply