জলের স্বাধীনতা, জলের অধিকার : চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য

ঘটনাস্থল রাজস্থানের উত্তর প্রান্তে গঙ্গানগর জেলার অনুপগড়। বিধানসভা ভোটের আগে স্থানীয় কৃষকরা বামপন্থী প্রার্থী পবন দুগ্গলের নামে স্লোগান দিচ্ছিলেন–

‘দুগ্গল জয়পুর যায়েগা

পানি লেকে আয়েগা।’।

দুগ্গল ভোটে জিতে জয়পুর যেতে পারলে অনুপগড়ের কৃষকদের চাষের জন্য জলের বন্দোবস্ত করবেনই। এখানেই দেড় দশক আগে সেচের জলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে সাতজন শহীদ হন। শহিদ স্মারকে দাঁড়িয়ে পবন দুগ্গল শপথ নিয়েছিলেন, ‘চাষের জন্য জল চেয়ে ওঁরা শহীদ হয়েছিলেন। যতদিন না ঘারসানার মান্ডি ফসলে ভরে উঠছে ততদিন শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে না’।

ফিরে আসি এই রাজ্যে। ‘গঙ্গার পশ্চিম কূল বারাণসী সমতুল’। গঙ্গার পশ্চিমে গায়ে লাগোয়া বালিঘাট। সেখান থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে রাজচন্দ্রপুর। রাজা জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় নিজের খরচে তৈরি কলেজের ব্যয় নির্বাহের জন্য এই গ্রাম পত্তন করেছিলেন। সকাল হতে না হতেই ‘কোলে কলসী-কাঁখে কলসী ছা-বুড়ো-মদ্দ-জোয়ান’ ছুটছেন স্টেশনে। শিয়ালদহ গামী ট্রেনে হৈ-হৈ করে উঠে পড়লেন, একেক কামরায় ২০টি, ২৫টি ৩০ লিটারের জ্যারিকেন। নেমে পড়লেন পরের দক্ষিণেশ্বর বা বরানগরে। পুরসভার কলের জল ভরলন, ফিরে গেলেন রাজচন্দ্রপুর। হাতে ভারি ভারি জলের ড্রাম নিয়ে সিঁড়ি ভাঙে বিশাল উঁচু প্ল্যাটফর্মে উঠছেন ৪০-৫০ বছর বছরের গৃহবধূরা। এলাকায় কুয়ো বা টিউবওয়েলের জলে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন, পানের অযোগ্য। পঞ্চায়েত নির্বিকার। কয়েকমাস আগেও এটাই ছিল ৭২ বছরের নিত্যকার ছবি।

এমন ছবি অনেক। সারা দেশজুড়ে এমন লাখ লাখ জলছবি। উত্তর প্রদেশের যোগী সরকার বান্দা জেলায় কেন নদীতে ২৪ ঘন্টা পুলিশ পাহারা বসিয়েছে। কারণ, বেআইনী বালি মাফিয়ারা নদীর জল অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বালি কাটছে। জল নিতে আসলে ঝামেলা হলে মাফিয়ারা সরকারকে ছেড়ে কথা বলবে না। আবার, গুজরাটে নর্মদার জল যাতে দলিতরা ছুঁতে না পারে, তার জন্য পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। পাছে, নর্মদা অপবিত্র হয়ে যান। হায়, মা পতিতউদ্ধারিনী!

এই যখন অবস্থা, তখন ছত্তিশগড়ের শেওনাথ নদীর একাংশকে একটি বড় বাণিজ্যিক সংস্থার ‘রক্ষিতা’ করে রাখা হয়েছে! বন্দিনী রক্ষিতা, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘ক্যাপটিভ’। ১৯৯৮ সালে রেডিয়াস ওয়াটার লিমিটেড নামে এক কোম্পানির সঙ্গে তৎকালীন মধ্যপ্রদেশ সরকার চুক্তি করে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, শেওনাথে একটি ব্যারেজ বানিয়ে দুর্গ জেলার বোরাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের এর জন্য দিনে ৪ কোটি গ্যালন জল শেওনাথ নদী থেকে নেবে রেডিয়াস কোম্পানি। পরের ২২ বছর পর্যন্ত এভাবে জল নেবে। এই ব্যারেজ বা তার আশেপাশে অন্য কারও নদীর উপর কোনও অধিকার থাকবে না।

এই নদীর পাশেই দুর্গের মহামারা গ্রামের মানুষ পড়েছেন মহা বিপদে। এই নদীই তাঁদের জীবনরেখা, অথচ মানুষেওর অধিকার সেখানে নেই। নেই মানে, খাওয়ার জল, সেচের জন নেওয়ার অধিকার নেই। জামাকাপড় কাচার অধিকার নেই। স্নানের অধিকার নেই। মাছ ধরার অধিকার নেই। এমননি নদীর বালিও তোলার অধিকার নেই। ছত্তিশগড় আলাদা রাজ্য হওয়ার পর ২০০৭ সালে বিধানসভায় এই চুক্তি বাতিল করে রেডিয়াসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেয় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি। ব্যবস্থা কিন্তু নেওয়া হয়নি। গ্রামবাসীরা লড়ছেন শিবের নামের নদী শেওনাথের মুক্তির দাবিতে।

২০১১ সালের শুমারি অনুযায়ী, চেন্নাইয়ের বাসিন্দা ৪৬ লাখ। ২০১৭ সালের সরকারি হিসাবে, শহরের মাত্র ৬.৫৫ লাখ পরিবার পাইপলাইনে প্রতিদিন মাথাপিছু ১২০ লিটার জল পায়। গরমে সেটা কমে হয় জনপ্রতি ৭০ লিটার। বাকিরা প্রাইভেট ট্যাঙ্কার মাফিয়ার উপর নির্ভরশীল। চেন্নাইয়ের বস্তিতে বসবাসকারী ৮.২০ লাখ মানুষের কিন্তু ট্যাঙ্কারের জল কেনার ক্ষমতাই নেই। চম্বল-লাগোয়া বুন্দেলখণ্ডের লোকজন সকাল সকাল কলসী-বালতি-ঘড়া নিয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটছেন ট্যাঙ্কারে আসা জল যতটা সম্ভব নিয়ে যেতে। বুন্দেলখণ্ডে মাথা ফাটাফাটি হয়েছে কয়েক ফোঁটা জলের জন্য। তাদের জলের স্বাধীনতা দয়া দানের ট্যাঙ্কারের চাকায় বাঁধা। মারাঠাওয়াড়ায় মানুষ ট্যাঙ্কারের উপর এতটাই নির্ভরশীল যে এলাকাটিকে অলিখিত নামই হয়ে গিয়েছে ‘ট্যাঙ্কারওয়াড়া’। মারাঠাওয়াড়ার ফুলামব্রিতে জলের ট্যাঙ্কারের থেকে চুঁইয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা জল ধরে রাখতে এক মহিলা ছুটছেন, এই ছবি দেশবাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ব্যাঙ্গালুরুর ট্যাংকার মাফিয়ার প্রধান বেল্লারির খনিমাফিয়া রেড্ডিরা রাজনীতিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে সরকারি ট্যাঙ্কার আছে ১২৫টি, তার জল পাওয়া যায় বিনা পয়সায়। বেসরকারি আছে ৬,৩৮২টি। সেই জল নগদ কড়ি ফেলে কিনতে হয় গরিব কৃষক, মজুরদের।

 

শব্দশহিদ হয়, জলশহিদ হয় না?

শুধু বুন্দেলখণ্ডেই নয়, জলের জন্য মাথা ফাটাফাটি হয়েছে মধ্যপ্রদেশ, চেন্নাইতেও। মধ্যপ্রদেশ সরকার মারামারি রুখতে ৫২টি জেলার জলের উৎসে পুলিশ বসিয়েছে। জলের জন্য মারামারি, খুনোখুনি এখন নতুন আভিধানিক নাম পেয়েছে ‘ওয়াটার রায়ট’। মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ব্যাঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, চেন্নাই সব জায়গা থেকেই খবর এসেছে ‘জলের জন্য দাঙ্গা’ বা ওয়াটার রায়ট-এর। জনৈক সুভাসিনী নামে মহিলা একটু বেশি জল নিচ্ছএন দেখে তামিলনাড়ুর স্পিকারের ড্রাইভার আথিমুলান রামকৃষ্ণন গিয়ে তর্কাতর্কি শুরু করেন। ঝগড়া চলা কালেই সুভাসিনীর গলায় ছুরি চালিয়ে রামকৃষ্ণন জেলে, সুভাসিনী হাসপাতালে। তাঞ্জাভুরের প্রতিবেশীদের বঞ্চিত করে কুমার নামে একজন ওভারহেড ট্যাঙ্ক থেকে বিরাট বড় ড্রামে জল ভরছে দেখে বাবু নামে একজন তাতে আপত্তি জানায়। কুমারের ছেলেরা বাবুকে বেধড়ক পেটায়, বাবু মারা যায়।

বাজি ফাটানো নিয়ে আপত্তি জানানোয় একজনকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল হুগলির এক গ্রামে। তাঁকে শব্দশহিদ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। জলের জন্য এমন শহিদের তালিকা তৈরি হলে কতজনের নাম ঢুকবে, কোনও আন্দাজ আছে। জলশহিদের সংখ্যা লাখ লাখ। আর, যারা পানীয় জল না পেয়ে মারা যাচ্ছেন, তাদের কি শহিদ বলা যাবে? এই মৃত মানুষদের অধিকাংশই গ্রামীণ কৃষিজীবী না হলে শহরের দরিদ্রতম অংশ।

সরকার মানুষকে ভয় দেখাতে ওস্তাদ! নীতি আয়োগ, যার নিজস্ব কোনও সমীক্ষা বা গবেষণার ক্ষমতাই নেই, ঘোষণা করেছে, আগামী বছরের মধ্যে দিল্লি, বাঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ-সহ ২০টি শহরের ভুগর্ভে জল থাকবে না। ২০৩০ সালে দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ পানীয় জল পাবে না। ঘরে পানীয় জল পান মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ। ১৩০ কোটির ভারতবাসীর ৬০ কোটি নাগরিক জলসঙ্কটে। প্রতি বছর ২ লাখ মানুষ জলের অভাবে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু, কিসের ভিত্তিতে বলা হল, ২০টি শহরের ভুগর্ভে পানীয় জল পাওয়া যাবে না? যেখানে পানীয় জল থাকবে না, সেখানে কি কোকাকোলা, পেপসির কারখানাগুলি, যারা প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ গ্যালন জল তুলছে, তাদের কারখানা বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে? অতিরিক্ত জল লাগে আখ, সোয়াবিন, বোরো ধান চাষে। এসব চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে? জলসঙ্কটের ‘লার্জার দ্যান রিয়েলিটি’ প্রচার কি জলের কর্পোরেটাইজেশন প্রক্রিয়া?

জলের অধিকার : সংবিধানে স্পষ্ট নয়

কিন্তু কিসের জন্য এই লড়াই? জল তো প্রকৃতির সম্পদ। কারো যদি যথেচ্ছ পরিমান জল মাটির তলা থেকে তুলে নিয়ে ব্যবসা করার স্বাধীনতা থাকে, অধিকার থাকে, মানুষের কি সামান্য প্রাণ ধারণের জন্য জলের স্বাধিনতা, জল পাওয়ার অধিকার আছে? জলের স্বাধীনতা হয়? অধিকার কি আমাদের স্বীকৃত অধিকার? মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞায় কি জল আছে?

ভারতে এই পর্যন্ত একটি রাজ্যই আছে, যারা জলের অধিকারকে আইন করে স্বীকৃতি দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সেই রাজ্যে এই আইন চালু করে প্রথম প্রশাসনিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই আইনে প্রত্যেক নাগরিক দিনে ৫৫ লিটার জল পাওয়ার অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এই ঘোষণা করার সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাশে রেখে বলেছেন, আগামী দিনে গ্রামাঞ্চলে, যেখানে জলের সঙ্কট বেশি, সেখানে জলের পরিমান আরও বাড়ানো হবে। বর্তমান ভারতে, যেখানে জলের অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ২,০০,০০০ ছাড়িয়ে যায়, সেখানে এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই অভিবাদন যোগ্য। কমল নাথ বলেছেন, জীবনধারণের আবশ্যিক উপাদান জল সংবিধানের ২১ ধারায় মানুষের বাঁচার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত। সৌরভ কুমার বনাম মামলাও প্রণিধানযোগ্য। সৌরভ কুমার মামলাটি করেছিলেন বোকারো নদীতে কোল ওয়াশারির বর্জ্য ফেলার বিরুদ্ধে। সেই মামলাতেই আদালত বলেছিল, সংবিধানের ২১ ধারায় জীবনের অধিকারের সঙ্গেই জুড়ে আছে দূষণমুক্ত পরিবেশে বাঁচার অধিকার।

কিন্তু, এটাও ঘটনা, সংবিধানে স্পষ্টভাবে জলের অধিকার বলে কিছু নেই। জীবনের অধিকার থাকলেও জলের নেই। কেউ কেউ এটাকেই সুস্থ ও পরিচ্ছন্নভাবে বাঁচার অধিকারের অঙ্গ হিসাবে দেখেছেন। সে কারণেই মধ্যপ্রদেশ সরকারকে জলের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে আইন করতে হয়েছে। জলের দাবিতে আদালতে দুটি গুরুত্বপপূর্ণ মামলাও হয়েছে। দিল্লি ওয়াটার সাপ্লাই বনাম হরিয়ানা সরকারের একটি মামলা এক্ষেত্রে উল্লেখ্য। হরিয়ানায় সেচের ব্যবস্থা পুরোটাই যমুনা নদীর জলের উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, দিল্লিতে যমুনার জলের উপরই পানীয় জল সরবরাহ নির্ভরশীল। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, নদীর জলের বাণিজ্যিক ব্যবহারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পানীয় ও অন্যান্য গার্হস্থ্যকাজে জলের ব্যবহার। অর্থাৎ, নাগরিক জীবনের জলের দাবি ওধিক গুরুত্ব পাবে। কেন বা শেওনাথ নদীর জলের প্রশ্নে এই যুক্তিটি খাটে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্বীকৃতই আন্তর্জাতিক আইন

জলের অধিকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অবশ্য আছে, এবং ভারত সরকার সেই সনদের স্বাক্ষরদাতাদের অন্যতম। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ ২০১০ সালের ২৮ জুলাই হিউম্যান রাইটস টু ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন অনুমোদন করেছে। ভারত তার স্বাক্ষরকারী বলে এই আইনটি ভারতেও প্রযোজ্য। সেটি এখন আন্তর্জাতিক আইন হিসাবে গণ্য হয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ১১.১ অনুচ্ছেদের ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন ইকনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস’-এর থেকেই উদ্ভূত। অনেকের মতে, রাষ্ট্রসঙ্ঘে ১৯৭৯ সালে অনুমোদিত মহিলাদের প্রতি সব রকমের বৈষম্য দূরীকরণ কনভেনশনের বা ‘সেডাউ’ (Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women)  এবং ১৯৮৯ সালে অনুমোদিত শিশুর অধিকারের কনভেনশনের প্রস্তাবের নিট সফলতা। ২০১০ সালে গৃহীত প্রস্তাবে জলের অধিকারের সঙ্গে জলের পরিচ্ছন্নতাও (স্যানিটেশন) যুক্ত ছিল। ২০১৫ সালে জলের অধিকার ও স্যানিটেশনকে আলাদা করে বলা হয়েছে, এই দুটি পৃথক হলেও দুটিই সমান গুরুত্বের। আরও স্পষ্ট করে এই বিষয়টি এসেছে  বৈষম্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের ২০০২ কমিটি অন ইকনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস-এর কমিটির সিদ্ধান্তে। সেখানে বলা হয়েছে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে জলের সহজলভ্যতা এবং সেই কারণেই এটি অধিকারের পর্যায়ে পড়ে। (“The human right to water entitles everyone to sufficient, safe, acceptable, physically accessible and affordable water for personal and domestic uses.”)

ভারত সরকার কি মানবে, তার বিশ্ব মঞ্চে তার নিজেরই স্বীকৃতি দেওয়া এই ঘোষণাপত্র ও আইনসমুহ? যদি মানে, তাহলে কি কেন নদীতে রক্ষী বসিয়ে, শেওনাথ নদীর একাংশকে বেসরকারির রক্ষিতা বানিয়ে, কোকাকোলা-পেপসিদের বেপরোয়াভাবে পানীয় জল দূষণ করতে দিয়ে মানুষকে বঞ্চিত করতে পারে? কেরালার প্লাচিমাডায়, আহমেদাবাদে, বারাণসীর মেহন্দীগঞ্জে মানুষ লড়াই করে কোকের কারখানা বন্ধ করেছে পানীয় জলের অধিকারের লড়াই লড়ে। বিশ্বে বহু জাগ্যা থেকেই এই লড়াইয়ের কারণে সরতে হয়েছে কোক-পেপসিদের। আক্ষরিক অর্থেই মানুষ লড়াই করে জলের অধিকার কায়েম করছে।

মনে পড়ছে বহুবার শোনা সেই গানের কথা —

“অধিকার কে কাকে দেয়, পৃথিবীর ইতিহাসে!

কবে কোন অধিকার, বিনা সংগ্রামে পাওয়া যায়।

অধিকার কেড়ে নিতে হয়

অধিকার লড়ে নিতে হয়।”

–সেই পথে এইভাবেই জলের স্বাধীনতাও অর্জন করতে হবে। অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

[লেখক – কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক।]

Facebook Comments

Leave a Reply