সুদীপ্ত সেন-এর কবিতা
নাছোড়বান্দা মেয়ে
১
ধোঁয়ার খবর কেউ রাখেনা, উড়ন্ত সেই ধোঁয়ার খবর
ছেলের তখন মেজাজ শরীর ক্লান্ত হয়ে অফিস ছুটির।
প্রত্যেক দিন আসত ছেলে সন্ধ্যে হতো কলেজ স্কোয়ার
তখন স্কোয়ার তাপ বিকিরণ, মিলিয়ে যেত প্রচুর জুটি।
হঠাৎ সেদিন আলত হয়ে উড়ল ধোঁয়া ছেলের ঠোঁটে
এমন সময় ক্লান্ত চোখের সামনে প্রচুর প্রেমের গ্যাদার
হঠাৎ কেমন পিছলে গিয়ে চোখ চলে যায় কানের দুলে
মেয়েটা কিন্তু মেডিকেলের, নার্সিং মেয়ে, second ইয়ার।
এইরকমই চলল তাদের আলাপ-বিলাপ, প্রথম কথা
তারাও এখন দুই-সুজনে মিলিয়ে গাছে বসতে পারে
তারাও দুজন সন্ধ্যে হলে উঠত গায়ে কলেজ স্কোয়ার
এবার তারা বিদায় জানায় ঠিক ঠিকানায় নিজের ধারে।
২
বর্ষা বিকেল গল্প হতো সেই মেয়েটার ছোট্টোবেলার
গল্প হতো অনেক কিছুই, গল্প গায়ে আলোর চলন।
একটু করেই কেমন যেন গড়িয়ে এলো কাছে আসা
ভিজত ভিজে শরীর দুটো তাপের গায়ে তাদের গলন।
একটা কেবল তুফান ছুটে ছিটকে এলো ভাগ্যরেখায়
সব স্বপ্নই এদিক-ওদিক টুকরো স্মৃতির জাল বুনেছে
থমকে গেল আলাপ যত কথার গায়ে সুতোর বুনন
নাছড়বান্দা মেয়েও কিন্তু শক্ত মনে সব শুনেছে।
একটা কলেই বলল ছেলে, বিদায় জানাই, ভেবো অতীত—
আবার তুমি নতুন করে অন্যকোথাও বন্ধ হইও।
মেয়েটা কিন্তু মানতে নারাজ, তা একটা চুমুই বুঝিয়ে দিলো——–
বরং এবার থেকে সব বিপদেই তোমার পাশে আমাকে নিও
বেশ, এবার থেকে সব বিপদেই তোমার পাশে আমাকে নিও।।
অটোচালক
পেরিয়ে নিয়ে যায় এসব শহরে, নতুন পথ চিনে চলছে দৌড়
তোমার আলো এসে পড়ল হঠাৎই, পেশায় পেট চলে অটোর জোর।
শহরে নতুন এক আমিও বোকা-বোবা, তার ওপরে রাস্তা কই?
পেরিয়ে থেমে থেমে গিয়ার দেবে চলি, নতুন অটোহাত, পোক্ত নই।
তবুও চলছি পাশের পাড়া দিয়ে, মিলিয়ে রাখা আছে কুর্তী তোর
সেদিন দেখা ওই তোরই জামা ওটা, আমার চোখ তাই ড্যাম শিওর।
আমার পেট চলে অটোর চলা দিয়ে, আমার চোখ থাকে কার ওপর
সেদিন দেখা ওই কুর্তী পড়া মেয়ে, হচ্ছে আজকে খুব ঠাওর।
তবুও ফাঁকা কই কে যেন ছিল সাথে, আমার সাথে ছিল যাত্রী ভীড়
তবুও ফের হোক, অন্যদিন হোক তোমার সাথে কথা নদীর তীর।
ভেজাপথ
রাত নেমেছে রাজপথের ওই আস্তিনে
কোন পথে আজ হাঁটব এই রাতচিনে।
নীল শাড়িটা হঠাৎ ভিজে বৃষ্টিতে
হালকা দুটো আলোর ছটা দৃষ্টিতে।
হলুদ কালো ট্যাক্সি চলে শূন্যদিক
তোমার আঙুল সময় নিয়ে আমায় নিক।
হাঁটছি কেবল ভিজল শাড়ি, বৃষ্টি, গা
চুমুর হিসেব বন্ধ দোকান কার কি’বা।
আগলে ধরে কাছেই এনে ঠোঁট চাওয়া
ঠোঁটের মাঝে বৃষ্টি এলো আর হাওয়া।
সেই হাওয়াতেই ফিরব বাড়ি, আজনা, থাক।
বৃষ্টি ভিজে শাড়ির আঁচল মুর্ছা যাক….
একটু কাছে, আরও একটু, ভাঙছি কীসে?
তোমার বুকের ক্লিভেজ চেনার এইতো হিসেব।