রিপন হালদার-এর কবিতা
চিৎকার সরণী-১
জলপ্রপাত অথবা সিঁড়ি হবে বলে স্থির ভেসে আছে তোমার দাঁতের সাদা। মানচিত্র থেকে উঠে লম্বা নদীটা হঠাৎ কোমোডের উপর বসে দ। এরপর, এভাবে এই বিশ্বপর্যটনে তোমার চামড়ায় ফেয়ারনেস হয়ে আর কতক্ষণ থাকা যায়! কতক্ষণ হ্যাকারকে বলে যাবো আমি ছাড়া আমার আর কোনো পাসওয়ার্ড নেই! কাউকে বলিনি জানো, আজকাল আমি কোথাও থাকি না। রাস্তাগুলোকে ভাঁজ করে রেখে দিয়েছি পকেটে। মীমাংসার মাংসহীন অসহযোগে আমি সবসময়। টাঙিয়ে রাখি মাইনাস। তাতে তোমাদের ট্যাগ এসে বসবে কিনা জানি না। এভাবে আমার ভ্রমণ সমগ্র হতে চেয়ে পাথর। গড়িয়ে চারকোনা থেকে গোল, গোল থেকে মিনিবাস। হঠাৎ যেন দাঁড়িয়ে আছো পোশাক। বাকিটা মাংস-রক্ত-হাড়-স্নায়ু পরম্পরার ছলকে পড়া বিজ্ঞাপন। ঘুমে। চোয়াল শক্ত করো আরো! জাগরণের তীব্র কামড়ে শুষে নাও। যত স্টোনচিপ। যত রঙিন চলটা আকাশের। চাকায় স্পোকে যত ভুল জড়িয়ে গিয়েছিল, হাওয়ার আঁশ। যত অক্ষর দল বেধে সুতো হয়ে সরু, আরো আঁকড়ে ধরেছিল বিন্দু। তোমার পা। সবই তো সিল্ক জানা রুট। শিখে নিয়েছিলে কীভাবে পিছলে যেতে হয় অভিধান। ধানক্ষেত থেকে সমস্ত পেকে ওঠা রঙ কীভাবে শুষে এনে রাঙিয়ে দিতে হয় বাইকালার ওয়াল…
তোমার একটা হাত এখনো আমার কাছে রয়ে গেছে, যেটা দিয়ে একদিন শক্ত করে খুব তীব্র ভাবে বাঁকিয়ে দিয়েছিলে আমার নাম…
চিৎকার সরণী–২
এইমাত্র যে চিৎকারটা আছড়ে পড়লাম তোমার ঠিক সামনে। তুমি মুগ্ধ হয়ে দেখলে তোমার সামনে দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তাটা ক্রমশ ছুরির মত সরু হয়ে চলে গেছে তোমার গলা পর্যন্ত… তারপর … পথ বেঁকে বসেছে তোমার গ্রীবায়… জ্যোৎস্না-বাসা পিঠে ওড়া রেখে গেছে … বাস থেকে নেমে গেছে সমস্ত সিট সমুদ্রের দিকে… যেখানে, রোদের সেলাই নিয়ে শুয়ে আছে ছায়া… যেখানে আকাশ-তাঁবুর নিচে বালি আর জলের ধারালো সংসার… আগুন খুঁজে না পেয়ে বহুযুগ নিভে আছে মূর্খ সিগারেট… কাদের যেন টুপি পড়ে আছে মাথা হারিয়ে… কাদের যেন পথগুলি জলে, পা ভিজিয়ে বসে আছে…
চিৎকার সরণী-৩
বিকেল যেন চামড়ায় মোম মাখা মেয়েরা। বেরাতে এসেছে এই ভয়ঙ্কর পার্কে। যেখানে ছড়ানো ছিটানো রয়েছে আমার ঘিলু খুলি চোখ রক্ত হাত পা অবশিষ্ট দাঁতের পাটি… একেকজন একেকটি খেলনা নিয়ে ব্যস্ত। আমি অন্তর্গত রস হয়ে ঢুকে যাই ওদের দেহে… তারপর খুঁজি আমার নিজস্ব বিকেল, আইসক্রিমের গাঢ় ঘুমের ফোটা ফোটা পতন। ঘামে চোবানো অক্ষর, যেগুলি পরেছিল হাজার হাজার কাগজের সুদৃশ্য পোশাক। যেগুলো আকাশ করে টাঙিয়ে রেখেছিলাম, রেখেছিলাম জলের গিঁঠ দিয়ে… তারপর ঘর গমগম করে বাজত হৃদ্-স্পন্দন-তাপে। গম ক্ষেতে ঢেলে আসতাম বাদবাকি উষ্ণতা। আকাঙ্ক্ষা ছিল, এই তাপ একদিন তোমার চামড়ায় বিকেল হবে…