অহনা সরকার-এর লেখা

বশ্য

তার বারান্দা রাতের নীল। অনেক দূরে শাঁখ বেজে ওঠে। এখন! বিয়ে হয়ত। কেউ টোপর খুলেছে, কারোর অল্প মুখচ্ছবি। খুব জোসনায় দাঁড়ালে যেমন নিজের ছায়া দেখি।
দিব্যি পায়ের ওপর পা তুলে, ডান হাতে একটা বালতি নিয়েছে, বোধহয় জলের। আমাদের বাড়ির অনেক পাশে কোনো পুকুর ছিলো না। এমনকি কলও। সারা রাস্তা চৌরাস্তা ধরে
হেঁটে পেরিয়ে বাবা সকাল সকাল চার বালতি ভরে রাখতো কুসুমে। আমাদের শিশি বোতলের নাম। আমরা কেউ কারোর নাম না জেনেই ডাকতাম। বালি হাতে কাঠির দু একটা সূত্র। ঘর মেজে মুছে দিব্যি সাজানো এখনো। পাশের চেয়ারটা ফাঁকাই। তাতেও বসা যায়। এমন কি খাট বাইরের চরিত্র ঝোলানো শিয়ালতালি সবেতেই। শাঁখটা বন্ধ হয়ে সানাই বেজে উঠল। মীড় রাগে। কেউ কি অল্প হেসেছে? বা চোখের জল?
বড্ড বাড়াবাড়ি শুনি আজকাল

খুন করতে করতে এই যেমন হাত ফস্কে এখন চৌচির আমি। জলখাবারের পিঁড়ে। মাথার নিচে শুকনো কয়েকটা পেরেক। জল। লাল আস্তে গড়িয়ে যাচ্ছে ধীর। তার গন্তব্য
পরশুর বিকেলে সবাই জানবে। আমি খাট থেকে পড়ে। এই ঘরেই চৌচির শব্দগুলো তখন লুঠপাট। আঁশটে মেঝে।
পিঁপড়ে হয়ত দানায় জটলা বেঁধেছে। ওরা চিনত আমায়

সাঁন্ ঝ

কিছু কাঁচা মেঘের খই একলা উড়ছে। বাতাসে তারপর ক্ষণিক। বিষণ্ণ থেমেছে। কার আ দেখা যায়। আ য় য়া হা। সর্বাগ্নি সরিয়ে ওই যে মেহ, তার গায়ের চাদরে।
সরল বসো দিবাধাম। গাঁয়ের উচ্ছিষ্ট। কদাহারের কখনও কখনও পথের সারনাথ। ঘুম জাগে ……… এই তার পাহাড়িয়া
সাত উপূর্য মধ্যেশ। অল্প শুনেছি, বোনা মাঝধর। নেই সাতের যে সমস্ত গত, ওই সাঁন্ ঝ ভাসে। তার লয়য়ে মুখোমুখি। মিত্ রাখা। মিত আমি তোমা হই।
মর্ধ্যেণ ষ
সারথ রাখা। উপবাসী। এ দেহের জল
নষ্ট আরম্ভ হতে হতে রথ। পুড়ছে। দেহবাসী

শান্তর ওপারে ক্রুধ। শান্ ত দ। দ কে তুমি নাম দিলে। তার নাম। দ পুড়ছে। অবসায়
ঘূর্ণির কাঁচকে দেখো, যেমনে বাঁধা। তারস্বরে গলা জানিয়েছে
দিবস প্রতিবাদ।
কিছু নেই হেনা র সফল। তাস্তা তাগিদ। স্বারণ্য ঘাম মাসে আমি তোমায় খুঁজি। ফেলে যাওয়া
মাঝ সাগরের একটা মাত্র দাঁড়ি। বধু দহিত। কঁঙ্গণার ঘুম ভাঙছে। তাপস
শোনো? শো ও ওঅঅ আরেক ধীর বললে আরো কূট
মাঝিবাসী। তাঁর গাঁহের পরাণখানা
অঅলোক

সবেমোর এই পাত্র। ললিত লহায়। স্বাতকী

থই

বিনিময় দেখেছি। প্রথা ও মানুষ। পরশ পরম। রাম নিবীরণে। তার দুহাস্য ক্ষয় ওড়ে। এই আমি রিক্ত। পূজারী। মনের আসনে তার দুই ভার
নিঃসহায়

কাঁচা মেঘের খই ওড়ে।  খই বাতাসে। তার বয়য়ব।

কথাদূর

আমার আলোয় আমি আমাকে দেখছি। হ্যারিকেনের কাঁচটা দূরে রাখা। মাখনের গোল্লা পাকানো তাল, মুখের একদিকে, অল্প অল্প করে নাড়া মুখ। দু হাতে জল নিয়ে কুলকুচি করেছে। লাল মাজনের বাক্স। নুন দিয়ে কি ঘর মোছা যায়? আমি মাজতাম, কপাট, দাঁতের ঘড়ি, তামার পাত্র। এখন সবে রাত চাদর। পাশে শোয়া এই। মশারির নীল। সাদা আলোয় ঘর কালো! দু জনকে দুপাশে রেখেছে। অন্য পাশে ধরা কান। এ ঘরে। এই যে ঘর। কড়িকাঠ থেকে নামা বোল।ঘণ্টার টিক টিক! বড় বাক্সগুলোয় বই থাকত। শীতের ম্বল। হালকা পিঠ ঠেকালে……..
ঠিক লাল জৈ যেখানে। একদিন এক আলো হঠাৎ ই। হঠাৎ ই তার ভাঙা দেখেছে। তার টুকরো শিষ। এই খাটের কোন, দেওয়ালবিছে, জানলারবি, কাঠের সাথে ঠেকানো পিঠ।
জোরে           খু   উ উ ব     জোরে নিঃশ্বাস নিলে আমাকে কি পাবো? আমি ই তো! এই ঘরের কণা। কালবেশে জলছল মাধবীর আঁত। জোছনাফুলের গন্ধ আসে।
সাদা কোনো পাপড়ি আলগোছে মেলেছে নিজেকে। তার সঙ্গম রাত
বরোদারি চুলোর পাশে কাঠ গুছিয়ে রাখা। বাসনা, কয়লার টুকরো। আমি জানতাম আমরা বড়, আমরা কাঁচের এই যে র্থব! মাঝগগন থেকে দাঁড়িলে ডাকলে, কাউকে কি চেনা যায়? এই এখানে। এখান থেকেই

একমুঠো ভর্তি গ্যাসবেলুন। আমি উড়িয়েছি। উড়ে যায় চাঁদ

শুক্রবার

ধীরের ধীরপথে নদী নেমে যাচ্ছে শুক্লপক্ষ। আমরা দাঁড়িয়ে দেখছি। আজ শুক্রবার। আজ আর কিছু পরেই আমার বাবা সম্পূর্ণ রাস্তা বমি করতে করতে চৌকাঠে এসে হোঁটচের। মা ধীরে আরো ধীর নদীর জলপথে একটা কুঁকড়ে থাকা শুয়োর যেভাবে ঠাণ্ডার রাত আগুনের চলাফেরায় আমরা ঘিরে বসি গোল।
যে যার হাতের পাতা, শুকনো মুখ, সেঁকানো তাত বুলিয়ে নিতে নিতে, কাঁধের ভরসায় বাবা তখন বিছানায় চিৎ। ছাড়ানো পাঞ্জাবী নোনতার জলে ডুবিয়ে। একটাই ছবি বছরের পর বছর। মা তবু ভালবেসে চলে। ধোয়ানো কাপড়, মাথা দিয়ে গলানো কাঁধ বালিশে মাথাকে শুইয়ে
তুমি চলে গেলে। মাত্র একটা মাত্র মিথ্যে
নদী পথে গান নেমেছে। শুক্লপক্ষ। মা বাবার মাথায় কপাল গলার জলে হাত বোলাতে বোলাতে গেয়ে চলে
তুমি। বন্দী খাতা। কাগজের শেষ লাইনে

Facebook Comments

Posted in: June 2019, poetry

Tagged as: , ,

2 thoughts on “অহনা সরকার-এর লেখা Leave a comment

  1. দারুণ কংবা অসাধারণ বললে কম বলা হয়।

  2. দারুণ কিংবা অসাধারণ বললে অনেক কম বলা হয়।

Leave a Reply