শৌনক দত্ত-এর কবিতা
কেবলই হারিয়ে যায়
হারিয়ে যায়…
সম্পর্ক হারিয়ে যায় এবং কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো
কতদিন জলের গভীরে
একটা হাত ধরতে ধরতে পেয়ে গেছি কিছু সুদৃশ্য আঙুল।ওরা নিজেদের অস্তিত্ব লুপ্ত করতে করতে ফিরে যাচ্ছে।
নিজের সামনে দাঁড়ালে আবছায়ায় দেখি
আদলপোড়া ছায়ায় এক নারীর মুখ,
একদিন নারীর বুকে ছিলো সাহাবির বসত
যা তৃষ্ণার আড়ালে হারিয়ে গেছে
ভাবছি, মুঠো ভরা ঝিকিমিকি দিনগুলি কত পিছনে ?
সন্ধ্যা
১৮ জানুয়ারি,২০১৯
কাঠগোলাপের শহর
ঘাসের ছায়ায় পাঠলুপ্ত বেলা কাটছে…
ছেঁড়া কাগজে নীলকুঞ্জির ম ম । লকারে লুটেরা ঘোড়ার দৌড় । সব ছাপিয়ে বোবা শহর, শহরের আনাচে কানাচে রোদের খামোকা আলাপ ।
শনিবার জুড়ে নিবিড় দুপুর জানালার গ্লাসে ঘেমে উঠে বারবার ।
হাসনাহেনার কড়া গন্ধে পার হওয়া এই সব দিনগুলির নাম মেনোপজ ।
কিছুটা কমে আসা চোখের আলোয় পাতা উল্টাই । রাফখাতা ভর্তি বিকলাঙ্গ বতুয়া শাকের মনস্তাপ । পাতায় পাতায় নুনের ইকো ।
সকাল
১৯ জানুয়ারি,২০১৯
২১ জানুয়ারি,সোমবার
একটা অফিসগামী সকাল ৭টা ১০ এর লোকালে ঝুলে আছে:
বাতাসে সব উড়োকথা ঠেলে দিয়ে রোদের বাচ্চারা ঝিকিমিকি খেলছে, আর ঘোলাটে চোখে একটা শূন্য হলুদ বাড়ি শব্দহীন ৷
গোটা সকাল জুড়ে যে বিচ্ছিন্নতা আঁকা তার সবটা শরীর পড়ে আছে কারও জানালার ক্যানভাসে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশানের আবস্ট্রাক্ট ফর্মে ৷
মধ্যদুপুর,মায়ের রান্নাঘর
২১ জানুয়ারি,২০১৯
২৬ জানুয়ারি,২০১৬
বারান্দায় ছড়ানো ছিটানো ভুলে ভরা রোদ, মায়ের ঘ্রাণ দেয়ালে দেয়ালে শীতকালীন মিথ:
আমার পৃথিবীর গায়ে বতুয়া বনের শোক
খেসারি কলাইয়ের ক্ষেতে জেগে থাকা পুরোনো অসুখ
শেষ রোদের বিকালে ফুরিয়ে গেছে দৃশ্যাবলী।
সমস্ত ভাষা ম্লান হয়ে গেলে পরিত্যক্ত ট্রেনের বগির ছায়ায় ফুটে উঠে পিন কোডের সম্মোহিত নির্জনতা, ব্যক্তিগত বৃষ্টিবেলায় মায়ের মুখ ঝাপসা হয় চশমার কাচে…
একদিন মৃতজাত শীতের দিকে আমাদের একাকিত্বের দুপুর বাজেয়াপ্ত হয়ে আছে ডাকনামে, আবদারে, হলুদমাখা আঁচলের কোন সূত্রে ।
সকাল,
২৩ জানুয়ারি,২০১৯
Posted in: February 2019, Poetry