এখন এই সময় – দেবাশিস দত্ত

এখন কি কোন ‘যুদ্ধ’ চলছে? আমরা সবাই সদলে এখন যুদ্ধে যাচ্ছি? না যুদ্ধে আছি? যুদ্ধ – হয় অথবা নয়, আমরা একটা যুদ্ধের মেজাজে মেতে গেছি, মাতিয়ে দিয়েছি শুধু নয় রীতিমত তেতেও আছি। অন্যদের তাতাবার দায়িত্ব নিজেরাই কাঁধে তুলে নিয়েছি, অন্যদের সবক শেখাচ্ছি। যুদ্ধ ছাড়াই আকছার মৃত্যু ঘটছে আর যুদ্ধ হলে মৃত্যু ঘটে, ঘটবেই। আমাদের পাঁচটা ওদের দশটা, বিশটা … আমাদের বিশটা তো ওদের একশোটা … মৃত্যুর সংখ্যায় জয়ের গর্ব … তার ওপর দেশ দশের সঙ্গে জড়িয়ে গেলে মৃত্যু হয়ে ওঠে বড় গর্বের! ইঁদুরের মত বেঁচে থাকা, কেউ জানতে পারে না, প্রায় একশো কোটি বেঁচে আছে এমন কেউ জানে না, তার চাইতে এই মৃত্যু অনেক ভাল অনেক দড় – বাজারে বিকোয় ভাল। কফিনে বন্দী হয়ে বিনি পয়সায় প্লেনে ঘরে ফেরা, গান স্যালুট, পদক, নগদ প্রাপ্তি – কাগজে টিভিতে প্রচারে ছবিতে ছয়লাপ – পাড়া পড়শি আত্মীয় স্বজন থেকে সারা দেশ উথাল পাথাল ‘স্বাভিমানে’ ফুটতে থাকা!! ভাবতে পারে একজন কিষাণের বা মজুরের ব্যাটা? ‘শহিদ’ হওয়া কম কথা! ফলিডল খেয়ে বা ডিসপিউটেড অনাহারে মরার চেয়ে – ‘শহিদ’ মৃত্যু – কম কথা!  ক’জনের কপালে জোটে?! পাড়ায় পাড়ায় এখন ‘দেশভক্তি’র বন্যা, ‘দেশভক্ত’ হয়ে ওঠার বিনি পয়সায় এমন সুযোগ আর কোন মৃত্যুতে হয়? স্বাধীনতা আন্দোলন বা এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহিদ অথবা জেলখাটাদের হালফিল চেহারা নিজেদের চোখের সামনে বা খবরের কাগজের পাতায় ভাসে, সবাই আমরা দেখি – একটু মেলাবার চেষ্টাও এসে যায় – চোখের কোনটা চিকচিক করে ওঠে … নস্টালজিক হতেও হয় … বাইরের … জিন্দাবাদ ধ্বনিতে সম্বিত ফেরে।      

এবারে চারপাশটা – মোড়ে মোড়ে শহিদ বেদি, ছবি, ফুল মালা, পাড়ায় পাড়ায় মোমবাতির মিছিল … ঘরের মেয়ে বৌ-বাচ্চা রীতিমত অনভিজ্ঞ পা মিলিয়েছে। কারও মুখে কোন দাবি নেই, স্লোগান নেই, ফসলের দাম চাইছে না, ঋণ ফেরত চাইছে না, মজুরি বাড়াবার কথা বলছে না, বেকার আর কাজ চাইছে না, বাজারে আগুন কেন কেউ প্রশ্ন করছে না, কেউ বলছে না তাদের অভাবের কথা, চাপা পড়ে গেছে জিএসটি’র লাঞ্ছনা, নোট বদলের যন্ত্রণা, সেনা পেনশন আর অন্য সব প্রতিশ্রুতি রক্ষার কথা, নীরব পলায়ন, কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারির কথা, রাফালের ইতিকথা সব এক ম্যাজিকে গায়েব  – আত্মহত্যায়, তেলেভাজা আর পকোড়ায় এখন আর আপত্তি নেই। ওটাই মনুবাবুর লিখন খণ্ডায় কে গোছের ভাব জুড়ে বসেছে পাড়া পড়শি থেকে শহর গ্রামের রাস্তা ঘাট। সমগ্র জাতি শোকে মুহ্যমান। এক যুদ্ধরব সব মিটিয়ে দিয়েছে! কিন্তু পরিষ্কার হল না কোথায় যুদ্ধ, কার সাথে কার, জানা হল না কি নিয়ে যুদ্ধ! কিঞ্চিৎ অদ্ভুত ঠেকছে না!  

এতক্ষণ যুদ্ধ হলে কি হয় সেকথা বলছিলাম। না যুদ্ধ কোথাও হয়নি। যুদ্ধ নয় তবে কি? তবুও ‘রক্তাক্ত কাশ্মীর, হত ৪৪ জওয়ান’ শীর্ষক সংবাদের বিবরণে জানা যায় – ‘ছুটি কাটিয়ে ফিরছিলেন ওঁরা। গত দুদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় বন্ধ ছিল জাতীয় সড়ক। জম্মু কাশ্মীর উপত্যকায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক পথ বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়ায় ফিরছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। পর পর ৭৮ টি বাস সারি দিয়ে আসছিল। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার কনভয়ে জওয়ানের সংখ্যা ছিল অনেকই বেশি। পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় পৌঁছেছে তখন কনভয়ের একটি অংশ। আচমকাই উলটোদিক থেকে একটি এসইউভি গাড়ির ধাক্কায় প্রবল বিস্ফোরণ। অনেকটা দূরে গিয়ে পড়ে কনভয়ের একটি বাস। প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক ভর্তি ছিল গাড়িতে। ফলে ধাক্কা মারার পরই ঘটে বিস্ফোরণ। উড়ে যায় বাসটি। দশ কিলোমিটার দূর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কনভয়ের অন্য বাসটিও। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান। আত্মঘাতী এই হামলার এই সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে  জৈশ-এ-মহম্মদ।” ৪৪ জন জওয়ানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ দস্তুর। জানিয়েও বলছি এর মধ্যে যুদ্ধটা কোথায়? এটা নির্ভেজাল আক্রমণ। কিন্তু ঐ এলাকায় রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। এই নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে এমন একটা আক্রমণ সন্ত্রাসবাদীরা শানাল কি করে? হাজারো প্রশ্ন উঠেছে। জবাব দেবার দায় কার? ব্যর্থতা কার? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন: ‘I strongly condemn this dastardly attack. The sacrifices of our brave security personnel shall not go in vain. The entire nation stands shoulder to shoulder with the families of the brave martyrs.’ [TOI] প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ বলেন নি, বলেছেন ‘আক্রমণ’। তবে তিনি ‘শহিদ’ বলেছেন। এই নিয়ে তর্ক উঠেছে, চলুক সে তর্ক। তবে আজই কেবল নয় এর আগে জম্মু কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়নি তা নয়, অনেকবারই হয়েছে। যুদ্ধও হয়েছে, বিশেষ মুহূর্ত তার জন্যে সব শাসকই বেছে নিয়েছে, তার মধ্যে ভারত পাকিস্তান নেই – কোন বৈরিতা নেই, অন্তত দেখা যায়নি। তবে মোদী আমলেই সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণনতুন মাত্রা পেয়েছে। উনি আস্তিন গুটিয়ে কথা বলায় চলায় স্বচ্ছন্দ, আদ্যোপান্ত বীর রসে ভরপুর।  পেটের খিদে না মিটলেও মনের খিদেয় ভাঁজ ফেলে, মোচড় দেয়। ওঁর ভাব ভাবনা এমন যে অস্ত্র দিয়েই অস্ত্রকে মোকাবিলা সম্ভব! তা করতে গিয়ে ২০১৪ সালে ১৮৮, ২০১৫ সালে ১৭৮, ২০১৬ সালে ২৬৭, ২০১৭ সালে ৩৫৪, ২০১৮ সালে ৪৫৭ জন অর্থাৎ ২০১৪ থেকে২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত মোট ৬৭৪ টি ঘটনায় সাধারণ মানুষ, নিরাপত্তা রক্ষী ও সন্ত্রাসবাদী মিলিয়ে মোট ১৪৭৮ জন নিহত হয়েছে। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে মৃত্যুও বেড়েছে। কিন্তু সন্ত্রাস মোকাবিলা করা যায়নি। সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আসলে বিষয়টা রাজনীতির এবং অর্থনীতির। সুতরাং দেখা গেল। যুদ্ধ কোথাও হয়নি। পক্ষ প্রতিপক্ষ ছিল না। দেশের সেনা খুফিয়া বাহিনী সতর্ক থাকলে এমন আক্রমণ রোখা সম্ভব ছিল। অর্থাৎ আমাদের অসতর্কতা যদি জোয়ানদের মৃত্যুর কারণ হয় (সত্য উদ্ঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন) তবে তীরটা ঘুরে যায় নিজেদের অপদার্থতার দিকে। দায় নিতে হয় সরকারকে। কৈফিয়ত দিতে হয়। এ ব্যাপারে সরকারের বিন্দুমাত্র রুচি নেই।     

কি করে হল? হাঁ ট্রিকস বা ম্যাজিক জানতে হয়। মানুষকে বোকা বানাতে হয়। যা নেই তা আছে বা যা সম্ভব নয় তাকে সম্ভব বলে প্রতিপন্ন করতে হয়! নইলে শাসক কেন? ২০০৯ সালে নির্বাচনের আগের পরিস্থিতিটা একটু ভাবলে দেখা যাবে কর্পোরেটের চোখে সরকারের ‘নীতিপঙ্গুতা’ এবং মানুষের চোখে হাজারো সমস্যা এবং দুর্নীতি ও একের পর এক কেলেঙ্কারি এমন একটা বহ তৈরি করেছিল যে দল নয়, রাজনীতি নয় – প্রধানমন্ত্রীর ‘মুখ’ গড়ে তাঁকে ক্ষমতায় বসানোর কাজটা খুবই মুন্সিয়ানার সঙ্গে সকলকে বোকা বানিয়ে সম্পন্ন করেছিল কর্পোরেট। কর্পোরেট আজ সরকার সম্পর্কে ‘নীতিপঙ্গুতা’র অভিযোগ তুলছে না। কারণ: এই সরকারের নীতি প্রণয়ন ও রূপায়ণে কর্পোরেটের ছিল একচ্ছত্র উপস্থিতি। মন্ত্রকগুলো কার্যত ছিল পঙ্গু। বলা যেতে পারে কর্পোরেটের চার্টার বা সনদের প্রায় ১০০% পূরণ করেছে ‘একমুখো’ সরকার যার সাথে যোগ্য সঙ্গত করেছে প্যারামিলিটারি দক্ষতাসম্পন্ন  ‘সামাজিক-সাংস্কৃতিক’ সংঘ পরিবারের বিভিন্ন সংগঠন। ফলে দেশের সমগ্র অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক বিভাজন থেকে সংস্কৃতি, ইতিহাস, পরম্পরা, দেশের সংবিধান, কাঠামো আজ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এক তিরে এতো পাখির মৃত্যু কবে কে করে দেখাতে পেরেছে?

যাই হোক প্রশ্ন পিছু ছাড়ে না। আর সব প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে অন্য কেউ নয়, কারও মত নয় সদ্য স্বামীহারা এক জওয়ানের স্ত্রী জোরের সঙ্গেই বললেন ‘যুদ্ধ কোন সমাধান নয়।‘ তারও পরে কাজের দিনেও বললেন ‘আমার স্বামী তো যুদ্ধে মারা যায়নি।’ খুবই আস্বস্তিকর প্রশ্ন। কি তার জবাব? কেইই বা দেবে? এড়িয়ে গিয়ে বা সব প্রশ্নের জবাবে আবার ‘সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি আক্রমণ’ হল ভোর রাতে। জয়ের দামামা বেজে উঠল একদিকে। অপরদিকে তখন ‘বায়ুসেনা পাইলট বন্দী’। আন্তর্জাতিক পত্র পত্রিকায় ‘ঘাঁটি আক্রমণে’র সংবাদ সমর্থিত হয়নি। সুতরাং সবটাই হল একটা ০ শূন্যর ওপরে শাসকের পরিক্রমা! হাতেনাতে তার ফল হল প্রতি লিটার পেট্রলে ৩.০৪ টাকা ও ডিজেলে ৪.৩৭ টাকা বৃদ্ধি! বাজারে অস্থিরতা, দ্রুত নামছে সূচক, পড়ছে টাকার দাম, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা সংঘর্ষের আবহ থাকলে বিদেশি লগ্নী ফিরে যাবে – তবে শাসকের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান যুদ্ধু যুদ্ধু ভাবটা এখন ছড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় এমন কি তাদের লড়াই-সংগ্রামে। সেদিনই চটকল শ্রমিকদের ১ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘট প্রত্যাহারে আর্জি জানাল সরকার! এক মায়াজাল তৈরিতে সরকার মরীয়া – কারণ সামনে নির্বাচন – আর কিছু নয়, চাহি কেবল জয়। যুক্তি যুদ্ধের পক্ষে নয়, শুভবুদ্ধি যুদ্ধের পক্ষে নয়, সংগ্রামী মানুষ যুদ্ধের পক্ষে নয়, আর এই বিশাল দেশ মহান বলেই যুদ্ধের পক্ষে নয়।                

এই যুদ্ধ’র আর একটা গোপন উদ্দেশ্য যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘মালিক-শ্রমিক’ বা ‘শোষক-শোষিত’র দ্বন্দ্ব যে প্রধান এবং ‘শ্রেণিসংগ্রাম’ যার অনিবার্য পরিণতি সেই তত্ত্ব  ও মতাদর্শগত অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তার বিপরীতে ‘ধর্ম ও বর্ণ’ বিরোধ এবং তার সমাধানে ‘নিকেশ’ তত্ত্ব প্রতিস্থাপন যা ‘সম্পদ লুণ্ঠনে’ মাত্রাহীন ছাড়পত্র, স্বাধীনতা দেয় যা ইতিপূর্বে কোন শাসক দিতে পারে নি। তবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টিতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এই সাফল্যে ডগমগ হলেও গায়ের জোরে বিজ্ঞান ভিত্তিক একটা মতাদর্শকে গায়ের জোরে নিকেশ যে করা যায় না তারও হাতে নাতে হাজারো প্রমাণ ইতিমধ্যেই মিলেছে। বিভিন্ন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন সংগ্রাম এবং কর্পোরেটের আভ্যন্তরীণ স্বার্থ-দ্বন্দ্বে নাকাল অবস্থা সত্ত্বেও ক্ষমতা দখলে রাখতে তাদের কিছুটা ‘নরম’ কৌশল নিতে হচ্ছে যার প্রতিফলন ঘটেছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৫ রাজ্যের নির্বাচনে। আবার ব্যাটনটা ঘুরে যাচ্ছে ২০১৪ সালে পরিত্যক্ত কোথাও কোথাও একটু আধটু আঞ্চলিক শক্তির দিকে। সুতরাং বার্তা স্পষ্ট। শ্রেণি থাকবে অথচ ভিন্ন তকমা সেঁটে শ্রেণি সংগ্রাম তত্ত্বকে  খারিজ করে দেবে এমনটা যে সম্ভব নয় তা এই সব ঘটনা থেকেও প্রমাণিত।    

এখন মূল প্রশ্ন এতো কিছুর পরেও ক্ষমতা কেন শোষকশ্রেণীর হাতেই থেকে যাচ্ছে? প্রশ্নটার সহজ উত্তর হল অশ্বমেধ যজ্ঞের সেই ঘোড়ার লাগামটা টেনে ধরার ‘লব-কুশ’ এর অনুপস্থিতি। এর অনেক কারণ। বিস্তারিতভাবে বলার পরিসর এটা নয়। ক্ষমতা দখলের ‘সাংবিধানিক’ পথ নিশ্চিতভাবে ‘নির্বাচন’। ৫৪৩ আসনের মধ্যে ম্যাজিক সংখ্যা ২৭২ অর্জন। এই সংখ্যা অর্জনের একমাত্র পথ শ্রেণীর সংহত শক্তি যা তীব্র শ্রেণি-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অর্জন সম্ভব। লক্ষ্য অর্জনে মত পথ নিয়ে বিতর্ক – কোন দুর্বলতা নয় কিন্তু তার জেরে বিভাজন নিশ্চিত একটা বড় দুর্বলতা। এবং সে ক্ষেত্রেও একটা কর্মসূচির ভিত্তিতে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার মধ্য দিয়েও অগ্রসর হওয়া সম্ভব যা কেবল নির্বাচনভিত্তিক হতে পারে না এবং তা যদি হয়ে দাঁড়ায় তবে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না এবং তার পুরো মওকা শাসক শ্রেণী গ্রহণ করবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।  সুদীর্ঘ কাল ধরে এভাবেই চলছে। এথেকেই বোঝা যায় যে ‘ক্ষমতা’ দখলের কোন ভাবনা চিন্তা পরিকল্পনা, খণ্ডিত ও সঙ্কীর্ণভাবে থাকলেও, শ্রেণীগতভাবে শোষিতরা অনুপস্থিত। ফলে ক্ষমতা দখল দুরের কথা – শক্তি হ্রাস ঘটে চলেছে, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে।  এরই অনিবার্য পরিণতি শাসকশ্রেণির মধ্যেই ক্ষমতার হাত বদল।  

এখন তবে কি? সেটা ভিন্ন পরিক্রমা।

Facebook Comments

Leave a Reply