লোকায়ত দর্শনের মর্মবস্তু সন্ধানে – শঙ্কর রায়

লোকায়ত চেতনা পুনর্ভাবনার ঋত্বিক দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর লোকায়ত দর্শন নিয়ে গবেষণা ও চর্চা অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন আরকেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা স্যার জন মার্শালের হরপ্পা ও সিন্ধু-উপত্যকায় মহেঞ্জোদারো নিয়ে প্রত্নতাত্বিক সমীক্ষা। প্রবাদপ্রতিম প্রত্নতত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়  ১৯২২ সালে মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসস্তুপের মধ্যে এক সুপ্রাচীন প্রাগৈতিহাসিক সভ্যতার প্রমাণ উপস্থাপিত  করে বৈদিক যুগের কয়েক হাজার বছর আগে ভারতবর্ষে বিকশিত হয়েছিল এক উন্নত জনপদ ও সিন্ধু সভ্যতা। বিশ্বের প্রত্নতাত্বিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল সেই প্রত্নতাত্বিক সমীক্ষা।সেই প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য স্যার জনের নেতৃত্বে  ১৯২২-২৭ চলেছি।  প্রাগৈতিহাসিক নমুনা বিশ্লেষণ করে  প্রত্যয়িত হলো যে, এই সভ্যতা অন্তত পাঁচ হাজার বছরের পুরানো  এবং সুমের আক্কাদ ব্যবিলন মিশর ও অ্যাসিরিয়ার সভ্যতার সমান্তরাল ধারায় উদ্বর্তিত হয়েছিলো স্যার জনের রিপোর্ট প্রকাশিত হ’ল ১৯৩১এ। কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্রুপদীবিদায় ট্রাইপোজকে আরকেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দায়িত্ব দিয়ে ১৯০২ সালে নিয়োগ করেন তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড কার্জন। স্যার জন ২৬ বছর ঐ পদে ছিলেন।  

স্যার মার্শালের  ভূমিকার সারবস্তু  দেবীপ্রসাদ তুলে ধরেছেন “এতদিন পর্যন্ত সাধারণত ধরে নেওয়া হতো, বিজয়ী আর্যদের তুলনায় ভারতবর্ষের প্রাক্-আর্য অধিবাসীরা সভ্যতার একেবারে নিম্নস্তরে পড়েছিল। স্পার্টানদের তুলনায় হেলটদের বা বাইজান্টাইন প্রভুদের তুলনায় স্লাভদের যে-দশা, বিজয়ী আর্যদের তুলনায় আর্য-পূর্বদের দশাও বুঝি সেই রকমই- সে-অবস্থা এমনই হীন ও পদানত যে তারা ‘দাস’ বলেই উল্লিখিত হয়েছে। ঋগ্বেদ-মন্ত্র থেকে তাদের নেহাতই এক কৃষ্ণচর্ম খর্বনাসা বর্বরের চিত্র সংগ্রহ করা হতো- ভাষা ও ধর্মবিশ্বাসের মতোই শারীরিক বৈশিষ্ট্যেও তারা সুপুরুষ আর্যদের তুলনায় অনেক নিকৃষ্ট। অবশ্যই মাঝে মাঝে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে, তারা গো-সম্পদে সমৃদ্ধ এবং যুদ্ধে পারদর্শী ছিল এবং তাদের অনেক ‘পুর’ ছিল। কিন্তু বেদ-বিদেরা এই ‘পুর’ বলতে কোনো একরকম সাময়িক আশ্রয়স্থলই বুঝতেন- অর্থাৎ, সাদামাটা মাটির তৈরি কোনো ব্যবস্থা, হয়তো বা বেড়া দিয়ে কিংবা পাথরের কোনো রকম আদিম পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। কেননা আর্যদেরই তখনও গ্রাম্যাবস্থা, তাদের সমাজ-সংগঠনও সেই অনুপাতে আদিম। অতএব এ কথা কল্পনা করা কঠিন যে আর্যদের চেয়েও প্রাচীন ভারতবাসীরা- ওই ঘৃণ্য ও নীচ দাসেরা- সুগঠিত নগর বা দুর্গে বাস করতে পারে, বা অন্য কোনো দিক থেকে সভ্যতার উচ্চতর স্তরে উপনীত হতে পারে। বিজেতাদের তুলনায় তাদের মানসিক, দৈহিক, সামাজিক ও ধর্মমূলক নিকৃষ্টতার কথাই স্বতঃসিদ্ধ ছিল এবং ভারতীয় সভ্যতায় তাদের বিশেষ কোনো অবদান স্বীকার করা সম্ভব হয়নি। এ কথা মুহূর্তের জন্যও কল্পনায় আসেনি যে, পাঁচ হাজার বছর আগে- এমনকি আর্যদের নাম পর্যন্ত যখনও শোনা যায় নি- ভারতবর্ষের আর কোথাও হোক-আর-নাই-হোক অন্তত পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে এক উন্নত ও একান্ত স্বকীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। তার সঙ্গে মেসোপটেমিয়া এবং মিশর সভ্যতার সাদৃশ্য অত্যন্ত নিকট, যদিও কোনো কোনো দিক থেকে তা মেসোপটেমিয়া এবং মিশরের তুলনায় উন্নততর। কিন্তু হরপ্পা ও মোহেঞ্জোদাড়োর আবিষ্কার তর্কাতীতভাবে এই কথাই প্রমাণ করেছে। তার ফলে বোঝা গিয়েছে, যীশু খ্রিস্টের তিন হাজার বছর আগেও সিন্ধু-উপত্যকার অধিবাসীরা এক সু-উন্নত সভ্যতার বাহক ছিল এবং সে-সভ্যতার মধ্যে ইন্দো-আর্য সংস্কৃতির চিহ্নমাত্র নেই (ভারতীয় দর্শন, পৃষ্ঠা-৪৪-৪৫)।”

স্যার জন বলেছিলেন সেই  সভ্যতা  নগর-কেন্দ্রিক, কৃষি ও বাণিজ্যই যার সম্পদ সৃষ্টির  প্রধান উৎস।“সিন্ধু-সভ্যতার সঙ্গে পশ্চিম এশিয়া ও মিশরের তাম্র-প্রস্তর সভ্যতার সাধারণ সাদৃশ্য আছে। কিন্তু অন্যান্য দিক থেকে সিন্ধ-সভ্যতা ছিল পাঞ্জাব ও সিন্ধুর নিজস্ব বিশিষ্ট সভ্যতা। …অবশ্য সিন্ধু-অধিবাসীদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে অন্যান্য দেশবাসীর বিশ্বাসে নানা সাদৃশ্যও দেখা যায়। কিন্তু সামগ্রিকভাবে তাদের ধর্মবিশ্বাস এমন একান্তভাবেই ভারতবর্ষীয় যে এমন কি আজকের দিনের হিন্দুধর্মের সঙ্গে- অন্তত বর্তমান হিন্দুধর্মের সর্বপ্রাণবাদ শৈবধর্ম ও শাক্তধর্মের সঙ্গে- সিন্ধু-সভ্যতার ধর্মবিশ্বাসের বিশেষ কোনো পার্থক্য নির্ণয় করা যায় না। সাধারণের মধ্যে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস বলতে আজও ওই শিব-উপাসনা এবং মাতৃ-উপাসনাই প্রধান।”

দেবীপ্রসাদ প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যাখ্যা  করে বলে ছিলেন যে  সিন্ধু-সভ্যতা একাধারে সুপ্রাচীন ও সু-উন্নত– বৈদিক সাহিত্যের চেয়ে অনেক প্রাচীন এবং বৈদিক-সাহিত্যে প্রতিফলিত মানব-উন্নতি ছিল তুলনামূলকভাবে পশ্চাৎপদ সেই  সভ্যতার স্মারকগুলির মধ্যে বৈদিক প্রভাব আদৌ নেই। লোকায়ত ধারা যে  আর্যকেন্দ্রিকতার বিপ্রতীপ, দেবীপ্রসাদ তা প্রত্যয়িত ও বিশ্লেষণ করেছিলেন;  ১৯৫০-এর  দশক থেকে  বোধগম্য ভাষায়  তরুণ প্রজন্মকে অবহিত ও অন্বেষণমুখী করে তোলেন। সেই ধারার  প্রাক-বৈদিক সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি তাদের স্বতন্ত্র সত্তা নিয়ে কালক্রমে ভারতীয় সংস্কৃতির বিশেষত্বে ভিন্নমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছিল। মূলত সেই কেন্দ্রিক ধ্যান-ধারণা সিন্ধু-সভ্যতাকেই ঘিরেছিল।  ‘লোকেষু আয়তো লোকায়ত’ – যা সাধারণ মানুষের মাঝে পরিব্যপ্ত তাই লোকায়ত, তাই লোকায়ত শব্দটির দ্যোতনা বহুমুখী। অন্য অর্থে  প্রাত্যক্ষিক জগতের নামই লোক। যতটুকু  দৃষ্ট ততটুকুই লোকায়ত।  সংস্কৃতজ্ঞ দার্শনিক মাইসোর হিরিয়ানার মতে লোকায়ত-এর প্রকাশ  আমাদের ‘সাধারণ অভিজ্ঞতার মধ্যে সীমিত জগৎ চিন্তায়।  লোকায়ত চিন্তা   অতি সাধারণ মানুষদের জগৎ, জীবন ও প্রকৃতি সংক্রান্ত বস্তুবাদী চেতনায় বিকশিত, যেখানে পারলৌকিক চিন্তা অপ্রাসঙ্গিক। ‘যুক্তিমদ্ বচনং গ্রাহ্যং’- অর্থাৎ যুক্তিই লোকায়ত চিন্তার প্রাণ। দর্শন বেত্তা সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত লোকায়ত বিদ্যাকে তর্কভিত্তিক মাত্রা দিয়েছেন। তাঁর অভিমত লোকায়ত ছিল  প্রাচীন ব্রাহ্মণ্য বিদ্যার বিরুদ্ধে একটা বিপ্লবী চিন্তা। স্বভাবতই লোকায়তিক আর প্রাকৃতজনের মাঝে বড় কোন বিভেদ নেই। শঙ্করাচার্য এই দুই ধরনের সম্প্রদায়কে শারীরিক ভাষ্যে ও অভিন্ন সূত্রে মূল্যায়ন করেছিলেন: ‘দেহমাত্রং চৈতন্য বিশিষ্টামাত্মেতি প্রাকৃতাজনা লোকায়তিকাশ্চ প্রতিপন্নাঃ’ -চৈতন্যময় দেহই আত্মা, যে  লৌকিক তত্ত্ব প্রতিপাদনের দ্বারাই অসংস্কৃত প্রাকৃতজনই লোকায়াতিক নামে পরিচিত।  

লোকায়তের প্রতিভাস আজকের আউল-বাউল-কর্তাভজা, মরমিয়া, সুফি, নাথ, বৈষ্ণব, সহজিয়া, বামাচার, বলাহাড়ি, সাহেবধনী, কাপালীক, মহাযানী প্রভৃতি মত-মতবাদে –  বাহ্যত আধ্যাত্মবাদী হলেও। কারণ তা  বস্তুবাদী ভাবনা-উপজাত, খেটে-খাওয়া মানুষদের জগৎ সংক্রান্ত ঐহিক চিন্তাবাহী। লোকায়াতিকদের  দৃষ্টিবাদী বলা হয়। কারণ বিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদী (Logical positivist) ধারণার অনুসঙ্গ এদের জীবনধারা   লোকায়াতিকরা বলেন, ‘প্রত্যক্ষমেব প্রমাণম’। অর্থাৎ প্রত্যক্ষের বাইরে  অনুমান থেকে কোন প্রজ্ঞা সঞ্জাত  হতে পারে না কারণ  অনুমান ভ্রান্তি ঘটায়। এটাই প্রত্যক্ষবাদ। অবশ্য লোকায়তিক দার্শনিক ধীষণ, পুরন্দর প্রমুখ দার্শনিকেরা বাস্তবের চাপে  সেই  অবস্থান থেকে সরে এসে আংশিকভাবে অনুমানমূলক জ্ঞানকে  অগ্রাহ্য করার নীতি পরিহার করেছিলেন। তবু  লোকায়ত চিন্তা পাশ্চাত্যের বস্তুবাদের মত সুসংহত না  হলেও প্রাচীন,  প্রগতিশীল ও শ্রতি-স্মৃতি বিরোধী এবং মানবিক ভাবনাবাহী।  যতীন সরকার সেই  বস্তুবাদী চিন্তাকে  সরল বস্তুবাদ (naive materialism) আখ্যাত। কিন্তু তা অবশ্যই  মৌলিক বস্তুবাদ-এর  (radical materialism) অন্যতম ধারা। মানবেতিহাসে  চিন্তা-চিন্তনের বিকাশে  ইতিহাসে  সমাজ মনস্তাত্ত্বিক এবং  ব্যক্তি নিরপেক্ষ ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা  লোকায়ত দর্শনে নিহিত আছে, তাই লোকায়ত দর্শন  বদ্ধ থাকেনি  দর্শনতত্ত্ব-চর্চার গজদন্ত মিনারে মনুষ্যত্বের বিকাশে  সামাজিক  বাস্তবতাকে অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে এগিয়েছে, শঙ্খিল সড়কে হলেও।  দেবীপ্রসাদ  এর  বস্তবাদী সংজ্ঞায়নের সপক্ষে  বলেছেন, তা  প্রমাণের জন্য বেশি একটা ঘোরালো যুক্তিতে যাওয়ার দরকার নেই, কেন না  মানুষের প্রত্যক্ষে যতটুকু ধরা পড়ে লোকায়তিকরা সেটুকুকেই সত্যি বলে স্বীকার করে।

লোকায়ত চিন্তা জগদ্বিষয়ক যৌক্তিক মানুষদের সামগ্রিক বৈজ্ঞানিক অনুভূতি। সব ধরনের শাস্ত্রমুক্ত, স্বাধীন ও সংস্কারবিহীন প্রাচীনতম আধুনিক অনুসন্ধিৎসা হলো এই চিন্তা-  বিকৃত, অন্ধ ও বিধ্বংসী চিন্তার বিরুদ্ধে  তুমূল বিগ্রহ। লোকায়ত চিন্তার  তত্ত্বগত দিক থেকে এটা স্পস্ট যে বস্তুই এখানে আসল। বস্তু থেকেই সবকিছুর সৃষ্টি আবার বস্তুতেই তার পরিণতি। এর পেছনে অন্য কোন শক্তি বা সত্তার হাত নেই। মার্ক্সীয় চিন্তনের সঙ্গে  লোকায়তের এক আশ্চর্য সাযুজ্য। লোকায়তিকরা পরলোক, পরপার, স্বর্গ, নরক, আত্মা ইত্যাদিকে  নিছক কল্পনা মনে করে। তারা দেহ ও আত্মার মাঝে অহেতুক এক ভেদরেখা টানে নি। আত্মা মানুষের সচেতন কর্মকান্ডের সমন্বিত ফলাফল, এ ধারণা বৈদিক, আর্যকেন্দ্রিক। অজড়, অনিত্য, শাশ্বত আত্মা –এসব কল্পনা-নির্ভর। লোকায়ত চিন্তা মর্তলোকেরই নানা প্রাপঞ্চিক বিষয়াদিকে ঘিরে বিকশিত হয়েছিল। আজকের দিনে আমরা যে মুক্ত, উদার, নৈর্ব্যক্তিক, নির্বারিত ও প্রগতিশীল ভাবনার উপর দাঁড়িয়ে বিজ্ঞান-সাহিত্য-দর্শন-শিল্পকলার অনুশীলন করি  তার শিকড় গ্রথিত ঐ প্রাচীন লোকায়ত চিন্তায়।

বলা বাহুল্য, দেবীপ্রসাদের দর্শন ভাবনা নিয়ে আলোচনা এই প্রতিবেদকের উদ্দেশ্য নয়। সেটা অনধিকার-চর্চা। এ নিয়ে আমাদের শিক্ষিত করেছেন জি রামকৃষ্ণ, ধ্রুব রায়না, রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য প্রভৃতি পণ্ডিতেরা আমি  দেবীপ্রসাদ ও অন্য পণ্ডিতদের লেখা এবং উপর্যুক্ত গবেষকদের কিছু কিছু লেখা পড়ে লোকায়ত যেমন বুঝেছি, সেটুকু বলতে চেস্টা করেছি। এ প্রসঙ্গে মনে হয় দেবীপ্রসাদের অবদানও সমালোচনাত্মক বিচার্য। আমস্টার্ডামের ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিট্যুট অফ সোশ্যাল হিস্ট্রি থেকে ১১৪ খন্ডে মার্ক্স-এঙ্গেলস-এর মূল রচনাবলী, চিঠিপত্র, লেখাজোখার খসড়া ইত্যাদি প্রকাশিত হয়েছে (৫৯ খন্ড এ যাবৎ প্রকাশিত) হয়েছে (মার্কস-এঙ্গেলস-গেজামতাউসগাবে মেগা-২), তার নাম হিস্টরিক্যাল-ক্রিটিক্যাল এডিশ্যন)।

দেবীপ্রসাদের সাথে সতীন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লোকায়ত নিয়ে বিতর্ক পুনরালোচনা প্রয়োজন। কেউ কেউ এ বিষয়ে আলোকপাত করলেও সেগুলি অনেকাংশে একপেশে, দেবীপ্রসাদের স্তাবকতা-দূষিত। দামোদর ধর্মানন্দ কোশাম্বির বৌদ্ধ যুগ নিয়ে বিতর্কও  আলোচিত হওয়া উচিত।   জোসেফ নিডহ্যামের ভূমিকা সম্বলিত History of Science and Technology in Ancient India. The Beginnings গ্রন্থের সমালোচনা-নিবন্ধে (১৯৯০)   প্যারিসের Centre Alexandre Koyré, Ecole des Hautes Etudes en Sciences Sociales বিশিষ্ট গবেষক কপিল রাজ দেবীপ্রসাদের গর্ডন চাইল্ডের উপর অতি-নির্ভরতার আদৌ মেনে নিতে পারেন নি। “His fanatical reliance on Childe’s work is unfortunate as the later for one was particularly dismayed at the rigid and dogmatic institutionalization of Marxism. Writing in the first half of this century, Childe identified in metallurgical technology the main cause of a fundamental economic reorganization that created the conditions for the

“urban revolution’. Once introduced into the productive economy, metal tools destroyed neolithic self-sufficiency – trade became a regular feature of the social economy and specialization became a wedge in the familial structure of village society leading to its stratification. This stratification and craft specialization, the increasing size of permanent settlements, the construction of monumental public works, writing, and the predictive sciences (by which he meant primarily mathematics and astronomy) compose Childe’s checklist for civilization. Mechanistically following Childe’s lead, Chattopadhyaya finds direct evidence for almost all the features except the sciences.”

কপিল রাজের আক্রমনাত্মক ভাষা বাঞ্ছিত নয়, কিন্তু তিনি যা বলেছেন, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

[লেখক – বরিষ্ঠ সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট মার্কসপন্থী চিন্তক।]

Facebook Comments

Leave a Reply