দেবাঞ্জন দাস-এর কবিতা

দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ ব্যর্থ কবিতা  

১.

মেঘের পাশে পাশে হাঁটছে সে

সমাসবদ্ধ হলে মেঘবালিকা

গয়না ভালোবাসে দেখে তাকে দিলাম পয়জোর

জোর কোর না। সখী বলছি

বলছি আমার না খুব আকাশ হচ্ছে  

ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে না হওয়াগুলোর দিকে

মাধুকরী আমাকে চেনাচ্ছে দেশ  

নিজেকে বলি উৎসর্গ হও  

এবার তো কর

জানেনা, শুধু পয়জোর ছাড়া এক নিরাভরণ সন্ধ্যেয়   

আর কখনওই গাওয়া হবে না দেশরাগ

আমি বরং সেই লোকগুলোর কথা ভাবি, যারা কবিতা হল না

দূরে যেতে যেতে নিজেরাই ভাষা হয়ে উঠল একদিন

তারা নদী পেরোয় গরুর লেজ মুচড়ে

সাগরকে কুয়াশা দেয় সুগন্ধ ঘুঁটে জ্বেলে

আঁচার মাখিয়ে লিট্টি খেতে আসে বাংলা ভাষা

সে’সব মুহুর্তে ‘মোক্ষ’-কে যেমন খুশি বানানে লেখা যায়

২.

শীতের সকাল তুলতে তুলতে

অপার হচ্ছে বিছানা

পালং শাক আর ছেঁচী কুমড়োয় কি বা এসে যায়

বড় হওয়া শিখতে ফেলে আসা গাছ-নুড়িদের কাছে   

                                এখন আর নীচু হয় না কেউ

ভোরে যে ট্রেনগুলো শহরে যায়

তারা কতবার বলেছে  

ছড়ানো রোদ অতিকথা…

খানাপিনা সামলে

ভালো ঠান্ডা পড়ল না বলে

গুড় নলেন হল না বলে

দেওয়ালে দেওয়ালে বেদানা করেছ বিকেল   

পোস্টার আর ব্যালটও হয়েছে খুব

এরপর শব্দের ঘাম হবে 

শুধু বাড়তি ওজন, সুজনেষু

তখন হাত বাড়ালেই, পেয়ে যাব

                    অন্তত এ ভুল কোরো না …  

৩.

দেখতে দেখতে আলো বেজুবান

দেখতে দেখতে অমল আকাশ  

ফেলে আসাগুলো এ’ভাবেই ঘরের দেওয়ালে

রমলাকে দিদি বলি

সকালে-বিকেলে চা দেয়

কাপড় কাচে

ধুলোও ঝাড়ে মাসে একদিন

এ’ভাবেই ঘর থেকে একটু একটু দূরে

বাড়ির টবে গাছ হয় বলে

কৃষিকাজ হল না

মাংস, টক দই, টমেটো,

থকথকে বাটা লাল লঙ্কা, পেঁয়াজ-রসুন

নদী জন্মানোর মুহুর্তে কড়াইয়ের ঢাকনা উপচে  

ঝোল তবু পড়েছিল কয়েক ফোঁটা…

যেমন রোজ হেঁটে যাওয়ার নামে আমরা পাহাড় পেরোই

সংসারকে বলি সমুদ্র

দ্যাখো, ছোটবেলার গাছপাথর দুয়ো দিচ্ছে  

এতো মুগুরছাপ, মিছিল, নবকল্লোল

দেখলে না, চাষীটি মরে গেল

তুলো গাছ এক পাও নড়েনি

কেবল পাহাড়ে হ্যালো ফুটেছে লক্ষ পায়ে       

Facebook Comments

Posted in: January 2019, Poetry

Tagged as: , ,

Leave a Reply